This Article is From Apr 30, 2019

বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ছাড়া সিপিএমের সব নেতা বিজেপির সঙ্গে রয়েছে: মমতা

"মোদীর আচ্ছে দিন, কৃষকের মৃত্যুদিন। মোদীর আচ্ছে দিন, ৩ কোটি ছেলেমেয়ের চাকরি চলে যাওয়ার দিন"।

মেদিনীপুরের জনসভা থেকে নরেন্দ্র মোদী ও তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে একের পর এক তোপ দাগেন মমতা।

পূর্ব মেদিনীপুর:

লোকসভা নির্বাচন উপলক্ষে তৃণমূল সুপ্রিমো তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখোমুখি হলেন প্রণয় রায়। ওই সময় তৃণমূল সুপ্রিমো পূর্ব মেদিনীপুরের একটি জনসভায় বক্তৃতা দিচ্ছিলেন। সেই জনসভা থেকে নরেন্দ্র মোদী ও তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে একের পর এক তোপ দাগেন মমতা। তিনি বলেন, “আরে পাঁচ বছরে একটা কাজের কথা তো বলুন, যেটা আপনি করেছেন! করেছেন, তবে ভালো কাজ তো কিছুই করেননি! আপনি ‘আচ্ছে দিন' নিয়ে আসবেন বলে ১২ হাজার কৃষক আত্মহত্যা করল। মোদীর আচ্ছে দিন, কৃষকের মৃত্যুদিন। মোদীর আচ্ছে দিন, ৩ কোটি ছেলেমেয়ের চাকরি চলে যাওয়ার দিন। মোদী নিয়ে এল আচ্ছে দিন, নোটবাতিল করে আপনাদের ব্যবসাকে ডুবিয়ে দেওয়ার দিন। নোটবাতিল করে জনগণকে ডুবিয়ে দেওয়ার দিন। মোদীর আচ্ছে দিন, ওই গদা আর তরোয়ালের দিন। মোদীর আচ্ছে দিন, জনগণকে শেষ করার দিন। মোদীর আচ্ছে দিন, দাঙ্গা লাগিয়ে দেওয়ার দিন”। পাশাপাশি  মুখ্যমন্ত্রী  বলেন  বিজেপি কোনও অবস্থায় উত্তরপ্রদেশে ১৭টির বেশি আসন পাবে না।  কংগ্রেস পাবে  সাতটির মতো আসন। আর সপা- বসপা জোটের ফল খুব ভাল  হবে। ২০১৪ সালে  এই উত্তরপ্রদেশে ৭৩টি আসন পেয়েছিল এনডিএ। সেটাই তাদের দিল্লিরদিকে এগিয়ে দেয়।                                 

তিনি বলে যেতে থাকেন মঞ্চ থেকে- “সাড়ে চার বছর ধরে শুধু প্লেনে করে ঘুরে বেড়িয়েছে আর বিরোধীদের চমকেছে! বিরোধীদের পিছনে সিবিআই লাগিয়েছে”!

দিদি, আপনি কাদার রসগোল্লায় পাথর ভরে দিলেও আমি খেয়ে নেব: নরেন্দ্র মোদী

জনগণের তীব্র হাততালির মধ্যেই তিনি প্রশ্ন ছুঁড়ে দিচ্ছেন তারপর- “মা, বোনেরা আমার সঙ্গে একটু জোরে বলুন, চৌকিদার কেমন”? জনসভার দর্শকাসন থেকে উড়ে আসতে থাকে ‘চোর', ‘চোর' ধ্বনি…

তারপরই প্রণয় রায়ের মুখোমুখি হন তিনি। স্পষ্টতই উত্তেজিত তৃণমূল সুপ্রিমো বলতে থাকেন, “যা ওরা করছে, তা বলার নয়! এখানে ওরা সব জায়গায় কেন্দ্রীয় বাহিনীকে পাঠিয়ে দিচ্ছে। অথচ, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশই হল বুথের ভিতর ঢুকতে পারবে না ওরা। ওরা বিরোধীদের গলা টিপে ধরার চেষ্টা করছে। ওরা তো রাজনৈতিকভাবে লড়াই করছে না। এখন ওরা কেন্দ্রীয় সরকারের সব বিভাগের কর্মীদের মোদীর সভায় যেতে বলছে! আর প্রত্যেকটা সভায় কোটি কোটি টাকা খরচা করছে ওরা। এক-একটা সভায় যা এসি মেশিন লাগাচ্ছে, তাতেই তো কয়েক কোটি টাকা বেরিয়ে যাচ্ছে জলের মতো। এগুলো তো মানুষের টাকা”!

তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, কী মনে করছেন আপনি, বিজেপি বাংলাকে নিয়ে কী করতে চাইছে?

“সমস্যা হল, আরএসএস এখন এর ভিতরে ঢুকে গিয়ে নিজেদের চাল চালছে। অন্যদিকে, আমার দলের এক প্রাক্তন কর্মী, যিনি সারদা-নারদা সব কাণ্ডের আসল মাথা, তিনি এখন ওদের দলে গিয়ে ভিড়েছেন। আমরা কিন্তু তাঁকে দল থেকে তাড়িয়ে দিয়েছি। এখন একটা ব্যাপার দেখুন, পশ্চিমবঙ্গে মুসলমান জনসংখ্যা বেশি। ওরা হিন্দু আর মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। দেখুন, বাংলা এরকম নয়। বাংলার কালচার বিভেদের কালচার নয়”।

তৃণমূলের ৪০ জন বিধায়ক আমার সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন, রাজ্যে এসে দাবি মোদীর

আপনার লড়াই কার সঙ্গে? এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে মমতা বলেন, “দেখুন, আমরা একটি আঞ্চলিক দল হলেও আসলে জাতীয় দলও। আমাদের লড়াই বিজেপি, আরএসএস, ওদের কেনা এজেন্সি, নরেন্দ্র মোদী, এই কেন্দ্রীয় সরকার- সকলের সঙ্গেই। এমনকি, আমাদের লড়াই কংগ্রেস, সিপিএমের সঙ্গেও। একটা কথা সাফ বলে রাখি, অন্য রাজ্যে কী হচ্ছে, তা জানি না। তবে, আমার রাজ্যে কংগ্রেস আর সিপিএম হাতে হাত মিলিয়ে নিয়েছে। আরে এই কথা তো সবাই জানে! আপনি যাকে খুশি জিজ্ঞাসা করতে পারেন। এমনকি, সিপিএমও হাত মিলিয়েছে বিজেপির সঙ্গে। একমাত্র বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ছাড়া সিপিএমের সব নেতা হাত মিলিয়েছে বিজেপির সঙ্গে। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সঙ্গে কথা হয়েছে আমার এই নিয়ে, তাই জানি। আমরা এই লোকসভায় ৪২'টায় ৪২'টা আসন পাব। তবে, এই কথাটাও বলি, নরেন্দ্র মোদী এখন ফ্যাসিস্তের থেকেও সাংঘাতিক হয়ে গিয়েছে! ওকে ক্ষমতা থেকে ছুঁড়ে ফেলে দিতে হবে”!

.