This Article is From Apr 20, 2020

নেট সমস্যায় বিঘ্ন অনলাইন ক্লাস! নেটওয়ার্ক পেতে মগডালে ক্লাসরুম বানালেন স্যার

শিক্ষক-সহ অন্য পেশাদারদের এখন ওয়ার্ক ফ্রম হোম। কিন্তু হোম নয়, বরং নিমগাছের মগডালে উঠে ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে মগ্ন এখন সুব্রত বাবু

নেট সমস্যায় বিঘ্ন অনলাইন ক্লাস! নেটওয়ার্ক পেতে মগডালে ক্লাসরুম বানালেন স্যার

(ছবি প্রতীকী)

বাঁকুড়া:

সঙ্কটকালে সেরা জ্ঞান বের করে আনা একজন শিক্ষককে মহৎ বানায়। যেভাবে লকডাউনের (Amid Lockdwon) সময় ছাত্র-বান্ধব হতে নিজের সেরাটা দিলেন শিক্ষক সুব্রত পতি । শিক্ষক-সহ অন্য পেশাদারদের এখন ওয়ার্ক ফ্রম হোম। কিন্তু হোম নয়, বরং নিমগাছের মগডালে উঠে ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে (Virtual classroom aboveTree)  মগ্ন এখন সুব্রত বাবু। কলকাতা থেকে ২০০ কিমি দূর থেকেই পড়ুয়াদের ইতিহাসের পাঠ দিচ্ছেন এই শিক্ষক।জানা গিয়েছে, বাঁকুড়ার (Bankura) অহন্দা গ্রামে বাড়ি এই ইতিহাস শিক্ষকের। কলকাতার দুটি বেসরকারি স্কুলে ইতিহাস পড়ান তিনি। লকডাউনের আবহে আর সবার সঙ্গে তিনিও ফিরেছেন গ্রামের বাড়ি। কিন্তু এখন যেহেতু স্কুল বন্ধ, ফলে সিলেবাস শেষ না হওয়াতে অথৈ জলে পড়ুয়ারা। তাই তাদের পাশে থাকতে অনলাইন ক্লাসরুমের ব্যবস্থা করেন সুব্রত পতি। কিন্তু চেষ্টা থাকলেও উপায় নেই। কারণ ইন্টারনেট সমস্যায় জেরবার তাঁর গ্রাম।

ফলে ক্লাসের মাঝপথেই নেট গোলযোগ করায় কেটে যায় লাইন। ক্লাসরুমের ওপারে হাঁ করে বসে থাকেন পড়ুয়ারা। ফের আবার কখন স্ক্রিনে ফিরবেন স্যার, এই অপেক্ষায়। কিন্তু বিধি বাম! নেটওয়ার্ক সমস্যায় জর্জরিত হয়ে মাঝ পথেই থামাতে হয় সেই ক্লাস। ফলে হতাশ চিত্তে বই খাতা গুটিয়ে ফেলে পড়ুয়ারা।কিন্তু এই সমস্যার একটা সমাধান প্রয়োজন। সেই ভাবনা থেকেই নিম গাছের মগডালে মাচা বেঁধে ক্লাসরুম বানিয়ে ফেলেন শিক্ষক সুব্রত পতি। 

উঁচুতে ওঠার ফলে সেভাবে আর সমস্যা করে না ইন্টারনেট। তাই কোনওরকম বাধা ছাড়াই ক্লাস নিতে পারেন এই শিক্ষক। তিনি বলেছেন, "পরিবারের সঙ্গে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাব বলে বাঁকুড়ার গ্রামে ফিরে আসি। কিন্তু আমি একজন শিক্ষক, সেটা ভুলব কী করে। তাই অনলাইন ক্লাস করানো শুরু করি। কিন্তু ইন্টারনেট সমস্যা করায় প্রথম প্রথম খুব বিরক্ত লাগত। এখন অবশ্য সেই সমাধান পেয়ে গিয়েছি।" তিনি জানিয়েছেন একদিনে তাঁকে দুটি কিংবা ৩টি ক্লাস করাতে হয়। তাই বারবার ওঠা নামার সমস্যা যাতে না থাকে, তাই জল-খাবার সঙ্গে নিয়েই গাছে ওঠেন। শৌচকর্ম করতে হলে কী উপায়? তিনি জানিয়েছেন, কোনওভাবে চেপে কাজ চালিয়ে নিই। তবে ঝড়-বৃষ্টি মাঝে মাঝেই তাঁর ক্লাসরুমকে বিপর্যস্ত করে দেয়।

পরের দিন আবার সেটা মেরামত করে ক্লাস শুরু করি, এমনটাই জানিয়েছেন সেই শিক্ষক। তাঁর দাবি, "আমি স্বল্প সামর্থ্যের মধ্যেই চেষ্টা করি পড়ুয়াদের যাতে কোনও অসুবিধা না হয়।" তবে তাঁর ছাত্ররা বেশ সাহায্য করে। এমনটাও দাবি করেন সেই শিক্ষক। তিনি বলেন, "আমার ছাত্ররা কথা দিয়েছে ইতিহাসে ওরা ভালো ফল করবেই।" 

শিক্ষক সুব্রত পতির প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে এক ছাত্র বুদ্ধদেব মাইতি বলেছেন, "উনি আমদের কাছে অনুপ্রেরণা। আমরা কেউ উনার ক্লাস বাদ দিই না। উনি যখন স্কুলে ক্লাস নিয়ে থাকেন, তখন ৯০% উপস্থিতি সবার থাকে।" সহকর্মী প্রসঙ্গে উত্তর ২৪ পরগনার এক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য শমিত রায় বলেছেন, "প্রথম থেকেই উনি কাজের প্রতি দায়িত্বশীল। আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গর্ব।" 



(এনডিটিভি এই খবর সম্পাদনা করেনি, এটি সিন্ডিকেট ফিড থেকে সরাসরি প্রকাশ করা হয়েছে।)
.