উন্নাওয়ের মহিলার মৃত্যু "অত্যন্ত দুঃখজনক", বললেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ (Yogi Adityanath)। পাশাপাশি তিনি জানান, উন্নাওয়ে ধর্ষণের অভিযোগ করা ওই তরুণীকে গায়ে আগুন লাগিয়ে হত্যায় অভিযুক্তদের ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে শুনানি হবে। জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার উন্নাওয়ের (Unnao) ওই নিগৃহীতা যখন আদালতে যাচ্ছিলেন, সেই সময়েই তাঁর উপর হামলা করে ৫ দুষ্কৃতী, যাঁদের মধ্যে ধর্ষণে (Unnao Rape) অভিযুক্ত ২ ব্যক্তিও ছিলেন। তাঁর গায়ে আগুন লাগিয়ে ঘটনাস্থলেই মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয় তাঁকে। ৯০ শতাংশ পুড়ে যান ওই ধর্ষিতা, আশঙ্কাজনক অবস্থায় দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। শুক্রবার রাত ১১টা ৪০ নাগাদ হাসপাতালেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর।
শনিবার যোগী আদিত্যনাথ বলেন যে তিনি "ওই মহিলার মৃত্যুর খবর শুনে অত্যন্ত মর্মাহত"। "এই মামলাটির দ্রুত বিচারের লক্ষ্যে ফাস্ট ট্র্যাক আদালতে শুনানি করা হবে এবং দোষীদের কঠোরতম শাস্তি দেওয়া হবে", জানান উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ।
মারা যাওয়ার আগে ওই মহিলা পুলিশকে জানান যে উন্নাওয়ে তাঁর গ্রামের কাছেই ধর্ষণে অভিযুক্ত ২ ব্যক্তি সহ মোট ৫ জন তাঁকে আক্রমণ করে। প্রথমে তাঁকে প্রচণ্ড মারধর করে তাঁরা, এমনকি ছুরির ঘায়ে ঘায়েল করারও চেষ্টা করা হয় তাঁকে। পরে তাঁর গায়ে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করে দুষ্কৃতীরা। জানা গেছে, ওই ধর্ষিতা তাঁর দায়ের করা ধর্ষণের মামলার শুনানির জন্য়েই সেই দিন আদালতে যাচ্ছিলেন। তখনই তাঁকে রেলস্টেশনের কাছে ঘিরে ফেলে ওই হামলা চালায় ৫ জন।
উন্নাওয়ের ধর্ষিতা তরুণীর গায়ে আগুন দিল অভিযুক্তরা, আকাশপথে আনা হল দিল্লিতে
তবে নির্যাতিতা মারাত্মক ভাবে পুড়ে যাওয়া সত্ত্বেও হাসপাতালে নেওয়ার সময় পুরোপুরি সচেতন ছিলেন, সেখানেই তিনি পাঁচজন আক্রমণকারীকে শনাক্ত করে পুলিশকে একটি বিবৃতি দেন। যদিও পরে দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর।
ওই তরুণীর দেহ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হয়েছে যেখানে তাঁর দেহের ময়নাতদন্ত করা হবে।ময়নাতদন্তের পরে তাঁর মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। পুলিশ ময়না তদন্তের রিপোর্ট দেবে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।
ধর্ষিতার গায়ে আগুন লাগিয়ে প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা, মারা গেলেন উন্নাওয়ের নিগৃহীতা
"আমি সরকার ও কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কেবলমাত্র এটাই চাই যে হয় দোষীদের ফাঁসি দেওয়া হোক অথবা তাঁদের ঠিক হায়দরাবাদের এনকাউন্টারের মতো গুলি করে হত্যা করা হোকI আমি লোভী নই। আমি কোনও কিছু চাই না, বাড়ি তৈরি করতে চাই না। আমি শুধু চাই ওদের শাস্তি হোক", বলেন মৃত তরুণীর বাবা ।সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে নিগৃহীতার ভাই বলেন যে তাঁর বোন মৃত্যুর আগে তাঁকে বলেন যে ওই ৫ জনকে মৃত দেখতে চান তিনি।
৫ হামলাকারীদের মধ্যে ছিল ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত শিবম ত্রিবেদীও, যাঁকে পাঁচ দিন আগে এই মামলায় জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়। পাশাপাশি ধর্ষণের আরেক অভিযুক্ত শুভম ত্রিবেদীও ওই হামলাকারীদের মধ্যে ছিল বলে জানা গেছে। ৫ জন হামলাকারীকেই তাঁদের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
দেখে নিন এই ভিডিও: