ফের একবার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। করোনা ভাইরাসের (Coronavirus) সংক্রমণ যে হারে বাড়ছে তা নিয়ে উদ্বিগ্ন তিনি (Narendra Modi)। এই পরিস্থিতিতে আদৌ লকডাউন তুলে নেওয়া উচিত হবে কিনা তা নিয়েও ভাবনাচিন্তা করছেন প্রধানমন্ত্রী। ইতিমধ্যেই বুধবার সর্বদলীয় বৈঠকে লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধির ইঙ্গিতই দিয়েছেন তিনি। তবে শনিবার দেশের সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠক করবেন মোদি। মনে করা হচ্ছে ওই বৈঠকেই লকডাউনের মেয়াদ (Coronavirus Lockdown) বৃদ্ধি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। জাতির উদ্দেশে ভাষণে লকডাউনের ভবিষ্যৎ নিয়েই বার্তা দেবেন প্রধানমন্ত্রী এমনটাই মনে করা হচ্ছে। এর আগে ২৪ মার্চ জাতির উদ্দেশে ভাষণে ২৫ মার্চ থেকে একটানা ২১ দিনের লকডাউন জারির ঘোষণা করেন তিনি। ওই লকডাউনের মেয়াদ শেষ হবে ১৪ এপ্রিল। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি রাজ্যের সরকার প্রধানমন্ত্রীর কাছে ১৪ এপ্রিলের পরেও লকডাউন চালিয়ে যাওয়ার সুপারিশ করেছেন।
এদিকে ইতিমধ্যেই দেশের প্রথম রাজ্য হিসাবে লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধির ঘোষণা করেছে ওড়িশা। নবীন পট্টনায়েক সরকার তাঁর রাজ্যে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত লকডাউন জারি থাকার ঘোষণা করেছে।
করোনার গ্রাসে গোটা বিশ্ব, সব মিলিয়ে মৃতের সংখ্যা পেরলো ৯০ হাজার
তবে সূত্র বলছে, লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধির ঘোষণা হলেও বেশ কিছু বিষয়ে মিলতে পারে ছাড়, লকডাউনের নিয়মেও আসতে পারে বেশ কিছু পরিবর্তন। প্রয়োজনীয় পরিষেবাগুলি বাদে এমনিতে আন্তঃদেশীয় যান চলাচল সীমিত থাকবে। স্কুল, কলেজ ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোও পুরোপুরি বন্ধ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
এমনিতেই টানা ২১ দিনের লকডাউনের জেরে প্রায় ভেঙে পড়েছে দেশীয় অর্থনৈতিক পরিকাঠামো। ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক (RBI) তার আর্থিক নীতি সংক্রান্ত এক রিপোর্টে বলেছে যে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের ফলে ভারতের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি পুনরুদ্ধারের জন্যে কিছু পদক্ষেপের পরিবর্তন করা আশু প্রয়োজন।
আরবিআইয়ের সেই পরামর্শ মেনেই এবার বিমান চলাচলের ক্ষেত্রে কিছুটা ছাড় দেওয়া হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে যাত্রীসংখ্যা সীমিত রাখার নিয়মে বেঁধে দেওয়া হতে পারে বিমান সংস্থাগুলোকে। এই নয়া নির্দেশের কারণ করোনা সংক্রমণ রুখতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা।
"নজিরবিহীনভাবে লকডাউনের সময় মানুষ নিষেধাজ্ঞা মেনেছেন": প্রধানমন্ত্রী মোদি
মনে করা হচ্ছে এবার কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে সংক্রমণ প্রবণ এলাকাগুলোতেই বেশি কড়াকড়ি করা হবে। এর ফলে একটা নির্দিষ্ট পরিকাঠামোতেও কাজ করতে পারবে সরকার। ফলে নতুন করে সংক্রমণ বৃদ্ধির হার কম হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।
গত বুধবার সর্বদলীয় বৈঠকে লকডাউন জারি রাখার ইঙ্গিত দিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, “COVID-19-এর পরে জীবন আর আগের মতো হবে না, হয় তা প্রাক-করোনা, না হয় তা উত্তর-করোনো হবে।” প্রধানমন্ত্রী ওই ভিডিও কনফারেন্সে রাজনৈতিক নেতাদের উদ্দেশে বলেন, “এই রোগ থেকে বাঁচতে দেশের মানুষের মধ্যে বহু ক্ষেত্রেই আচরণমূলক, সামাজিক ও ব্যক্তিগত পরিবর্তন করতে হবে।"
লকডাউনের মধ্যেই দেশে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৩৩ জনের মৃত্যু হওয়ায় বর্তমানে এদেশে করোনার শিকার ১৯৯ জন, মোট আক্রান্ত ৬,৪১২ জন।