গতকাল সন্ধে ছ'টা নাগাদ এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটে সাঁতরাগাছি স্টেশনে।
কলকাতা: সাঁতরাগাছি স্টেশনে গতকাল যাত্রীদের ট্রেন ধরা নিয়ে হুড়োহুড়ির চোটে পদপিষ্ট হয়ে প্রাণ হারাল দুজন। এই ঘটনায় বুধবার একটি অভিযোগ দায়ের করা হল অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে। গতকালের ঘটনায় আহতদের সংখ্যা দশজনেরও বেশি বলে জানিয়েছেন জিআরপি কর্তারা। গতকাল সন্ধে ছ'টা নাগাদ এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটে সাঁতরাগাছি স্টেশনে। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের অতি গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ত স্টেশনটিতে তখন কয়েক হাজার মানুষের ভিড়। দুই নম্বর ও তিন নম্বর প্ল্যাটফর্মে সেই সময় দূরপাল্লার ট্রেনের যাত্রীরা ছাড়াও অপেক্ষা করছিলেন লোকাল ট্রেনের যাত্রীরাও। সবমিলিয়ে মোট আটটি ট্রেনের যাত্রী ওই সময় ছিলেন স্টেশনে। তখনই ঘোষণা করা হয় দুটি পাশাপাশি প্ল্যাটফর্মে আসছে নতুন দুটি ট্রেন। ঘোষণা শুনে স্বাভাবিকভাবেই হুড়োহুড়ি পড়ে যায় প্ল্যাটফর্ম চত্বর জুড়ে৷ বহু যাত্রী উঠে পড়েন সরু ফুটব্রিজে। শুরু হয়ে যায় ধাক্কাধাক্কি। এর ফলে কয়েকজন যাত্রী মুখ থুবড়ে পড়ে যান। তাঁদের ওপর দিয়েই চলে যান পিছনের যাত্রীরা। এর মধ্যেই রটে গিয়েছিল ফুটব্রিজ ভেঙে পড়েছে। তার ফলে আরও আতঙ্কিত হয়ে পড়েন ট্রেন ধরার তাড়ায় থাকা মানুষ।
"একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে আইপিসির বিভিন্ন ধারায়। অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে করা হয়েছে এই এফআইআর, যারা এই দুর্ঘটনার জন্য দায়ী", সংবাদসংস্থা আইএএনএস'কে এই কথা জানান সাঁতরাগাছি জিআরপি'র এক পদস্থ কর্তা।
রেল কর্তৃপক্ষ একটি বিবৃতি দিয়ে দুজনের মৃত্যুর কথা ঘোষণা করে। তারা জানায়, এই ব্যাপারে তদন্তের কাজ অবিলম্বে শুরু হয়ে গিয়েছে।
মৃত দুই ব্যক্তির নাম- কমলাকান্ত সিং ও তাসের সর্দার। প্রথমজনের বয়স 32। তিনি পূর্ব মেদিনীপুরের বাসিন্দা। দ্বিতীয়জনের বয়স 61। মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা।
সরকারের পক্ষ থেকে এই ঘটনায় নিহতদের পরিবারকে 5 লক্ষ টাকা, গুরুতর আহতদের 1 লক্ষ টাকা এবং অল্প জখম হয়েছেন যাঁরা, তাঁদের 50 হাজার টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে।
ঘটনার খবর পেয়েই রেড রোডে পুজোর কার্নিভাল থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোজা সাঁতরাগাছিতে চলে যান। সেখান থেকে আহতদের দেখতে যান হাসপাতালে।