This Article is From Jul 23, 2019

রাজনীতির ময়দানে মা দুর্গাকে ঘিরে লড়াই তৃণমূল-বিজেপির

দুর্গা পুজো(Durga Puja) হয়ে উঠেছে রাজনৈতির যুদ্ধক্ষেত্র। পুজোকে কেন্দ্র করে বিজেপি ও তৃণমূলের মধ্যে চলছে রাজনৈতিক কাজিয়া।

রাজনীতির ময়দানে মা দুর্গাকে ঘিরে লড়াই তৃণমূল-বিজেপির

দুর্গা পুজো হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক যুদ্ধক্ষেত্র।

হাইলাইটস

  • দুর্গা পুজো হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক যুদ্ধক্ষেত্র
  • বিজেপিকে ‘হিন্দু বিরোধী’ বলে আক্রমণ মমতার
  • বিজেপি চাইছে দুর্গা পুজোকে জনসংযোগের মঞ্চ করে তুলতে
কলকাতা:

এবার পশ্চিমবঙ্গে দুর্গা পুজো (Durga Puja) হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক যুদ্ধক্ষেত্র। একদিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) আক্রমণ করেছেন বিজেপিকে। তাদের ‘হিন্দু বিরোধী' বলে দাবি করেছেন তিনি। কেন্দ্রের আয়কর দফতর দুর্গা পুজোকেও করের আওতায় এনে ফেলতে চাইছে। অন্যদিকে বিজেপি (BJP) চাইছে দুর্গা পুজোকে জনসংযোগের মঞ্চ করে তুলতে। মণ্ডপে শীর্ষ ব্যক্তিত্বদের ডাকার পরিকল্পনা তাদের। ১৬ জুলাই বেশ কিছু পুজো সংগঠকদের ডেকে পাঠিয়েছিল আয়কর দফতর। ২২ জুলাই সেকথা জানতে পারেন মমতা। আর তারপরই তিনি দুর্গা পুজো (Durga Puja) নিয়ে রাজনীতি করার দায়ে অভিযোগ করেন বিজেপির বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, ‘‘নির্বাচনের আগে ওরা কথা বলছিল হিন্দু ও মুসলিমদের নিয়ে কিংবা শিখ-খ্রিস্টানদের নিয়ে। ওরা কথা বলছিল জাতপাত এমনকী সীমান্ত এলাকার অনুপ্রবেশ নিয়ে। ভোটের পরে ওরা পুজো প্যানেলকে ডাক পাঠাল আয়করের জন্য।'

তিনি আরও বলেন, ‘‘এটা পুজোকে অপমান করা। নির্বাচনের সময় রাজনৈতিক দলগুলি যে টাকা খরচ করে তার কী হবে? অনেক দলকেই কর ছাড় দেওয়া হয়। এরা মানুষের কাছ থেকে অনুদান তোলে। বিজ্ঞাপন তোলে এবং জিএসটি দেয় এমন কোম্পানি থেকে স্পনসর জোগাড় করে।''

'দুর্গা পূজা কমিটি' গুলিকে আয়কর বিভাগের নোটিস, কেন্দ্রের ওপর ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা

প্রতি বছর রাজ্যে ২৮ হাজার দুর্গাপুজো (Durga Puja) হয়। কলকাতায় পুজো হয় ২২০০টি। এদের মধ্যে ৩৮৬টি একটি সংস্থা গড়ে তুলেছে, যার নাম দুর্গোৎসব।

কলকাতার ২২০০ পুজোর মধ্যে ২৫টি সেরা পুজোর ক্ষেত্রে বাজেট ৫০ লক্ষের বেশি। বাকিরা ১৫ লক্ষ টাকার বেশি খরচ করে না। বৈঠকে গিয়ে যাঁরা আয়কর কর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন তাঁদের বক্তব্য, কিছু সেরা বাজেটের পুজোর উদ্যোক্তারা কিছু কর দিতে পারেন। কিন্তু সব পুজোকে এর আওতায় বাধ্যতামূলক ভাবে ফেললে সেটা অসম্ভব হবে।

অযোধ্যায় স্থাপিত হবে বিশ্বের দীর্ঘতম, ২৫১ মিটার উঁচু রাম মূর্তি

দুর্গোৎসব ফোরামের সচিব শাশ্বত বসু মেনে নিচ্ছেন, আয়কর দফতরে যাওয়া বেশির ভাগ মানুষের কাছেই কঠিন অভিজ্ঞতা। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের বলা হয়েছে ৩০,০০০ টাকার বেশি ভেন্ডরদের দিলে টিডিএস কাটা হবে। রিটার্ন ফাইল করতেও বলা হয়েছে। এগুলো সারা বছরের কাজ। আমাদের কাউকে নিয়োগ করতে হবে। ছোট পুজো কমিটিগুলির সেটা সামর্থ্যে কুলোবে না।''

তাঁর বক্তব্য, ‘‘এটা অসম্ভব। কেন গত ৩-৪ মাস ধরে আয়কর দফতর আমাদের সমন পাঠাচ্ছে? মুম্বইয়ে গণেশ পুজো বা দক্ষিণে পোঙ্গলের ক্ষেত্রে কী হয়? ওরাও কি কর দেয়? আমাদের থেকেই কর কেন? আমরা দুর্গা পুজো মুনাফার জন্য করি না।''

বিজেপি এর মধ্যে পুরোটাই রাজনীতি দেখছে। রাজ্যের বিজেপি সহ সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদারের বক্তব্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিবাদ করছেন দলের নেতাদের রক্ষা করতে। অনেক নেতাই শহরের সবচেয়ে বড় দুর্গাপুজোগুলির আয়োজক।

মমতার দলের বহু বড় মন্ত্রী কলকাতার সবচেয়ে বড় পুজোগুলির সঙ্গে যুক্ত। তালিকার শীর্ষে রয়েছে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের ক্লাব নিউ আলিপুরের সুরুচি সঙ্ঘ, সুজিত বসুর শ্রীভূমি, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাকতলা ও সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের একডালিয়া এভারগ্রিন।

বিজেপির পরিকল্পনা রয়েছে দলের বড় ব্যক্তিত্বদের বাংলার সবচেয়ে বড় উৎসবে সামিল করার।

জয়প্রকাশ মজুমদার বলছেন, ‘‘কেন অমিত শাহ বা জেপি নাড্ডা নয়? এমনকী প্রধানমন্ত্রী মোদিও আসতে পারেন যদি সময় হয়। এটা বাংলার সবথেকে বড় উৎসব। এমরা এর অংশ হতে চাই কিন্তু মমতার মতো কোনও রাজনৈতিক লাভ পেতে নয়।'' তিনি জানিয়ে দেন, কেবল কথার কথা নয়, সত্যিই এ ব্যাপারে পরিকল্পনা রয়েছে।

ছোটদের বলা হয়, মা দুর্গা অসুরের সঙ্গে যুদ্ধ করতে করতে ক্লান্ত হলে প্রতি বছর পৃথিবীতে নেমে আসেন ছুটি কাটাতে। কিন্তু এবার দেবী এখানে এলে দেখবেন তিনি এসে পড়েছেন এক রাজনৈতিক যুদ্ধক্ষেত্রে।

.