মন্ত্রীর কথায়, বৈদ্যুতিন উত্পাদন, তথ্য ও প্রযুক্তি, মুদ্রা ঋণ, বাণিজ্য পরিষেবা ক্ষেত্রে খুব ভাল কাজ হচ্ছে।
নয়াদিল্লি: দেশের অর্থনীতিতে কোনও সমস্যা নেই, বরং ভারতের অর্থনৈতিক বৃদ্ধির হার নাকি খুবই ভালো। শনিবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ (Union minister Ravi Shankar Prasad) এমনই জানিয়েছেন। এমন একখানা মন্তব্য করার পেছনে তাঁর যুক্তিও উদ্ভট। মুম্বাইয়ে মহারাষ্ট্রের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে (Maharashtra assembly elections) বিজেপির হয়ে প্রচার করতে গিয়ে রবি শঙ্কর প্রসাদ যুক্তি দিয়েছেন যে, হিন্দি সিনেমার বাজার খুব ভালো। সিনেমা যা লাভ করছে তাতেই বোঝা যাচ্ছে দেশের অর্থনীতি বেশ ভালোর দিকে! তিনটি বলিউড চলচ্চিত্রের বক্স অফিস পারফরম্যান্স অধিকাংশ অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞের দাবির চেয়ে ভারতীয় অর্থনীতির পৃথক চিত্রই উপস্থাপন করেছে। “আমি শুনলাম যে, ২ অক্টোবর, যেটি অন্যতম জাতীয় ছুটির দিন হিসাবে পালন করা হয়, তিনটি হিন্দি সিনেমা এই দিনে ১২০ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে। দেশের অর্থনীতি সুদৃঢ় না হলে কীভাবে মাত্র তিনটি সিনেমা এত লাভ করতে পারে! তাও একদিনে?” প্রশ্ন মন্ত্রীর।
ভারতের অর্থনৈতিক বৃদ্ধি "প্রত্যাশার চেয়ে কেন দুর্বল" ব্যাখ্যা করল IMF
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হ্রাসের কয়েক সপ্তাহ ধরে পাঁচ বছরে সবচেয়ে নীচে নেমে গিয়েছে। যদিও এতে সরকারের কোনও হাত নেই বলেই দাবি মন্ত্রীর। “বৈদ্যুতিন উত্পাদন, তথ্য ও প্রযুক্তি খাত, মুদ্রা ঋণ, বাণিজ্য পরিষেবা ক্ষেত্রে খুব ভাল কাজ হচ্ছে। আমরা কখনই বলিনি যে আমরা সবাইকে সরকারি চাকরি দেব... কিছু লোকজন আছেন যারা বেকারত্বের কারণ দেখিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে সংগঠিত হচ্ছেন এবং জনগণকে বিভ্রান্ত করছেন,” বলেন রবি শঙ্কর প্রসাদ!
সম্প্রতি, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল জানিয়েছে যে, বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা ভারত এবং ব্রাজিলে এই বছর আরও প্রকট হবে। দু'দেশের প্রতি ইঙ্গিত করে আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিভা বলেছেন, ২০১৯ সালে বিশ্বের ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রেই প্রবৃদ্ধির হার ধীর গতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
মোদি সরকারের চূড়ান্ত অব্যবস্থাপনার ফলেই দেশ ডুবে যাচ্ছে মন্দায়: মনমোহন সিং
ক্রিস্টালিনার বক্তব্য সম্পর্কে মন্তব্য করতে বলা হলে রবি শঙ্কর প্রসাদ বলেন, “ভারত সম্পর্কে আইএমএফের পরিমাপ এখনও অসম্পূর্ণ। এবং ভুলে যাবেন না, মনমোহন সিং ক্ষমতায় থাকাকালীন ভারত ১১ তম স্থানে ছিল; আজ এটি পঞ্চম বৃহত্তম। আমরা ফ্রান্সকেও পিছনে ফেলে দিয়েছি।” এই বছরের শুরুর দিকেই জাতীয় নমুনা সমীক্ষা দফতরের পর্যায়ক্রমিক শ্রমশক্তি সমীক্ষার একটি অপ্রকাশিত প্রতিবেদনেও উল্লেখ করা হয়েছিল যে, চাকরির হারের পরিসংখ্যান গত ৪৫ বছরে সবচেয়ে নীচে রয়েছে। ২০১৭-১৮ সালে ৬.১ শতাংশ দাঁড়িয়েছে এই হার। বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকা জানিয়েছে, বেকারত্বের হার ১৯৭২-৭৩ সালেও ঠিক এতটাই বেশি ছিল। ২০১১-১২ সালে এই হার ছিল ২.২ শতাংশ।
পরবর্তী মাসগুলিতে, পরিকাঠামো খাতের বৃদ্ধি হ্রাস পেয়েছে এবং অটোমোবাইল শিল্পে মন্দা এবার রেকর্ড ভেঙেছে। সেপ্টেম্বর মাসে যানবাহন বিক্রির হার একাদশতম মাসে ২৩.৭ শতাংশ কমেছে। গাড়ি এবং অটোর নানা উপাদান প্রস্তুতকারী হাজার হাজার মানুষের চাকরি গিয়েছে এবং কিছু ক্ষেত্রে উত্পাদন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।