NRC Draft 2019: চূড়ান্ত নাগরিকদের তালিকা (নাগরিকদের জাতীয় নিবন্ধন) আগামী ৩১ অগাস্ট প্রকাশিত হবে
গুয়াহাটি: অসমের নাগরিকপঞ্জির (NRC Assam) খসড়া তালিকা থেকে একের পর এক বাঙালি হিন্দুর নাম না থাকার ঘটনাকে কেন্দ্র করে উদ্বিগ্ন ভারতীয় জনতা পার্টি। এই যেমন, গুয়াহাটির বাসিন্দা ৫২ বছরের উমাকান্ত ভৌমিক, তিনি একজন বাঙালি হিন্দু এবং প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর আমল থেকেই বিজেপির সমর্থক। গত বছর প্রকাশিত অসমের নাগরিক তালিকা থেকে যাঁদের নাম বাদ পড়েছিল,তাঁদের মধ্যে তিনি এবং তাঁর পরিবারও রয়েছেন।"একবার নয়,সাত-সাতবারের জন্য আমি আমার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে পুনরায় যাচাইয়ের জন্য এনআরসি শুনানিতে গেছি। আমাদের খুব বেশি আশা নেই। আমি একেবারে শুরু থেকেই বিজেপি সমর্থক। আমরা বাঙালি হিন্দুরাই অসমে বিজেপির প্রথম সমর্থক ছিলাম", আক্ষেপের সুরে বলতে শোনা যায় এনআরসি তালিকা থেকে নাম বাদ যাওয়া উমাকান্ত ভৌমিককে।
আধার তথ্যের মতোই অসমের নাগরিকদের সুরক্ষিত তালিকা তৈরির নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের
"আমরাই অসমে বিজেপির ঘাঁটি প্রতিষ্ঠা করেছি অথচ এখন যখন আমাদের এভাবে হয়রানি করা হচ্ছে তখন সরকার আমাদের সহায়তা করছে না," এনডিটিভিকে বলেন শ্রী ভৌমিক।
১৯৫১ সালে অসমে প্রথম প্রকাশিত নাগরিক তালিকা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুসারে পরিবর্তিত হচ্ছে। অসমে বসবাসরত ভারতীয় নাগরিকদের মধ্যে যারা ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চের পরে অবৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে এই রাজ্যে প্রবেশ করেছে তাঁদের তালিকা থেকে পৃথক করার জন্য সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুসারে এনআরসি আপডেট করা হচ্ছে।
অসমের অনেকেই বলছেন যে তাঁরা এখন এনআরসির খসড়া তালিকা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন। ইতিমধ্যেই কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপি সকার অন্যান্য রাজ্যগুলিতেও এনআরসি তালিকা প্রস্তুতের পরিকল্পনা করছে। অথচ অসমে ক্ষমতাসীন বিজেপিও খসড়া তালিকায় ভুল অন্তর্ভুক্তি এবং নাম বাদ যাওয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
সূত্র মারফৎ খবর, বিজেপি এই বিপুল সংখ্যক হিন্দুদের নাম এনআরসির খসড়া তালিকা থেকে বাদ যাওয়া নিয়ে চিন্তিত। কেননা এটা সহজেই অনুমান করা যায় যে অসমের ১৮ শতাংশ বাঙালি হিন্দু ভোট ব্যাঙ্কের বেশিরভাগই বিজেপিকে সমর্থন করে।
‘৩১শে অগস্টের মধ্যেই চাই', এনআরসি তালিকা প্রকাশের সময়সীমা নিয়ে অনড় সুপ্রিম কোর্ট
গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি অসমের ১৪ টির মধ্যে ৯টি আসন জিতেছে - মনে করা হয় যে, আদিবাসী, অসমিয়া হিন্দু এবং বাঙালি হিন্দুদের ভোট একত্রিত হয়েই ওই দুর্দান্ত ফল করতে পেরেছে বিজেপি।
"আমরা খসড়ায় যা লক্ষ্য করেছি তা হচ্ছে বাঙালি হিন্দুরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন এবং এর নেপথ্যে সরকারের তরফ থেকে অনেকগুলি খামতি রয়েছে," মনে করেন সারা অসম বাঙালি ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক শান্তনু মুখোপাধ্যায়। তাঁর সংস্থাটি অসমে বাঙালি হিন্দুদের অধিকার রক্ষার্থে কাজ করে থাকে।
গত দুই মাস ধরে বিজেপি এনআরসির বিষয়টি নিয়ে সবদিক থেকে চেষ্টা করেছে - কেন্দ্র এবং রাজ্য উভয়ই এনআরসি তথ্য পুনরায় যাচাইয়ের জন্য সুপ্রিম কোর্টের কাছে আবেদন করে, কিন্তু শীর্ষ আদালত ওই আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে।