This Article is From Apr 08, 2019

শতবর্ষ কাবার! ২০১৯-এর রাজনৈতিক তরজায় অমলিন নেতাজির প্রিয় তেলেভাজার দোকান

১৯১৮ সালে প্রতিষ্ঠিত ‘লক্ষ্মী নারায়ণ সাও পকোড়া স্টল’ (Laxmi Narayan Sau Pakoda Stall) পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক ওঠানামার দীর্ঘদিনের সাক্ষী।

শতবর্ষ কাবার! ২০১৯-এর রাজনৈতিক তরজায় অমলিন নেতাজির প্রিয় তেলেভাজার দোকান

‘লক্ষ্মী নারায়ণ সাও পকোড়া স্টল’ (Laxmi Narayan Sau Pakoda Stall) পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক ওঠানামার দীর্ঘদিনের সাক্ষী

কলকাতা:

এ কলকাতার মধ্যে আছে আরেকটা কলকাতা। বিশেষ করে জাতীয় নির্বাচনের আগে সেই অন্য কলকাতার অন্য এক রূপ চোখে পড়ার মতো। চা আর তেলেভাজা নিয়ে এই শহরে এখনও ভারতীয় ফুটবলের ভবিষ্যৎ থেকে শুরু করে দেশের গদি সবেরই এক উপুর্যপুরি তত্ত্বতালাশ চলে। কলকাতার হাতিবাগান এলাকার একটি ছোট পকোড়ার দোকানে গেলে এমনই ভবিষ্যৎবাণী অহরহ কানে আসবে আপনার। ১৯১৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এবং বিখ্যাত স্টার থিয়েটার থেকে মাত্র ৫০ মিটার দূরে অবস্থিত, ‘লক্ষ্মী নারায়ণ সাও পকোড়া স্টল' (Laxmi Narayan Sau Pakoda Stall) পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক ওঠানামার দীর্ঘদিনের সাক্ষী। স্বাধীনতার আগে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুও তাঁর সান্ধ্যকালীন চা-টা খেতে এখানেই আসতেন।

প্রতি সন্ধ্যায়, উত্তর কলকাতার ঘিঞ্জি ভিড়ঠাসা ব্যস্ত এই এলাকায় তরজা ওঠে চরমে। রোয়াকের অবশিষ্টাংশ এখনও ইতিহাস হয়ে যায়নি যে তল্লাটে সেখানে চা আর তেলেবাজা নিয়ে রাজনৈতিক আলোচনায় কাবার হয় সন্ধ্যা। 

খিদের জ্বালায় মেয়ে কাঁদলে মুখে মদ ঢেলে দেন বাবা, তিন বছরের শিশুকে উদ্ধার করল মহিলা কমিশন

পেশায় হিসাবরক্ষক আবির চট্টোপাধ্যায় বলেন, “কলকাতায় রাজনৈতিক আড্ডা আর তেলেভাজায় আসলে নস্টালজিয়ার স্পর্শ। পশ্চিমবঙ্গকে সারা ভারতের তুলনা করে দেখবেন, এটি সম্পূর্ণৎ ভিন্ন। মধ্য কলকাতার রাজনৈতিক ইতিহাস ভারি সমৃদ্ধ। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু এখানে আসতেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক খুব বন্ধুত্বপূর্ণ। বাংলার সংস্কৃতির সঙ্গে সারা দেশের সবসময়ই একটা পার্থক্য আছে।”

কিন্তু তাতে পরিবর্তনও হয়েছে। দোকানের মালিক মোহন গুপ্ত বলেন, “এই জায়গাটি বেশ বদলে গেছে। আপনি এই দোকানের একটি ছবি দেখে নিজেই তুলনা করতে পারবেন। সাত বছরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুধু এখানেই নয়, সমগ্র বাংলাতেও উন্নয়ন নিয়ে এসেছেন।”

0tq6uq08

কলকাতার হাতিবাগানে লক্ষ্মী নারায়ণ সাও পকোড়া স্টলে একটি পোস্টার।

প্রতিযোগিতা এখন তৃণমূলের বহুকালের নেতা সুদীপ বন্দোপাধ্যায় এবং বিজেপির রাজ্যসচিব রাহুল সিনহার মধ্যে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের সঙ্গে অসন্তুষ্টি বিজেপি প্রধান নির্বাচনী হাতিয়ার। ইলেকট্রনিক্স মেরামতের একটি দোকানের মালিক রোশন বাজাজ বলেন, “যারা জিএসটি সম্পর্কে কথা বলেন তাঁরা এই বিষয়টি বোঝেনই না। যারা জিএসটি সম্পর্কে কথা বলেন তাঁরা তো আয়করই দেন না। আমাদের উচিৎ প্রধানমন্ত্রী মোদির সরকারকে আরও সময় দেওয়া।”

 ইউপিএসসিতে প্রথম পঞ্চাশ জনের মধ্যে উত্তীর্ণ কৃষক পরিবারের ছেলে

সারা দেশের মতো বাংলাতেও বেকারত্ব তরুণদের মধ্যে একটি বড় উদ্বেগ। সুতরাং কোথায় সস্তায় পেট ভরে আবার প্রাণখুলে চাকরির অভাবের কথাও বলা যায় এই উদ্দেশ্যেই তাঁরা এই নির্দিষ্ট দোকানে ভিড় জমান। ইঞ্জিনিয়ার সুনন্দ ঘোষ বলেন, “চাকরির বিষয়টি বড় বিষয়। আমরা কঠোর পরিশ্রম করি কিন্তু পর্যাপ্ত চাকরি নেই। তরুণরাই তো এই দেশের মূল চালিকা শক্তি।”

তেলেভাজার জগতের বাসিন্দা ‘পকোড়া' গত বছরই মূলধারার রাজনৈতিক আবহে প্রবেশ করে, যখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একটি টেলিভিশন সাক্ষাত্কারে মন্তব্য করেছিলেন যে, একজন ব্যক্তি যিনি পকোড়া বিক্রি করে দিনে ২০০ টাকা রোজগার করেন তাঁকে কি বেকার বলা যেতে পারে? দেশে কর্মসংস্থানের অভাবের কারণে বিরোধী দলীয় নেতারা বারবার প্রধানমন্ত্রী মোদিকে আক্রমণ করেছেন।

.