বুধবার বীরভূমের রামপুরহাটে প্রশাসনিক সভা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
রামপুরহাট: বীরভূমের রামপুরহাটের প্রশাসনিক সভা থেকে কেন্দ্রীয় সরকার ও বিজেপির বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানালেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।বিজেপি নেতাদের অর্ধশিক্ষিত, গর্ধশিক্ষিত বলে আক্রমণ শানালেন তিনি, পাশাপাশি রাজ্যের উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগ তুলে ঝাঁঝালো আক্রমণ শানালেন মোদী-সরকারের বিরুদ্ধে।
লোকসভা নির্বাচনে দেশের ১৪ আসনে প্রার্থী দেবে তৃণমূল
জেলায় জেলায় মন্ত্রী, আমলাদের নিয়ে গিয়ে সেখানকার সাংসদ, বিধায়ক, জনপ্রতিনিধি ও জেলা, মহকুমা আধিকারিকদের উপস্থিতিতে প্রশাসনিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী।বুধবার বীরভুমের রামপুরহাটে প্রশাসনিক সভা করেন তিনি। রাজ্য মন্ত্রিসভার সদস্য, ও আমলাদের পাশাপাশি প্রশাসনিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জনপ্রতিনিধিরাও। সেখানেই বিভিন্ন প্রকল্পের প্রসঙ্গ তুলে ধরে কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্য সরকারের তুলনা করেন তিনি।
গোয়েন্দা সংস্থা শুধু কেন্দ্রেরই নেই, আমাদের কাছেও কিন্তু সিআইডি আছে, হুঁশিয়ারি মমতার
সাতবছরে রাজ্যের উন্নয়নে তাঁর সরকার কী কী কাজ করেছে, তা তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।তিনি বলেন, “আমি গর্ধশিক্ষিতদের চ্যালেঞ্জ করছি, সরকারী মিটিং-এ দাঁড়িয়ে, সরকারী প্লাটফর্মে দাঁড়িয়ে, কন্যাশ্রী প্রকল্প শুরু হয়েছিল কবে, ২০১৩ সালে, আর আপনাদের...নাটের গুরু প্রোগ্রাম ১০০ কোটি টাকার বেটি বাঁচাও শুরু হয়েছিল ২০১৫ সালে। মনে রাখবেন আমরা আপনাদের টুকলি করি না, আপনারা আমাদের টুকলি করে কাজটাও করতে পারেন না”।
কাঁথিতে অমিত শাহ'র সভা শেষ হওয়ার পরেই ভয়াবহ সংঘর্ষে জড়াল বিজেপি-তৃণমূল
প্রশাসনিক বৈঠক থেকে রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান জানান, কন্যাশ্রী প্রকল্পে ইতিমধ্যেই ৭,০০০ কোটি টাকা খরচ হয়ে গেছে। কন্যাশ্রীর সঙ্গে বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও প্রকল্পের পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী তুলে ধরেন, কেন্দ্রের স্বচ্ছ ভারত ও রাজ্যের চালু করা নির্মল বাংলা প্রকল্পের প্রসঙ্গও। তিনি বলেন, “নির্মল বাংলা শুরু হয়েছে কবে, আর তোমরা নাচ গান গেয়ে রাস্তায় নেমেছো কবে”। তারাপীঠ মন্দির অন্যতম পীঠস্থান। প্রতিদিন বহু মানুষের সমাগম হয় এই পুণ্যভূমিতে। সেখানকার উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রশাসনিক সভামঞ্চ থেকেই তিনি প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন, “ একটা ইট গাঁথতে এসেছো কোনওদিনও, একটা ইট গেঁথে দেখেছো তারাপীঠের মন্দিরটা ভাল করে করা যায় কিনা”।
বিজেপিকে একবার সুযোগ দিন মোদীর নেতৃত্বে সোনার বাংলা নির্মাণ হবে: অমিত শাহ
সারদা, নারদকাণ্ড বা দুুর্গাপুজো কমিটিগুলিকে আয়কর দফতরের ডেকে পাঠানো নিয়ে আগেও তোপ দেগেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিনও সেই ধারা বজায় রাখলেন তিনি।রামপুরহাটের সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বাংলাকে ধমকে লাভ নেই, চমকে লাভ নেই, ভয় দেখিয়ে লাভ নেই., সিবিআই দেখিয়ে লাভ নেই, আমরা লড়ে নেব”। সভায় উপস্থিত সাধারণ মানুষের কাছে তিনি প্রশ্ন ছুঁড়ে জিজ্ঞাসা করেন “রাজ্যে সরস্বতী পুজো, দুর্গাপুজো হয় কিনা”। প্রশাসনিক বৈঠক থেকে বিজেপির উদ্দেশ্যে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, হয় বিজেপি প্রমাণ করুক, বাংলায় দুর্গাপুজো হয় না, সরস্বতী পুজো হয় না, তা না হলে রাজনীতি ছেড়ে দেবেন। পাশাপাশি তিনি প্রমাণ করতে না পারলে রাজনীতি ছেড়ে দেবেন বলে সাফ জানিয়ে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কেন্দ্রীয় সংস্থার জন্য খেলাধুলোয় অর্থ সাহায্য করতে অনেকেই ভয় পাচ্ছেনঃ মমতা
রামপুরহাটের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, কয়েকটা গুণ্ডা, গদ্দারকে এনে বিজেপি বলে দিচ্ছে নির্বাচনে রেজাল্ট কবে বের হবে, তারা কতগুলো আসন পাবে, কখন রেজাল্ট বেরোবে।তিনি বলেন, “নির্বাচন কমিশনটাও মনে হচ্ছে বিজেপি চালাচ্ছে”। এরপরেই নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আপনারা ঠিক করবেন কবে নির্বাচন হবে, কবে ফলাফল বেরবো, কী ফল হল মানুষ ভোট দিয়ে ঠিক করবে”। কেন্দ্রের শাসকদলের উদ্দেশ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চ্যালেঞ্জ, ৪২ আসনের মধ্যে একটি আসনে জিততে পারবে না তারা।