This Article is From Jul 24, 2019

‘৪০ বছরে যেন আরও জনপ্রিয়তা বাড়ল মহানায়কের’ শংকর

আমাদের সময়ে উত্তমবাবু মধ্যগগনে। ভুবনমোহিনী হাসি, চুলে ইউকে ছাঁট, ঘাড় বেঁকিয়ে তাকানো, ধুতি-শার্টের এক বাঙালি নায়ক তখন মুকুটহীন সম্রাট। ঘরের মেয়ে-বউদের যেন প্রাণের পুরুষ।

‘৪০ বছরে যেন আরও জনপ্রিয়তা বাড়ল মহানায়কের’ শংকর

'চৌরঙ্গী' ছবিতে 'শংকর' আর 'স্যাটা বোস'

কলকাতা:

আগে তিনি সবার প্রিয় সাহিত্যিক শংকর বা মণিশংকর মুখোপাধ্যায় (Mani Shankar Mukherjee)। তারপর কলকাতার শেরিফ। শংকরের বিখ্যাত উপন্যাস 'চৌরঙ্গী' (Chowranghee) নিয়ে ১৯৬৮ সালে ছবি তৈরি করেছিলেন পরিচালক পিনাকী ভূষণ মুখোপাধ্যায়। সেই ছবিতে স্যাটা বোসের চরিত্রে আমরা উত্তমকুমারকে (Mahanayak Uttam Kumar) পেয়েছি। শংকরের চোখে স্যাটা বোস কেমন? এনডিটিভি-কে জানালেন কলকাতার শেরিফ---

১৯২৬-এর ৩ সেপ্টেম্বর জন্ম। চলে গেছেন ১৯৮০ সালের আজকের দিনে। ৫৪ বছরের জীবদ্দশায় একজন অভিনেতা কোন পর্যায়ে অভিনয় করলে চলে যাওয়ার ৪০ বছর পরেও সবাই তাঁকে স্মরণ করে? সেটা একমাত্র দেখিয়ে গেছেন মহানায়ক উত্তমকুমার। আমাদের সময়ে উত্তমবাবু মধ্যগগনে। ভুবনমোহিনী হাসি, চুলে ইউকে ছাঁট, ঘাড় বেঁকিয়ে তাকানো, ধুতি-শার্টের পুরোদস্তুর এক বাঙালি বাংলা ছবিতে তখন মুকুটহীন সম্রাট। ঘরের মেয়ে-বউদের যেন প্রাণের পুরুষ। তাঁকেই বাছা হল আমার চৌরঙ্গী ছবির স্যাটা বোস বা সত্যসুন্দর বোসের চরিত্রে।

‘মৃদু ধমকে মহানায়ক বলেছিলেন, যা সহ্য হয় না তা খাওয়া কেন!' লিলি চক্রবর্তী

জানি, আপনারা সবাই পড়েছেন চৌরঙ্গী। তবু বলার লোভ সামলাতে পারছি না। আমি, অর্থাৎ লেখক শংকর এই উপন্যাসেও শংকর হিসেবেই উপস্থিত। তাঁর চোখ দিয়ে দেখা স্যাটা বোস কতখানি মানবিক এবং আবেদনে জারানো---সেটা উপন্যাস পড়লেই বুঝবেন। কলকাতার একটি হোটেল নিয়ে লিখতে বসলে অনেক চরিত্র আসবেই। লেখকের কাজ সব চরিত্রকেই দরদ দিয়ে ফুটিয়ে তোলা। তার মধ্যেও আমার প্রিয় চরিত্রগুলির মধ্যে একজন স্যাটা বোস।

উত্তমকুমার যখন সেই চরিত্র নিজের মধ্যে ধারণ করলেন, বইয়ের পাতা থেকে উঠে এসে স্যাটা বোস যেন রক্ত-মাংসের হয়ে উঠল। ধুতি-পাঞ্জাবি বা ধুতি-শার্ট পড়া উত্তম এই চরিত্রের দাবিতে সুটেড-বুটেড হয়ে দস্তুরমতো সাহেবি কেতার মানুষ। পাশাপাশি, হোটেলের সফিসটিকেটেড উচ্চারণ ঠোঁটের ডগায় আনলেন নিখুঁত ভাবে।

a1jrq58o

জানেন তো, লেখক-সাহিত্যিকদের কাছে তাঁর সৃষ্টি কন্যাসম। তাই তাঁকে যখন কেউ চায়, ভয় লাগে মেয়ের দেখভাল ঠিকমতো হবে তো? ১৯৬৮ সালে পরিচালক পিনাকী ভূষণ মুখোপাধ্যায় যখন উপন্যাসটি চাইলেন আমার থেকে, একটু ভয় লেগেছিল বইকি। পরে দেখলাম, যা হয়েছে ভালোই হয়েছে। শুটিংয়ের সময় গেছিলাম দেখতে। দেখেছি, উত্তমকুমার রোজ কীভাবে স্যাটা বোস হয়ে উঠেছেন।

‘স্কুলের টিচাররা পরীক্ষার আগে প্রশ্ন জানিয়ে দিতেন': গৌরব চট্টোপাধ্যায়

আর সেই জন্যেই শংকরের চৌরঙ্গীর অন্যান্য চরিত্র-র মধ্যে স্যাটা বোস দর্শকের অনেক বুকের কাছের। এই প্রতিভার জোরেই  চলে যাওয়ার ৪০ বছর পরেও মহানায়ক মধুমোত্তম-পুরুষোত্তম।

অনুলিখন: উপালি মুখোপাধ্যায়

.