This Article is From Apr 05, 2020

করোনা আতঙ্কের মাঝে রাজ্যে ফিরল ‘রাজনীতি’, শনিবারের তিন ঘটনায় মিলল ইঙ্গিত 

যেন ‘স্বাভাবিকতা’ ফিরল রাজ্যে। করোনা (Coronavirus) পরিস্থিতির মধ্যেও শনিবাসরীয় অন্তত তিনটি ঘটনা এই ‘স্বাভাবিকতা’-র দিকেই ইঙ্গিত দিচ্ছে।

করোনা আতঙ্কের মাঝে রাজ্যে ফিরল ‘রাজনীতি’, শনিবারের তিন ঘটনায় মিলল ইঙ্গিত 

গোটা দেশের মতো করোনা আতঙ্কে রয়েছে রাজ্যও।

হাইলাইটস

  • রাজ্যে করোনা আতঙ্কের মাঝেই দেখা মিলল রাজনীতির
  • করোনা আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা নিয়ে বিরোধীদের সঙ্গে বিতর্কে রাজ্য সরকার
  • অন্যান্য ঘটনাবলিও রাজ্যে চেনা রাজনীতির প্রত্যাবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে

শনিবার যেন ‘স্বাভাবিকতা' ফিরল রাজ্যে। আবারও চেনা রাজনীতির ছবি ফুটে উঠল করোনা (Coronavirus) পরিস্থিতির মধ্যেও। শনিবাসরীয় অন্তত তিনটি ঘটনা এই ‘স্বাভাবিকতা'-র দিকেই ইঙ্গিত দিচ্ছে। বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত (Ripuparna Sengupta) বিজেপি তথা প্রধানমন্ত্রীর (PM Modi) সমর্থনে বক্তব্য রাখলেন। রবিবার রাত ন'টায় প্রধানমন্ত্রীর মোমবাতি জ্বালানোর আর্জিকে সমর্থন করলেন তিনি। সেই ভিডিও নিজেদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে পোস্ট করেছে গেরুয়া শিবির। এদিকে শনিবার সন্ধ্যায় বীরভূমে এক স্থানীয় স্কুলের হোস্টেলে কোয়ারান্টাইন ক্যাম্প বানানো নিয়ে গ্রামবাসীদের সংঘর্ষে মৃত্যু হল এক ব্যক্তির। প্রাথমিক ভাবে সেটাই জানা গিয়েছিল। কিন্তু বীরভূম যেহেতু তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষের জন্যও পরিচিত, তাই মনে করা হচ্ছে এটা আসলে রাজনৈতিক সংঘর্ষ। পাশাপাশি শনিবারই বিরোধীরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করলেন রাজ্যে করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা এড়িয়ে যাওয়ার অভিযোগ জানিয়ে।

করোনা রুখতে কোয়ারান্টাইন ক্যাম্প করা নিয়ে সংঘর্ষ বীরভূমে, মৃত ১

করোনা সঙ্কটের মধ্যেই এই ভাবে রাজনৈতিক বিবাদের ঘটনাবলির প্রত্যাবর্তন পরিষ্কার ভাবে মনে করিয়ে দিচ্ছে আসন্ন পুরসভা নির্বাচনের কথা। এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে হওয়ার কথা ছিল পুর নির্বাচন। কিন্তু পরিস্থিতির প্রকোপে কবে নির্বাচন হবে তা বলা যাচ্ছে না। বিধানসভা নির্বাচন আর এক বছর দূরে। এই পরিস্থিতিতে পুর নির্বাচন যে বিধানসভা নির্বাচনের আগাম মাপকাঠি তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

গত কয়েক দি‌নে রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যায় পরিবর্তন লক্ষ করা গিয়েছে। কেন্দ্র ও রাজ্যের হিসেবের গরমিল তৈরি করেছে বিতর্ক। কেন হিসেব মিলছে না এই প্রশ্নের জবাবে রাজ্যের মুখ্য সচিব শনিবার সাংবাদিক সম্মেলনে জানান, ‘‘সকলের সব কিছু জানার দরকার নেই।'' তাঁর কাছে আরও জানতে চাওয়া হয়েছিল, কেন গত কয়েক দিন ধরে রাজ্যের বুলেটিন পাওয়া যাচ্ছে না।

কিং খানের প্রশংসায় পঞ্চমুখ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়; 'দিদি'কে বাংলায় টুইট করলেন শাহরুখ খান!

জবাবে মুখ্য সচিব বলেন, ‘‘মানুষের যা জানা দরকার সেই হিসেব আমরা দিয়েছি। আমরা কিছু লুকোচ্ছি না।''

কিন্তু বিরোধীরা সরব হয়েছেন সমালোচনায়। বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ সরকারকে আক্রমণ করে বলেন, ‘‘আমরা জানি ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের সময় কী হয়েছিল। সরকার হাসপাতালগুলিকে নির্দেশ দিয়েছিল, মৃত্যুর কারণ হিসেবে ‘ডেঙ্গু' কথাটা ‌না লেখার জন্য। সরকারি ও বেসরকারি চিকিৎসকদের সেটা মানতে জোর করা হয়েছিল।'' আর এক বিজেপি নেতা দেবজিৎ বলেন, ‘‘কাউকে বোকা বানানো যাবে না। আমি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বলতে চাই এটা ডেঙ্গু নয়। এটা করোনা এবং এখানে সংখ্যা লুকোলে তা মানুষের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে।''

গত বৃহস্পতিবার রাজ্য সরকারের মেডিক্যাল টাস্ক ফোর্স এক সাংবাদিক সম্মেলন করে। সেখানে শীর্ষস্থানীয় চিকিৎসকরা বলেন, রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৫৩। মৃত ৭। গত ২৪ ঘণ্টায় ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।

কিন্তু কয়েক ঘণ্টা পরে মুখ্য সচিব সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেন, আক্রান্তের সংখ্যা ৫৩ নয়, ৩৪। এবং মৃতের সংখ্যাও ৭ নয়, ৩। সরকারের মতে, বাকি চারজনের মৃত্যু করোনাতে হয়নি। তাঁরা ডায়াবেটিসের মতো অসুখে মারা গিয়েছেন।

শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেন, রাজ্যে সক্রিয় কেসের সংখ্যা ৩৮। চারজনের শরীরে নতুন করে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। কিন্তু সেদিনই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক জানায় রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৩-তে।

শনিবার মুখ্য সচিব জানিয়েছেন, করোনা আক্রান্তের সংখ্যাটা ৪৯। কিন্তু কেন্দ্র্ সেটা ৬৮ বলছে। এদিকে দৈনিক মেডিক্যাল বুলেটিন দু'দিন ধরে অদৃশ্য থাকার পর ফিরে এসেছে।। কিন্তু শনিবারের হিসেবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে এপ্রিল মাসে রাজ্যো কেউ করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যাননি।

এদিকে অভিন‌েত্র্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তর দু'টি ভিডিও বিজেপি তাদের হোয়াটসঅ্যাপ মিডিয়া গ্রুপে পোস্ট করেছে। ইংরেজি ও হিন্দি দু'টি ভাষাতে সেখানে পরিষ্কার ভাবে অভিনেত্রীকে জানাতে দেখা গিয়েছে যে তিনি প্রধানমন্ত্রীর রবিবার রাত ন'টায় আলো জ্বালানোর পরিকল্পনাকে পুরোপুরি সমর্থন করছেন। ভিডিওগুলি সত্যিই ঋতুপর্ণার কিনা সে বিষয়ে মেসেজ করা হলে তিনি কোনও উত্তর দেননি।

এরই মধ্যে শনিবার এক ৩৭ বছরের ব্যক্তির মৃত্যু হল বীরভূমের পাড়ুই ব্লকের তালিবপুর গ্রামে। বিজেপি-তৃণমূল সংঘর্ষের কারণে পাড়ুই এক পরিচিত নাম।

প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছিল স্থানীয় স্কুল হোস্টেলে কোয়ারান্টাইন ক্যাম্প করা নিয়েই সংঘর্ষ। গ্রামবাসীরা এই ক্যাম্প নিয়ে ভিন্ন মত পোষণ করেন। কেউ সমর্থন করেছিলেন। কেউ বিরোধিতা। শাসক দলের স্থানীয় নেতৃত্ব চেয়েছিল এই ক্যাম্প হোক। এরপরই সংঘর্ষ শুরু হয়। বোমাবাজি ও গুলি চলতে থাকে। মৃত্যু হয় একজনের।

.