This Article is From Mar 16, 2020

করোনা ভয়ে ধুঁকছে সোনাগাছি, মাথায় হাত যৌনকর্মীদের

আতঙ্কের চোটে একসপ্তাহের মধ্যে খাঁ খাঁ করছে কলকাতার সবচেয়ে বড় নিষিদ্ধপল্লি সোনাগাছি। প্রভাব পড়েছে বউবাজার, কালীঘাট, খিদিরপুরেও।

করোনা ভয়ে ধুঁকছে সোনাগাছি, মাথায় হাত যৌনকর্মীদের

যৌনপল্লিতেও করোনা আতঙ্ক

হাইলাইটস

  • খদ্দের নেই সোনাগাছিতেও
  • করনা সংক্রমণ ঠেকাতে বৈঠক দুর্বার মহিলা সমন্বয় সমিতির
  • ব্যবসায় মন্দা একসপ্তাহ ধরে
কলকাতা:

রাত বাড়লেই রূপ খোলে এই এলাকার। আণাগোণা বাড়ে খদ্দেরের। ভিড় জমে নানা বয়সী যৌনকর্মীদের (Sex Worker)। সেখানেও করাল ছায়া করোনার (Coronavirus)। আতঙ্কের চোটে একসপ্তাহের মধ্যে খাঁ খাঁ করছে কলকাতার সবচেয়ে বড় নিষিদ্ধপল্লি সোনাগাছি (Sonagachi)। প্রভাব পড়েছে বউবাজার, কালীঘাট, খিদিরপুরেও। খদ্দেরের অভাবে ধুঁকছে ডোমজুর, কালনা, উলুবেড়িয়া, শ্যাওড়াফুলি, শান্তিপুর, দিনহাটার যৌনপল্লিও। মাথায় হাত পড়েছে দেহোপসারিণীদের। যাঁরা বাইরে থেকে এই এলাকায় কাজ করতে আসেন, ভাটা তাঁদের উপস্থিতিতেও। পরিস্থিতির মোকাবিলায় এবং কর্মী ও সমাজে সচেতনতার বার্তা ছড়ায়ে দুপুর ২টোয় এক বৈঠকের আয়োজন করে দুর্বার মহিলা সমন্বয় কমিটি। উপস্থিত ছিলেন সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ডা. স্মরজিৎ জানা, সভানেত্রী বিশাখা, সক্রিয় সদস্য ও উপদেষ্টা মহাশ্বেতা মুখোপাধ্যায় সহ বহু যৌন কর্মী।

আমিষ খেলে করোনা ভাইরাস ছড়ায়, এই ধারণা ভুল: এইমসের চিকিৎসক

কবে থেকে নিস্তেজ নিশিনিলয়? মুঠোফোনে মহাশ্বেতার কাছে প্রশ্ন রাখতেই জানা গেল, বেশি দিন নয়, গত একসপ্তাহ ধরে ছড়িয়েছে এই আতঙ্ক। যত দিন যাচ্ছে ততই বাড়ছে। ব্যবসায় মন্দার ফলে ম্লান নিশিপদ্মরাও। কাস্টমাররা যেমন আসতে ভয় পাচ্ছেন তেমনি প্রায় গৃহবন্দি মেয়েরাও। সংক্রমণের ভয়ে তাঁরা কাস্টমারদের যেমন ডাকতে ভয় পাচ্ছেন তেমনি কাজের অভাবে বাড়ি বসে যেতে হয়েছে। এই ছবি শুধুই কলকাতার নয়, শহরতলি, জেলাতেও একই অবস্থা।

সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা এবং উপদেষ্টা ডা. স্মরজিৎ জানা জানিয়েছেন, 'শুধু বিশ্ব বা আমাদের দেশ নয়, করোনা আতঙ্ক ছড়িয়ে আমাদের অঞ্চলগুলিতেও। কারণ, এই ব্যবসায় স্পর্শের একটি বড় ভূমিকা রয়েছে। এবং যেহেতু করোনা স্পর্শের মাধ্যমে ছড়াচ্ছে তাই উভয় পক্ষই ভয় পাচ্ছেন। সংক্রমণ ঠেকাতে কী পদক্ষেপ নিচ্ছে কমিটি? উত্তরে ডা. জানার জবাব, 'মেয়েদের আমরা বলে দিয়েছি, যিনি সর্দি, কাশি, হাঁচি, ঠাণ্ডা লাগা বা জ্বরে ভুগছেন তাঁকে যেন তাঁরা বাড়িতে ঢুকতে না দেন। সহবাসের পর ডেটল, সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নেওয়ার কথা বলা হচ্ছে সবাইকে। এখন মাস্ক আর স্যানিটাইজার বাজারে দুর্মূল্য। তাই আপাতত ডেটল,স্যাভলন, সাবানেই ভরসা করতে হচ্ছে। চেষ্টা করছি যাতে এগুলোর ব্যবস্থাও করতে পারি। পাশাপাশি, নিজেদেরও এমন কোনও উপসর্গ দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে আমাদের জানাতে বলেছি। আমরা তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা করব। একই কথা বলা হচ্ছে মায়েদের সন্তানের ক্ষেত্রেও। ওরা যাতে সংক্রমণে আক্রান্ত না হয় সেদিকে মায়েদের পাশাপাশি কড়া নজর রাখছি আমরাও। তবে এখনও পর্যন্ত আক্রান্তের কোনও খবর নেই।'

করোনা সতর্কতা: ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ খড়গপুর আইআইটি ও শিবপুর আইআই(ই)এসটি

দুর্বার মহিলা সমন্বয় কমিটির সভানেত্রী বিশাখার কথায়, আমরা যেভাবে এইডস-এর প্রচার চালাই একই ভাবে এই সংক্রমণের প্রচারও করছি। প্রথম সংক্রমণ এড়াতে কন্ডোম ব্যবহারের নির্দেশ দিই। করোনা ঠেকাতে পরামর্শ মেয়ে এবং কাস্টমার উভয়কেই মাস্ক পড়তে হবে। হাত-পা ভালো করে পরিষ্কার করতে হবে। তবে এখন তো মাস্ক এবং স্যানিটাইজারের আকাল বাজারে।' সরকার সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছে? প্রত্যুত্তরে বিশাখা জানালেন, 'সরকার এখনও কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। তবে সকালেই খবর পেয়েছি, আসানসোল থেকে এক ব্যক্তি জানিয়েছেন, তিনি ১০ হাজার টাকা দেবেন প্রয়োজনীয় উপকরণ কিনতে। তাই দিয়ে যতটা হয় ব্যবস্থা করব আমরা। আমাদের আরও সাহায্যের প্রয়োজন। কারণ, এখানে প্রচুর লোকের আনাগোণা থাকে নিত্যদিন। এই ব্যবসার সঙ্গে বহু মানুষ জড়িয়ে। যদিও বর্তমানে তা কমে গেছে প্রায় পঞ্চাশ শতাংশ। তবে শুধুই যৌনকর্মী বা কাস্টমার নয়, সমাজের সমস্ত শ্রেণির মানুষের পাশেই রয়েছি আমরা। এর আগে ম্যালেরিয়া ঠেকাতেও আমরা নানা পদক্ষেপ নিয়েছিলাম। এবারেও তার অন্যথা হবে না। আজকেই কমিটি বৈঠক ডেকেছে। সেখানেই স্থির হবে পরবর্তী পদক্ষেপ কী নেওয়া হবে।'

.