This Article is From May 21, 2020

লকডাউনে কর্মহারা, সাইক্লোনে ঘর হারা, জীবনযুদ্ধে অনিশ্চয়তায় পরিযায়ী শ্রমিকরা

বুধবার দুপুর ২.৩০টা নাগাদ দিঘা উপকূলবর্তী এলাকায় আছড়ে পড়ে সাইক্লোন আম্ফান, ১৯০ কিলোমিটার বেগে ঝড় বইতে থাকে, বিভিন্ন প্রান্তে ব্যাপক বৃষ্টিও হয়

লকডাউনে কর্মহারা, সাইক্লোনে ঘর হারা, জীবনযুদ্ধে অনিশ্চয়তায় পরিযায়ী শ্রমিকরা

উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ জেলাজুড়ে তাণ্ডব চালায়. সাইক্লোন, ব্যপক ঝড় ও বৃষ্টি হয়, কাঁচা বা়ড়ি উড়িয়ে নিয়ে যায়

কলকাতা:

করোনা ভাইরাস লকডাউনের (Coronavirus Lockdown) কারণে ভিন রাজ্যে আটকে পড়া শ্রমিকরা সবে ফিরতে শুরু করেছেন এ রাজ্যে। তবে ঘেরার খুশিটা কেড়ে নিয়েছে বুধবারের সাইক্লোন আম্ফান (Cyclone Amphan)। কর্মহারা পরিযায়ী শ্রমিকদের ক্ষতে যে প্রলেপ দিয়েছিল ঘরে আনন্দ, সাইক্লোন যেন নতুন করে সেই ঘায়ে নুনের ছিটে দিল। এই রকমই এক পরিযায়ী শ্রমিক দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবার জামাল মণ্ডল। সোমবার বেঙ্গালুরু থেকে বাড়ি ফিরেছেন তিনি, কর্মহারা হয়েও ঘরে ফিরতে পেরে খুশির অন্ত ছিল না তাঁর, তবে বুধবার সব খুশি বর্ণহীন হয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে স্ত্রী, কন্যাকে নিয়ে এক টুকরো পাউরুটি ও ত্রিপলের জন্য সাইক্লোন ত্রাণ শিবিরে আশ্রয়ে থাকতে গেখা গিয়েছে তাঁকে। বুধবার রাতে সাইক্লোন আম্ফানে ধুলিস্যাত হয়ে গিয়েছে তাঁর এক কামরার মাটির বাড়ি।

সাইক্লোন আম্ফানের বলি ৭২, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ মুখ্যমন্ত্রীর

একটি টেলিভিশন চ্যানেলে জামাল মণ্ডল বলেন, “সোমবার যখন আমি বাড়ি ফিরে আসি, আমি ভাবলাম, ভোগান্তির শেষ হল। লকডাউনে আমি কর্মহারা হয়েছি এবং বাকি যা কিছু ছিল, সব কেড়ে নিয়ে গেল সাইক্লোন। আমি জানি না এরপর আমি কী করব, আমি কোথায় থাকব এবং আমার পরিবারের অন্নের সংস্থান কীভাবে করব”।

করোনা ভাইরাস লকডাউনের কারণে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বহু পরিযায়ী শ্রমিকই কাজ হারিয়েছেন, তাঁদের মধ্যেই রয়েছেন জামাল মণ্ডল, বাকি তাঁদের যা কিছু অবশিষ্ট ছিল, তা বুধবার রাতের সাইক্লোন আম্ফান কেড়ে নিয়ে গিয়েছে।

রাজ্যে সাইক্লোন আম্ফানের কারণে ৭২ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং কলকাতা সহ রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গাছ উপড়ে, বাড়িঘর ধ্বংসের পাশাপাশি নিম্নবর্তী বহু এলাকাই প্লাবিত হয়েছে।

আমফানের দাপট, ছবিতে দেখুন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার দৃশ্য

জামির আলি জানিয়েছেন, ২০০৯ সালে সাইক্লোন আয়লার পর, তাঁকে কাজের সন্ধানে ভিন রাজ্যে পাড়ি দিতে হয়। তিনি বলেন, “আয়লার পর, কাজের সন্ধানে আমি বেঙ্গালুরু যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। ১০ বছর ধরে আমি সেখানে ঝাড়ুদারের কাজ করেছি, তবে লকডাউনের কারণে, আমি কাজ হারিয়েছি এবং হেঁটে ১৫দিন, ট্রাক, বাসে সফরের পর আমি মঙ্গলবার বাড়ি ফিরেছি। আমি আশাবাদী ছিলাম যে, সব ঠিক হয়ে যাবে, যদিও আরও খারাপ হওয়ার বাকি ছিল”।

বুধবার রাতে তাঁর বাড়ি ভেঙে যায়, এবং দাদার খোঁজ মিলছে না, নদীতে তাঁদের নৌকা বাঁধতে গিয়েছিলেন তিনি।

জামির আলি বলেন, “বিকেল ৫টা নাগাদ আমার ভাই বাড়ি থেকে বেড়িয়েছিল, বলেছিল, নদীর তীরে আমাদের মাছ ধরার ডিঙি বেঁধে দিয়ে আধঘণ্টার মধ্যে ফিরে আসবে। পাড় পুরো ধসে গিয়েছে এবং তাঁর কোনও খোঁজ মিলছে না”।

সাইক্লোন আম্ফানকে জাতীয় দুর্যোগ ঘোষণা করতে হবে, দাবি সিপিআইএমের

ত্রাণ শিবিরের বাইরে খাবারের লাইনে অপেক্ষারত জয়দেব মণ্ডল বলেন, “এর আগে, অনেকেই ওখানে কাজ করত। ২০০৯ সালে সাইক্লোনের পর, সমুদ্রের জলস্ফীতি বেড়ে যাওয়ার কারণে, আমাদের অনেকেই ভিন রাজ্যে পাড়ি দেয়। তবে এই সাইক্লোন আমাদের ঘরবাড়ি কেড়ে নিয়েছে। আমাদের কিছুই বাকি নেই”।

জেলার এক আধিকারিক বলেন, “এই সাইক্লোনের পর, অনেক মানুষকেই সুন্দরবনের বাইরে কাজের সন্ধানে পাড়ি দিতে হবে”।

বুধবার দুপুর ২.৩০টা নাগাদ দিঘা উপকূলবর্তী এলাকায় আছড়ে পড়ে সাইক্লোন আম্ফান, ১৯০ কিলোমিটার বেগে ঝড় বইতে থাকে, পাশাপাশি রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ব্যাপক বৃষ্টিও হয়।

উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ জেলাজুড়ে তাণ্ডব চালায়. সাইক্লোন, ব্যপক ঝড় ও বৃষ্টি হয়, কাঁচা বা়ড়ি উড়িয়ে নিয়ে যায়, গাছ উপড়ে পড়ে এবং বিদ্যুৎ এর খুঁটি ভেঙে পড়ে, নিম্নবর্তী অনেক এলাকা প্লাবিত হয়।



(এনডিটিভি এই খবর সম্পাদনা করেনি, এটি সিন্ডিকেট ফিড থেকে সরাসরি প্রকাশ করা হয়েছে।)
.