General elections 2019: মমতা বন্দ্যোপাধায়ের ব্যক্তিগত আক্রমণের নিশানায় অধীর চৌধুরী
কলকাতা: রাজনীতিতে ব্যক্তিগত বিষয় টেনে এনে কুৎসা রটানোর অভ্যাস প্রাচীন। পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলাতে এবার কুৎসিত ব্যক্তিগত আক্রমণের মধ্যে দিয়েই চলছে রাজনৈতিক খেলা। গত তিন দিনে জেলায় কমপক্ষে চারটি বৈঠক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Chief Minister Mamata Banerjee), কংগ্রেসের সংসদ সদস্য (Congress parliamentarian) ও বহরমপুরের প্রার্থী অধীর চৌধুরীকে (candidate from Berhampore, Adhir Chaudhury) ব্যক্তিগত হামলা করে নেত্রী বলেছেন, “নিজের নির্বাচনী এফিডেভিটে প্রথম পক্ষের স্ত্রীর নাম উল্লেখ করেননি অধীর।" বুধবার কান্দিতে এক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কেন তিনি তাঁর প্রয়াত স্ত্রীকে স্বীকৃতি দিচ্ছেন না? এখন তিনি যা যা করছেন তা নিয়ে আমার কিছুই বলার নেই, কিন্তু কেন নিজের প্রথম স্ত্রীর নাম এফিডেভিটে রইবে না? এটা কি সত্য লুকোনোর ঘটনাগুলির সঙ্গে এক নয়?”
মমতার ‘বায়োপিকের' বিষয়বস্তু খতিয়ে দেখার দাবি বিজেপির
অধীর চৌধুরীও থেমে নেই। পালটা আক্রমণে বহরমপুরের চারবারের সাংসদ ও মুর্শিদাবাদ কংগ্রেসের মুখ অধীর বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমার বিরুদ্ধে রাজনৈতিকভাবে কিছু বলার আর বাকি নেই। তাই তিনি ব্যক্তিগত লড়াইয়ে নামছেন। ব্যক্তিগত আক্রমণে এই মুর্শিদাবাদ জেলায় তৃণমূল কোনও লাভ করতে পারবে না।”
মালদা জেলার মতোই মুর্শিদাবাদেও গত ১৫-২০ বছর ধরে খাতা খুলতেই পারেনি তৃণমূল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর দলেই অন্যতম সফল সৈনিক শুভেন্দু অধিকারীকে (Subhendu Adhikari) তিনটি লোকসভা আসন সম্বলিত এই জেলার দায়িত্ব দেন।
গত বছর পঞ্চায়েত নির্বাচনে শুভেন্দু অধিকারী অবশ্য বেশ কিছু সাফল্য অর্জন করেছিলেন এবং কংগ্রেসের বহু কর্মী সেই সময় তৃণমূলে যোগ দেন। এইবারেও এই জেলায় নিজেদের আধিপত্য স্থাপনে মরিয়া শুভেন্দু অধিকারী।
জঙ্গিপুর লোকসভা আসনকে নজরে রেখেছে তৃণমূল। কংগ্রেসের সাংসদ তথা প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির পুত্র অভিজিৎ মুখার্জী (Congress parliamentarian Abhijit Mukherjee) এই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। গত নির্বাচনে তিনি ৮ হাজার ভোটের ব্যবধানে জিতেছিলেন।
লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় পর্যায়ের ভোট আজ, রইল ১০ টি তথ্য
অভিজিৎ মুখার্জী ও অধীর চৌধুরী দু'জনকে আক্রমণ করার জন্যই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপির মতাদর্শিক পরামর্শদাতা রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘকে (আরএসএস) সামনে নিয়ে আসেন। মমতা বলেন, “প্রণব মুখার্জি (former President Pranab Mukherjee) আরএসএস সদর দফতরে যেতেন এবং এখন আরএসএস প্রচারকরা তাঁর পুত্রকে জঙ্গিপুরে নির্বাচনে জেতাতে চেষ্টা করছেন। প্রচারকরা জনগণকে টাকা দিচ্ছে। তাঁদের থেকে সাবধান!”
যদিও অভিজিৎ মুখার্জীর বাবা ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠই ছিলেন। তিনি বলেন, “এই আরএসএস ধারণাটা উনি (মমতা) কোত্থেকে পেয়েছেন তা আমি জানি না। হয়তো তিনি কিছু জানেন যা আমি জানি না। আমার দল কখনোই বিজেপি সরকারের সাথে যোগ দেয় নি।"
মুর্শিদাবাদ বরাবরই একটি সংখ্যালঘু আধিপত্য জেলা। তৃণমূল বিশেষ করে গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই জেলায় খাপ খুলতে পেরেছে সামান্য। এই দুই কংগ্রেসের প্রার্থীর সঙ্গে ডানপন্থীদের যোগাযোগ স্থাপনের কথা সামনে আনলে তাঁদের ভোট ব্যাঙ্ক নড়বড়ে হবে বলেই বিশ্বাস তৃণমূলের।
মুর্শিদাবাদ হল এই জেলার তৃতীয় আসন। বামফ্রন্ট ২০১৪ সালে এই আসনে জিতেছিল। বাম ও কংগ্রেসের জোট হওয়ায় এইবারে কংগ্রেসের এই আসনে প্রার্থী দেওয়ার কথাই ছিল না। কিন্তু রাজ্যে বাম কংগ্রেস জোট ভেস্তে যাওয়ায় দুই দলই নিজেদের প্রার্থী দিয়েছে এই আসনে। মুর্শিদাবাদে এবার চতুর্মুখী হবে নির্বাচনী লড়াই।