This Article is From Jun 02, 2019

#StopHindiImposition কেন্দ্রের নতুন শিক্ষানীতির খসড়ার বিরুদ্ধে শুরু প্রতিবাদ

বিদ্যালয়ে হিন্দিকে আবশ্যিক তৃতীয় ভাষা করা চলবে না, এই দাবিতে শনিবার মুখর হল সোশ্যাল মিডিয়া। নতুন একটি শিক্ষা নীতির খসড়ার প্রতিবাদেই এই দাবি।

কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশাঙ্কের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে খসড়াটি।

হাইলাইটস

  • হিন্দিকে আবশ্যিক তৃতীয় ভাষা করার প্রস্তাবে প্রতিবাদ শুরু।
  • শিক্ষামন্ত্রী রমেশ পোখরিয়ালের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে খসড়াটি।
  • প্রতিবাদে মুখর হল সোশ্যাল মিডিয়া।
চেন্নাই:

বিদ্যালয়ে হিন্দিকে আবশ্যিক তৃতীয় ভাষা করা চলবে না, এই দাবিতে শনিবার মুখর হল সোশ্যাল মিডিয়া। নতুন সরকারের কাছে জমা পড়া একটি শিক্ষা নীতির খসড়ার প্রতিবাদে তার একদিন আগেই টুইটার ভেসে গিয়েছে অজস্র মেসেজে। তামিলনাডু, যেখানে বিষয়টি অত্যন্ত আবেগময়, সেখানকার রাজনীতিবিদরা এই প্রতিবাদকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গ্যানাইজেশন (ইসরো)-র প্রাক্তন প্রধান কৃষ্ণস্বামী কস্তুরীরঙ্গনের নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞদের একটি প্যানেলের ওই হিন্দি-কেন্দ্রিক প্রস্তাবের বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে প্রতিবাদ। জাতীয় শিক্ষা নীতি ২০১৯-এর খসড়ায় প্রস্তাব করা হয়েছে, ‘তিন ভাষা ফর্মুলা' যা ১৯৬৮ সাল থেকে চালু রয়েছে, তা চালু রাখা হবে। বলা হয়েছে—‘শিশুরা এখন থেকে তিনটি ভাষাই শিখতে পারবে শুরু থেকে। একেবারে ভিত্তিগত পর্যায় থেকে।' 

মমতাকে “জয় শ্রীরাম” লেখা ১০ লক্ষ পোস্টকার্ড পাঠানো হবে: বিজেপি

এই প্রস্তাবের পিছনে অনেকেই দেখতে পাচ্ছেন অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত হিন্দি বাধ্যতামূলক করার প্রচেষ্টাকে। আর তারপর থেকেই শুরু হয়েছে প্রতিবাদ। টুইটার ব্যবহারকারীদের প্রতিবাদে #StopHindiImposition ও #TNAgainstHindiImposition এই দু'টি সবচেয়ে বড় ট্রেন্ড হয়ে উঠেছে। রবিবারের বিকেল পাঁচটার মধ্যে এই দুই হ্যাশট্যাগ মিলিয়ে ১ লক্ষ টুইট জমা পড়ার কথা।

প্রতিবাদের সম্মুখীন হয়ে শিক্ষামন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল জানিয়েছেন, এটা কেবল মাত্র প্রস্তাব। এখনও এই নীতি নির্ধারিত হয়নি। তিনি বলেন, ‘‘এটা কোনও নীতি নয়। জনতার প্রতিক্রিয়া চাওয়া হবে। এটা একেবারেই ভুল ধারণা যে, এটাকে নীতি হিসেবে কার্যকর করা হয়েছে। কোনও ভাষাকে কোনও রাজ্যেই জোর করে চাপানো হবে না।''

তামি‌লনাডুর স্কুল শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, এই নীতি কার্যকর করা হলেও তাঁদের রাজ্যে তাঁরা তা কার্যকর করবেন না। কেএ সেনগোট্টাইয়া, যাঁর এআইডিএমকে দল বিজেপির সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের জোটে রয়েছে, তিনি বলেন, ‘‘তামিলনাডু দুই ভাষা নীতিই মেনে চলবে। একমাত্র তামিল ও ইংরেজিই তামিলনাডুতে শেখানো হবে।'' 

জয় শ্রী রাম ধ্বনি দেওয়া নিয়ে উত্তাল ব্যারাকপুর, বিজেপির বিক্ষোভে আটকে মন্ত্রীরা, লাঠিচার্জ পুলিশের

বিরোধীরাও তাঁর সুরে সুর মিলিয়ে প্রতিবাদে মুখর হয়েছেন। ডিএমকে নেতা এমকে স্তালিন বলেছেন, ‘‘আমি বিজেপিকে হুঁশিয়ার করে দিচ্ছি এমন কোনও পদক্ষেপ করলে তা তাদের জন্য বড় বিপদ ডেকে আনবে।'' এমডিএমকে নেতা ভাইকোও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ‘ভাষা যুদ্ধ'-র।

এএমএমকে নেতা টিটিভি ধিনাকরন বলেছেন, ‘‘হিন্দি ভাষাকে হিন্দি কথা না বলা রাজ্যে চালু করলে তা বহুত্ববাদকে ধ্বংস করবে। এর ফলে হিন্দিতে কথা না বলা মানুষেরা দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকে পরিণত হবেন।''

অভিনেতা থেকে রাজনীতিক হয়ে ওঠা কমল হাসান বলেছেন, ‘‘আমি হিন্দি ছবিতে অভিনয় করেছি... (কিন্তু) কারওই কারও উপরে কিছু চাপিয়ে দেওয়া উচিত নয়। শেষ পর্যন্ত এটা যার যার ব্যক্তিগত বিষয়, সে কোন ভাষা শিখবে।''

তামিলনাডু দীর্ঘদিন ধরেই হিন্দিকে অন্যান্য ভারতীয় ভাষার থেকে অধিক প্রাধান্য দেওয়ার বিষয়টিতে প্রতিবাদ করে আসছে। স্বাধীনতা-পূর্ব সময়ে এখানে ১৯৩৭ সালে একটি হিন্দি-বিরোধী প্রতিবাদ শুরু হয়ে চলেছিল ১৯৪০ সাল পর্যন্ত। পরে ১৯৬৫-তে আবারও এই বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ শুরু হয়। শুরু হয় দাঙ্গা। মারা যান প্রায় ৭০ জন মানুষ। শেষ পর্যন্ত তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু আশ্বস্ত করে বলেন, হিন্দিতে কথা না বলা রাজ্যগুলিতে জোর করে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়া হবে না, যতক্ষণ না তারা চাইছে। যোগসূত্রের ভাষা হিসেবে ইংরেজিই থাকবে।

অভিযোগ, এই নয়া নীতির খসড়ায় সেই প্রতিশ্রুতিকে ভঙ্গ করা হচ্ছে। শুক্রবার কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়া রমেশ পোখরিয়াল নিশাঙ্কের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

বর্তমানে চালু শিক্ষানীতিটি ১৯৮৬ সাল থেকে চালু হয়েছে। পরে ১৯৯২ সালে তা পরিমার্জন করা হয়। ২০১৪ সালে বিজেপির ইস্তেহার থেকেই এই নতুন শিক্ষানীতির কথা হচ্ছে।

.