দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল উত্তপ্ত সংশোধিত Citizenship Act-এর বিরুদ্ধে। জায়গায় জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে সহিংস আন্দোলন। এই অবস্থায় অসম, মেঘালয়, গুয়াহাটি সহ উত্তর-পূর্ব ভারত ভ্রমণে "exercise caution" জারি করল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া এই সমস্ত অঞ্চলে আপাতত পা না রাখার পরামর্শই দেওয়া হল প্রবাসী ভারতীয় এবং মার্কিন নাগরিকদের।
“আমরা শান্তির পথে”, নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদ নিয়ে বললেন অসমের ডিজি
বৃহস্পতি রাতে নাগরিক বিলে রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের পরেই দেশের আইনে পরিণত হয়েছে এই বিল। তারপর থেকেই হিংসাত্মক কার্যকলাপ ক্রমশ বেড়েছে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে, খবর এমনটাই। প্রতিবাদের আগুনে বেশি জ্বলছে অসম এবং ত্রিপুরা। গুয়াহাটিতে অনির্দিষ্টকালের কারফিউ জারি হয়েছে। স্থগিত রাখা হয়েছে মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা। এই পরিস্থিতিতে এই সমস্ত অঞ্চলে ভ্রমণের সময় গাড়িতে ভাঙচুর চালানো হতে পারে যেকোনও সময়। তাই আপাত স্পর্শকাতর অঞ্চলগুলিতে পা না রাখার পরামর্শই দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের উপদেষ্টা। একই মত মার্কিনি পরামর্শদাতার। তিনিও জানিয়েছেন, এই সময় উত্তর-পূর্ব ভারতের অগ্নিগর্ভ পরিবেশের মধ্যে পা না রাখাই শ্রেয়।
প্রসঙ্গত, ক্ষমতাসীন বিজেপি চলতি সপ্তাহের শুরুতে বিতর্কিত নাগরিকত্ব বিল চাপিয়ে দেয় দেশের উত্তর-পূর্ব অংশে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গুয়াহাটি। বহু নাগরিক এই আইনের ফলে হারিয়েছেন তাঁদের দীর্ঘদিনের নাগরিকত্ব। ফলে, বিক্ষোভের আঁচে পুড়েছে বহু সরকারি সম্পত্তি, গাড়ি। মশাল মিছিল করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন হাজার হাজার সাধারণ মানুষ। কারফিউ করে প্রতিবাদে পথে নেমেছেন অঞ্চলবাসীরা। বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন দু'জন বিক্ষোভকারী।
নয়া নাগরিকত্ব আইন “মৌলিকভাবে পক্ষপাতদুষ্ট”: রাষ্ট্রসংঘের মানবধিকার কমিশন
ভারতের এই অশান্ত পরিবেশ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মহলও। শুক্রবার বাংলাদেশের যুগ্ম কমিশনারের গাড়িতে ভাঙচুর চালানোর খবর প্রকাশ্যে আসার পরেই শেষ মুহুর্তে ভারত সফর বাতিল করেন দু'জন বাংলাদেশি নাগরিক। আগামী সপ্তাহে গুয়াহাটিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে তাঁর সম্মেলন স্থগিত রাখছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে-ও। জাতিসংঘের মানবাধিকার দফতরও দাবি করেছে, দেশ থেকে মুসলিম নাগরিকদের সরাতে ভারতের এই নয়া নাগরিকত্ব আইন যথেষ্টই "বৈষম্যমূলক"।