This Article is From Nov 04, 2019

কালীপুজো মিটতেই হোয়াটসঅ্যাপ হ্যাকিং নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী-রাজ্যপাল বাগযুদ্ধ

কিছুতেই "খাঁচাবন্দি রাজ্যপাল" হবেন না, সাফ জানালেন জগদীপ ধনকর, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে দীপাবলির শুভেচ্ছা জানাননি বলেও অভিযোগ করেন তিনি

কালীপুজো মিটতেই হোয়াটসঅ্যাপ হ্যাকিং নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী-রাজ্যপাল বাগযুদ্ধ

তাঁর ফোনও হ্যাক করা হয়েছে এমন অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী Mamata Banerjee

কলকাতা:

কয়েক দিনের আপেক্ষিক শান্তির পরে ফের যুযুধান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। সম্প্রতি হোয়াটসঅ্যাপের (WhatsApp Hacking) মাধ্যমে হ্যাক করে যেভাবে নজরদারি চালানো হচ্ছে তা নিয়ে আগেই উষ্মা প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সেই বিষয়টি নিয়েই রাজ্যপালের (Jagdeep Dhankhar) সঙ্গে ফের দ্বন্দ্ব লেগে গেল মুখ্যমন্ত্রীর (Mamata Banerjee)। শনিবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে "গুপ্তচরবৃত্তি" করার অভিযোগ করেন এবং বলেন যে তাঁর ফোনে যে আড়ি পাতা হয়েছে এমন প্রমাণও তাঁর কাছে রয়েছে। এর পরের দিনই জগদীপ ধনকর আরও বিস্ফোরক দাবি করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাল্টা আঘাত করে বলেন, "অনেক রাজনীতিবিদ এবং ব্যবসায়ী এমন অভিযোগ করছেন যে এখানে তাঁদের গোপনীয়তার সঙ্গে আপোষ করতে হচ্ছে"।

এর আগে রাজ্যপাল গত মাসে আয়োজিত দুর্গাপুজো কার্নিভালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের বিরুদ্ধে তাঁকে উপেক্ষা করার অভিযোগ আনেন। ধনকর এই ঘটনাকে তাঁর জীবনের অন্যতম "বেদনাদায়ক" মুহূর্ত বলেও উল্লেখ করেন। কিন্তু এর কিছুদিন পরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যপালের কাছ থেকে একটি চিঠি পান যেখানে তিনি ভাইফোঁটায় যোগ দেওয়ার প্রস্তাব দেন। তারপরেই দেখা যায় যে মুখ্যমন্ত্রী রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব দূরে রেখে রাজ্যপালকে তাঁর বাড়ির কালীপুজোয় আমন্ত্রণ জানান। মুখ্যমন্ত্রীর আমন্ত্রণ রক্ষা করে কালীঘাটে যান রাজ্যপাল, সঙ্গে নিয়ে যান তাঁর স্ত্রীকেও। এই ঘটনার পর মনে করা হচ্ছিল যে এবার বোধহয় রাজ্যপাল এবং মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যেকার দ্বৈরথ থামলো। কিন্তু সেই জল্পনাকে মিথ্যা প্রমাণ করে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠছে দু'জনের পারস্পরিক সম্পর্ক।

"আমার ফোন ট্যাপ করা হচ্ছে": কেন্দ্র সহ ২-৩টি রাজ্যের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রী মমতার

হোয়াটসঅ্যাপ হ্যাকিং প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর তোলা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন যে তাঁর কাছে প্রমাণ রয়েছে ... কী প্রমাণ রয়েছে, কেবল তিনিই জানেন। তবে আমি কেবল এইকথাই বলতে পারি যে রাজনীতিবিদ থেকে ব্যবসায়ী, অনেকেই আমার সঙ্গে এসে দেখা করেছেন এবং অভিযোগ করেছেন যে এখানে তাঁদের গোপনীয়তা নিয়ে আপোষ করা হয়েছে"।

শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস অবশ্য রাজ্যপালের এই মন্তব্যে বিস্ময় প্রকাশ করে একে "পথ চলতি কথা" হিসাবে বর্ণনা করেছে।

তবে, রাজ্যপাল ধনকর এও অভিযোগ করেন যে, মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে দীপাবলির শুভেচ্ছা পর্যন্ত জানাননি। এমনকি এই সপ্তাহের শেষের দিকে শুরু হতে চলা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবেও তাঁকে আমন্ত্রণ জানাননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি ধনকরকে একথাও বলতে শোনা যায় যে তিনি আর যাই হোক, কখনই  "খাঁচাবন্দি রাজ্যপাল" হবেন না।

eovg73m

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির কালীপুজোয় সস্ত্রীক যোগ দেন রাজ্যপাল

সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী বলেন,“আমার ফোন ট্যাপ করা হয়েছিল, এবং আমি বিষয়টা জানি কারণ আমার কাছে তথ্য এবং প্রমাণ রয়েছে। সরকারও জানে তারা এটা করেছে। কেন্দ্রীয় সরকার এবং দুই-তিনটি রাজ্য সরকারের নির্দেশে এটি ঘটছে। রাজ্যগুলোর নাম বলব না আমি, তবে এর মধ্যে একটিতে বিজেপি ক্ষমতায় রয়েছে”।

হোয়াটসঅ্যাপ স্পাইওয়্যারের মাধ্যমে প্রিয়াঙ্কা গান্ধির ফোন হ্যাক করার অভিযোগ তুলল কংগ্রেস

পাশাপাশি তিনি আরও বলেন যে, “এটা খুবই গুরুতর বিষয়। আমি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে এই বিষয়টিতে তদন্ত নিশ্চিত করার জন্য অনুরোধ করব।” তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো দেশের পরিস্থিতিকে ‘বেশ গুরুতর' বলেই মনে করছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্ন তোলেন, “আমাদের বাকস্বাধীনতা কোথায়? আমরা তাহলে কী স্বাধীনতা পেলাম যে ফোনেও নির্দ্বিধায় কথা বলতে পারব না? আমরা যা বলছি তা কেউ শুনছে! আমরা ভেবেছিলাম হোয়াটসঅ্যাপের মেসেজগুলি এনক্রিপ্ট করা যায় না, তবে সেটাও রেহাই পেলনা। ল্যান্ডলাইন ফোন বা মোবাইল ফোন কোনওটাই নিরাপদ নয়- এটি সম্পূর্ণ গুপ্তচরবৃত্তি।”

এরপরেই মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য নিয়ে মুখ খোলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর।


 

.