রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে বৈঠকে বিরোধীদের নেতৃত্ব দেন সনিয়া গান্ধি
নয়াদিল্লি: নয়া নাগরিকত্ব আইন (New Citizenship Bill) নিয়ে দেশজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে, আইনটি প্রত্যাহার করার দাবিতে সোমবার কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধির (Sonia Gandhi) নেতৃত্বে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের (Ram Nath Kovind) দ্বারস্থ হল বিরোধীরা। তাদের তরফে জানানো হয়েছে, আইনটি প্রত্যাহার না করলে বিক্ষোভ আরও ছড়িয়ে পড়তে পারে। পাশাপাশি এও জানানো হয়েছে, তাদের আশ্বাস্ত করেছেন রাষ্ট্রপতি। পুলিশ যেভাবে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে পদক্ষেপ করেছে, তার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে সনিয়া গান্ধি বলেন, “মানুষের কন্ঠরোধ করার ক্ষেত্রে কোনও সহানুভুতি নেই মোদি সরকারের...আমাদের কাছে উদাহরণ হিসেবে রয়েছে জামিয়া মহিলা হোস্টেলে ঘটনা, সেখানে তাঁদের বের করে মারধর করা হয়েছে”।
সনিয়া গান্ধি বলেন, “উত্তর পূর্বের পরিস্থিতি, সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে, এমনকী, রাজধানীতেও ছড়িয়েছে, এটা খুবই গুরুতর পরিস্থিতি...আমরাদের ভয়, এটা আরও ছড়িয়ে পড়তে পারে। আমরা ক্ষুব্ধ যেভাবে পুলিশ শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে হস্তক্ষেপ করেছে তার ওপর”।
সোমবারই দিল্লির সিলামপুরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে বিক্ষোভকারীদের। ভিড় হঠাতে লাঠিচার্জের পাশাপাশি কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়ে পুলিশ, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে লাঠিচার্জের পাশাপাশি কাঁদানে গ্যাস ও ছোঁড়ে, পথচলতি বাস ও পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছোঁড়ার অভিযোগ ওঠে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে। একটি শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদও হতে চলেছে দিল্লির জামিয়া মিসিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ।
সোমবার জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি ব্যাপক আকার ধারণ করে। মিছিল আটকানোর চেষ্টা করলে, পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছোঁড়ার অভিযোগ ওঠে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে, জ্বালিয়ে দেওয়া হয় বাস ও বাইক। কোনও অনুমতি ছাড়াই বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢোকা ও পড়ুয়াদের আটক করার অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে, তারপরেই দেশজুড়ে প্রতিবাদ শুরু হয়।
সন্ধ্যায়, পুলিশের হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবি তোলে বিরোধীরা। কংগ্রেসের দাবি, বিজেপির নির্দেশ পালন করছে দিল্লি পুলিশ, কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলগুলিতে পুলিশ যে কেন্দ্রের অধীন তা উল্লেখ করে বিরোধীরা।
সংবাদমাধ্যমের সামনে উপস্থিত হয় কংগ্রেস, সিপিআই, সিপিআইএম, লালুপ্রসাদ যাদবের রাষ্ট্রীয় জনতা দল, এবং শরদ পাওয়ারের এনসিপি, তাঁরাও এদিন রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বলে জানান দলের নেতারা।
বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনরাই বিজয়ন এবং পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁদের রাজ্যে জাতীয় নাগরিকপঞ্জী এবং নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন কার্যকর হতে দেবেন না তাঁরা।
সোমবার, জাতীয় জনগণনাপঞ্জীর ওপর কাজ বন্ধ করে দেয় পশ্চিমবঙ্গ, ভবিষ্যতে যাকে কেন্দ্র করে তৈরি হত নাগরিক তালিকা। কেন্দ্রের তরফে বলা হয়েছে, নাগরিকত্ব আইন কার্যকর করার ক্ষেত্রে কোনও রাজ্যের মতামতের কোনও জায়গা নেই।
বিরোধীদের মত, জানায় যে, এই নাগরিকত্ব আইন সংবিধানে উল্লেখ্য সামত্যার অধিকার এবং দেশের ধর্মনিরপেক্ষতার মৌলিক নীতির পরিপন্থী।