This Article is From May 20, 2020

পশ্চিমবঙ্গে ঢুকে পড়ল বিধ্বংসী আমফান! ঘণ্টায় ১২০ কিমি বেগে প্রবল ঝড়ের সম্ভাবনা!

Cyclone Amphan: আজ, বুধবার বিকেলে এই ঘূর্ণিঝড় পশ্চিমবঙ্গের দিঘা থেকে ৯৫ কিলোমিটার দূরে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে কেন্দ্রীভূত রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়লে ব্যাপক ধ্বংসলীলা আশঙ্কা করছেন আবহাওয়াবিদরা।

পশ্চিমবঙ্গে ঢুকে পড়ল বিধ্বংসী আমফান! ঘণ্টায় ১২০ কিমি বেগে প্রবল ঝড়ের সম্ভাবনা!

পশ্চিমবঙ্গে শুরু তাণ্ডব

নয়াদিল্লি: বিগত কয়েক বছর ধরে বঙ্গোপসাগরে অন্যতম ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় আমফান ভূখণ্ডে প্রবেশ করতে শুরু করেছে। আইএমডি ভুবনেশ্বরের আধিকারিক সংবাদ সংস্থা এএনআইকে জানিয়েছে, “ভূখণ্ডে প্রবেশের প্রক্রিয়া দুপুর আড়াইটায় শুরু হয়েছে এবং প্রায় চার ঘণ্টা চলবে। ঘূর্ণিঝড়ের সম্মুখ প্রাচীরের অংশটি পশ্চিমবঙ্গে মাটিতে প্রবেশ করছে।” আমফান মঙ্গলবার সুপার সাইক্লোন থেকে “অত্যন্ত মারাত্মক ঘূর্ণিঝড় ঝড়”-রূপে পরিবর্তিত হয়ে দুর্বল হয়ে পড়েছিল। ভারতীয় উপকূলের দিকে এই ঝড় অগ্রসর হওয়ার সঙ্গেসঙ্গেই ওড়িশা এবং পশ্চিমবাংলার কিছু অংশে প্রবল ঝোড়ো বাতাস এবং ভারী বৃষ্টিও শুরু হয়ে যায়। আজ, বুধবার বিকেলে এই ঘূর্ণিঝড় পশ্চিমবঙ্গের দিঘা থেকে ৯৫ কিলোমিটার দূরে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে কেন্দ্রীভূত রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়লে ব্যাপক ধ্বংসলীলা আশঙ্কা করছেন আবহাওয়াবিদরা।

ঘূর্ণিঝড় আমফান ১০-পয়েন্টে:

  1. ঘূর্ণিঝড় আমফানের লেজ কোথায় কোথায় সবথেকে আঘাত করতে পারে সেই বিষয়টির পূর্বাভাস বুঝে নিচু উপকূলীয় অঞ্চলগুলি ফাঁকা করতে শুরু করেছে প্রশাসন। তবে করোনভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার প্রতিরোধে সতর্কতা অবলম্বনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ক্ষেত্রে এবারের উদ্ধারকার্য আরও জটিল। সংক্রমণের সংখ্যা দেশে হু হু করে বাড়ছে এবং হাসপাতালগুলিতেও সংকুলান হচ্ছে না।

  2. ঝড়ে উপড়ে যাওয়া গাছ, উড়ন্ত ভারী বস্তু, যোগাযোগ এবং বিদ্যুতের লাইনগুলিতে ‘ব্যাপক' ক্ষতির বিষয়ে সতর্ক করেছে হাওয়া অফিস। কলকাতায় ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে, আকাশ অন্ধকার এবং ফুঁসছে হুগলি নদীও। দীঘায় ব্যাপক জলোচ্ছ্বাস দেখা গিয়েছে।

  3. ওড়িশা ও পশ্চিমবাংলায় পাঁচ লক্ষেরও বেশি মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলেই জানান জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনীর প্রধান এসএন প্রধান। করোনভাইরাস বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মধ্যে এই ঘূর্ণিঝড়টি দেশের পক্ষে “জোড়া চ্যালেঞ্জ” বলেই মনে করেন তিনি।

  4. “এনডিআরএফের একচল্লিশটি দল দায়িত্ব পালন করছে। মানুষকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া এখন আরও বড় চ্যালেঞ্জ। এই অভিযানের সময় আমাদের সামাজিক দূরত্বও নিশ্চিত করতে হবে,” আজ এনডিটিভিকে বলেন এস এন প্রধান।

  5. উপকূলের কাছাকাছি শহর কলকাতায় সতর্কতা জারির পর আগামীকাল ভোর ৫ টা পর্যন্ত বিমানবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের নানা ভিডিওতে স্পষ্ট দেখা গিয়েছে ওড়িশার পারাদ্বীপ এবং পশ্চিমবাংলার দক্ষিণ ২৪ পরগনাসহ উপকূলীয় অঞ্চলগুলিতে প্রবল জোরে হাওয়া দিচ্ছে। বাংলার সাতটি জেলা ঘূর্ণিঝড়ের প্রত্যক্ষ প্রভাবের সম্মুখীন হতে পারে।

  6. ভারতের আবহাওয়া দফতরের পরিচালক মৃতুঞ্জয় মহাপাত্র জানান যে, পাঁচ মিটার পর্যন্ত উঁচু ঢেউ পশ্চিমবঙ্গের সমুদ্রের নিম্ন উপকূলীয় অঞ্চলগুলিতে আছড়ে পড়তে পারে। দুর্বল অঞ্চলগুলিকে ‘রেড প্লাস জোন' হিসাবে চিহ্নিত করে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান যে তিনি আজ, বুধবার রাত নিজে কন্ট্রোল রুমেই কাটাবেন।

  7. উপকূলের কাছাকাছি বাসিন্দাদের বাড়ি থেকে না বেরোতে সতর্ক করা হয়েছে; জেলেদের উপকূল থেকে দূরে থাকতে সতর্ক করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান যে, বৃহস্পতিবার আকাশ পরিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত সকলের ঘরেই থাকা উচিত। তিনি বলেন, “একটি ঘূর্ণিঝড়ের লেজের প্রান্তটিই সবচেয়ে মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে, সুতরাং আকাশ পরিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত ঘর থেকে বেরিয়ে আসা উচিত নয়।” মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, তাঁর স্পষ্ট মনে রয়েছে গত বছর যখন ঘূর্ণিঝড় ফণী আছড়ে পড়েছিল সেই সময়ের থেকেও বেশি মানুষ মারা যান ঘূর্ণিঝড় চলে যাওয়ার সময়।

  8. সোমবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঝড় মোকাবিলায় প্রতিক্রিয়ামূলক পদক্ষেপ ও প্রস্তুতি পর্যালোচনা করতে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন। “ঘূর্ণিঝড় ‘আমফানে'র কারণে পরিস্থিতি সম্পর্কিত প্রস্তুতি পর্যালোচনা করেছি। ত্রাণের পদক্ষেপের পাশাপাশি উচ্ছেদ কর্মসূচির বিষয়েও আলোচনা করা হয়েছে। আমি সবার সুরক্ষার জন্য প্রার্থনা করছি এবং কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে সর্বাত্মক সহায়তার আশ্বাস দিচ্ছি,” এই বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রী মোদি টুইট করেন।

  9. ‘আমফান' শব্দটির, উচ্চারণে স্থানবিশেষে ‘উম-পুন' অর্থ আকাশ। নামটি বহু বছর আগে, ২০০৪ সালে দিয়েছিল থাইল্যান্ড। ঝড়টিকে ধারাবাহিকভাবে বিশাখাপত্তনমে ডপলার ওয়েদার র‍্যাডারের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে।

  10. ওড়িশায় সুপার সাইক্লোনের কবলে পড়ে প্রায় ১০,০০০ মানুষ মারা গিয়েছিলেন ১৯৯৯ সালে। আট বছরের একটি টাইফুনের পরে, টর্নেডো এবং বন্যায় বাংলাদেশে ১,৩৯,০০০ জন মানুষ প্রাণ হারান। যদিও এমন বিধ্বংসী ঝড়ের ফ্রিকোয়েন্সি এবং তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে। কাঠগড়ায় জলবায়ু পরিবর্তন! তবে দ্রুত মানুষকে সরিয়ে নেওয়ার তৎপরতা, আরও ভাল পূর্বাভাস এবং আরও আশ্রয়কেন্দ্রের কারণে মৃত্যুর পরিমাণ হ্রাস পেয়েছে বলেই সংবাদ সংস্থা এএফপি জানিয়েছে।



Post a comment
.