This Article is From Jun 16, 2020

ভারত-চিন সীমান্তে ফের সংঘর্ষ, নিহত ১ কর্নেল এবং ২ সেনা জওয়ান

India-China Border: ‘‘গলওয়ান উপত্যকায় উত্তেজনা প্রশমন প্রক্রিয়ার চলাকালীনই গতকাল (সোমবার) রাতে সংঘর্ষ এবং মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে", জানিয়েছে ভারতীয় সেনা

ভারত-চিন সীমান্তে ফের সংঘর্ষ, নিহত ১ কর্নেল এবং ২ সেনা জওয়ান

ভারত-চিন সীমান্তে ফের দুই দেশের সেনার মধ্যে সংঘর্ষে উত্তেজনা ছড়াল

হাইলাইটস

  • ভারত-চিন সীমান্তে ফের উত্তেজনা
  • দুই দেশের মধ্যে বৈঠক যে সমস্যার সমাধান করতে পারেনি, এঘটনা তারই প্রমাণ
  • চিনা সেনার হামলায় নিহত ১ কর্নেল ও ২ সেনা জওয়ান
নয়া দিল্লি:

ভারত-চিন সীমান্তের (India-China Border) লাদাখে ফের দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষে নতুন করে উত্তেজনা ছড়াল। সোমবার রাতে গলওয়ান উপত্যকায় চিনা (China) সেনার হামলায় প্রাণ হারাতে হল ভারতীয় (India) সেনার এক কর্নেল এবং দুই সেনা জওয়ানকে। সেনা সূত্রের খবর, সংঘর্ষে হতাহত হয়েছে চিনের তরফেও। সোমবারই দু'পক্ষের ব্রিগেডিয়ার পর্যায়ের বৈঠক শুরু হয়েছিল। তার পরেই এই হামলা হয়। ভারতীয় সেনার পক্ষ থেকে মঙ্গলবার দুপুরে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘গলওয়ান উপত্যকায় উত্তেজনা প্রশমন প্রক্রিয়ার চলাকালীনই গতকাল (সোমবার) রাতে সংঘর্ষ এবং মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় ভারতীয় সেনার এক অফিসার এবং দুই জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে। দু'পক্ষের ঊর্ধ্বতন আধিকারিকরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বৈঠক করছেন।''

মঙ্গলবার একটি সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, উভয় পক্ষের সিনিয়র সামরিক প্রতিনিধিরা বর্তমানে এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বৈঠক করছেন।

মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং পূর্ব লাদাখের সাম্প্রতিক ঘটনাবলি নিয়ে তিন সেনাবাহিনীর প্রধান ও বিদেশমন্ত্রী ডঃ এস জয়শঙ্কর এবং চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল বিপিন রাওয়াতের সঙ্গে বৈঠক করেন।

ভারত এবং চিনের মধ্যে প্রায় ৩,৫০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত এলাকা রয়েছে। ইদানিং সেই সীমান্ত এলাকাতেই দুই দেশের সেনার মধ্যে চাপানউতোর তৈরি হয়েছে।

সংবাদসংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, গত প্রায় ৪৫ বছর পর চিন সীমান্তের এই ঘটনায় ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর জওয়ানরা নিহত হয়েছেন। এর আগে ১৯৭৫ সালে অরুণাচল প্রদেশের তুলুং লাতে এমন একটি সংঘর্ষে ৪ ভারতীয় সেনা জওয়ান প্রাণ হারিয়েছিলেন।

এদিকে সংবাদ সংস্থা এএফপি জানিয়েছে বেজিং পাল্টা অভিযোগ করেছে যে ভারতীয় সেনা জওয়ানরাই নাকি সীমান্ত পেরিয়ে 'চিনা সেনাদের আক্রমণ' করে। চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান বেজিংয়ে সাংবাদিকদের বলেন “সোমবার দু'বার ভারতীয় সেনারা সীমান্ত অতিক্রম করে এবং চিনা সেনাদের উস্কানি দেয় ও আক্রমণ করে, এরপরেই উভয় পক্ষের সীমান্ত বাহিনীর মধ্যে মারাত্মক সংঘর্ষ শুরু হয়”।

গত ৯ মে, একটি ভারতীয় টহলদারী দলের কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০ জন কর্মীর সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে চিনা সেনারা। ভারতের তরফ থেকে অভিযোগ করা হয় যে, ভারত-চিন সীমান্ত পেরিয়ে ভারতীয় ভূখণ্ডের অভ্যন্তরে প্রবেশের চেষ্টা করে চিনের সেনাবাহিনী। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে তখনই জানানো হয় যে মোটরচালিত নৌকাগুলির সাহায্যে নাকি পানগং হ্রদে ঘোরাফেরা করছে তাঁরা।

তারপরেই দুই দেশের পক্ষ থেকে সমাধানের লক্ষ্যে বৈঠক হয়। সেই বৈঠকের পর একটি সরকারি সূত্র থেকে জানা যায় যে, পূর্ব ও লাদাখের কিছু অংশে ভারত ও চিনা সেনারা পারস্পরিক নিস্পত্তির পথে হেঁটেছে। ওই সূত্র জানায়, একটি "উল্লেখযোগ্য" সমাধানের লক্ষ্যে চিনা সেনা ৩ কিলোমিটার পিছু হেঁটেছে। প্রত্যুত্তরে ভারতের তরফ থেকে কিছু সেনাকে ফেরানো হয়েছে। 

উত্তেজনা প্রশমিত করার লক্ষ্যে ভারত-চিনের যে বৈঠক হয় তাঁর একদিন পরেই ভারতীয় বিদেশমন্ত্রক জানায় যে, বৈঠকটি "সৌহার্দ্যপূর্ণ ও ইতিবাচক পরিবেশে" হয়েছে এবং উভয় পক্ষই একমত হয়েছে যে "প্রাথমিক সমাধান" করার লক্ষ্যে দুই দেশই আরও চেষ্টা করবে।

চিনের বিদেশমন্ত্রকও এক বিবৃতিতে জানায়, দু'দেশই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ (এলএসি) রেখা ধরে শান্তি বজায় রাখার লক্ষ্যে আলোচনা করেছে এবং সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছে।

এর আগে সীমান্ত এলাকা বছরের পর বছর ধরে অবহেলিত রয়েছে একথা বলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের লক্ষ্যে ২০২২ সালের মধ্যে চিনা সীমান্তে ৬৬ টি নতুন রাস্তা নির্মাণ করা হবে বলে জানায়।

তার মধ্যে গালওয়ান উপত্যকার কাছে একটি রাস্তা তৈরিও হয়ে গেছে যা দৌলত বেগ ওল্ডি বিমান ঘাঁটির সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করে, রাস্তাটি গতবছরের অক্টোবরেই উদ্বোধন করা হয়।

.