Enforcement Directorate: ২৫,০০০ কোটি টাকার আর্থিক দুর্নীতিতে নাম জড়ায় শরদ পাওয়ারের
মুম্বই: "এখুনি আপনার আসার প্রয়োজন নেই, দরকার হলে আমরা আপনাকে ডেকে নেবো" ঠিক এই ভাষাতেই চিঠি লিখে এনসিপি নেতা শরদ পাওয়ারকে জানাল ইডি। তাঁর বিরুদ্ধে অর্থ তছরুপের মতো অভিযোগ ওঠার পর ওই রাজনীতিবিদ জানান যে তিনি আজ (শুক্রবার) এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ED) সামনে হাজিরা দেবেন। এনসিপি প্রধান (Sharad Pawar) বলেন যে রাজ্যে আগামী মাসের নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ার আগে তিনি নিজেই তদন্ত সংস্থায় (Enforcement Directorate) যাবেন। কিন্তু পাওয়ারের এই প্রস্তাবের পরেই ইডি জানায় এখনি তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় না তাঁরা। পাওয়ারের প্রত্যাশিত সফরের ঠিক কয়েক ঘণ্টা আগে একটি চিঠিতে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টর তাঁকে জানায় যে "তার অফিসে আসার দরকার নেই" । তদন্ত সংস্থা আরও জানায় যে ভবিষ্যতে যদি কোনও প্রয়োজন হয়, "আমরা আপনাকে জানাবো"। এরপরেই শরদ পাওয়ার জানান, আইন শৃঙ্খলা রক্ষার্থে এবং ইডির চিঠির ভিত্তিতে তিনি আজ (শুক্রবার) এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট কার্যালয়ে যাচ্ছেন না।
এদিকে শরদ পাওয়ারের বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপের অভিযোগ ওঠার পরেই প্রতিবাদে ফুঁসে ওঠে তাঁর দল এনসিপির কর্মী সমর্থকরা। এনসিপির এই বিক্ষোভের মধ্যে শরদ পাওয়ার ইডি অফিসে হাজিরা দিতে আসতে পারেন এই আভাস পেয়ে ওই এলাকার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছিল এবং দক্ষিণ মুম্বইয়ের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরটের কার্যালয়ের চারদিকে কোনও বড় সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। জানা যায় শরদ পাওয়ার এনসিপি কার্যালয়েও যাবেন।
পাকিস্তানিরা ভারতীয়দের আত্মীয় ভাবে, দাবি শরদ পাওয়ারের
শরদ পাওয়ারের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ ওঠে যে মহারাষ্ট্র রাজ্য সমবায় ব্যাংক কর্তৃক অবৈধভাবে ২৫,০০০কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত তিনি। যদিও পুলিশের কাছে দায়ের হওয়া এফআইআর তালিকায় তাঁর নাম ছিল না।
ইডি-র অবশ্য দাবি, বম্বে হাইকোর্টের নির্দেশে মহারাষ্ট্র পুলিশের আর্থিক অপরাধ দমন শাখা প্রথম মামলা করেছে। তার ভিত্তিতেই ইডি আর্থিক নয়ছয় প্রতিরোধ আইনে মামলা করে তদন্ত শুরু করল। ইডি-র অভিযোগ, ওই সমবায় ব্যাঙ্ক থেকে চিনিকলগুলিকে কোটি কোটি টাকার ঋণ দেওয়া হয়েছিল। যাঁদের ওই ঋণ দেওয়া হয়েছিল, তাঁদের আবার চিনিকলগুলির মালিকের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে। চিনিকলগুলি লোকসানে চলতে থাকায় সেগুলি অনেক কম দামে বিক্রি করে দেওয়া হয়। তাতে যাঁরা কিনেছেন, তাঁদেরই লাভ হয়। তাঁদের সঙ্গে আবার ওই সমবায় ব্যাঙ্কের ডিরেক্টরদের পারিবারিক ও রাজনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। ইডি সূত্রের খবর, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আনন্দরাও আদসুল, জয়ন্ত পাটিল, শিবাজি রাও নালভাডের মতো মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক নেতাদের আত্মীয়রাই এই চিনিকলগুলি কিনে নিয়েছেন। ব্যাংকটি মূলত এনসিপি নেতাদের মাধ্যমেই পরিচালিত হলেও, শরদ পাওয়ার সেই নেতাদের তালিকার মধ্যে নেই।
Amit Shah: মহারাষ্ট্রে বিজেপি সভাপতি, বিঁধলেন শরদ পাওয়ার ও পৃথ্বীরাজকে
আগামী ২১ অক্টোবর মহারাষ্ট্র বিধানসভার নির্বাচন। তার আগে এই মামলা দিয়ে তাঁদের উপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে বলেসরব হন পাওয়ার। সাংবাদিক বৈঠকে এনসিপি প্রধান বলেন, ‘‘ইডির মামলা করার সময়টা তাৎপর্যপূর্ণ। ভোট এসে গিয়েছে। তার ঠিক আগেই মামলা করা হল।...তবে সংবিধানে বিশ্বাস রাখি। তদন্তে সহযোগিতা করব। তদন্তকারী সংস্থার অভিযোগ নিয়ে আমার কাছে যা তথ্য রয়েছে, জানিয়ে আসব।'
এদিকে কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধি শুক্রবার শরদ পাওয়ারের সমর্থনে বলেন যে, ২১ অক্টোবর মহারাষ্ট্র নির্বাচনের ঠিক আগে একটি "প্রতিবাদী সরকার"-এর "সুবিধাবাদী রাজনীতির" শিকার করতেই এই মামলায় শরদ পাওয়ারের নাম জড়ানো হয়েছে।
দেখুন সেরা খবর: