বর্ষীয়ান আইনজীবী ও প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাম জেঠমালানি রবিবার সকালে তাঁর দিল্লির বাসভবনে প্রয়াত হলেন। (ফাইল)
নয়াদিল্লি: বর্ষীয়ান আইনজীবী ও প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাম জেঠমালানি (Ram Jethmalani) রবিবার সকালে তাঁর দিল্লির বাসভবনে প্রয়াত (Ram Jethmalani Dies) হলেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৫। সকাল ৭.৪৫ মিনিটে তাঁর দেহাবসান হয়েছে বলে সংবাদ সংস্থা্ পিটিআইকে জানিয়েছেন তাঁর পুত্র মহেশ জেঠমালানি। গত কয়েক মাস ধরেই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছিল বলে তিনি জানিয়েছেন। রাজ্যসভার ছ'বারের সদস্য রাম এনডিএ সরকারে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর দায়িত্ব সামলেছেন। ১৯৯৮ সালে বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ মন্ত্রিসভায় তিনি যোগ দেন। পরে ১৯৯৯ সালের অক্টোবরে আবারও মন্ত্রিসভায় যোগ দেন তিনি। ২০০০ সালের জুলাই মাসে তিনি অটলবিহারী বাজপেয়ী সরকার থেকে বেরিয়ে আসেন। তিনি বার কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ার সভাপতিও ছিলেন।
১৯২৩ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করার পর মাত্র ১৭ বছর বয়সে তিনি আইনের ডিগ্রি অর্জন করেন। দেশভাগ হওয়ার আগে পর্যন্ত করাচিতে প্র্যাকটিস করেন তিনি। তাঁর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে তেমনটাই জানা যায়। দেশভাগের পর তিনি মুম্বই (তৎকালীন বম্বে) চলে আসেন একজন শরণার্থী হিসেবে। এরপর পরিবারকে নিয়ে নতুন করে শুরু হয় জীবন।
বহু আলোড়ন ফেলে দেওয়া মামলায় তিনি আইনজীবী হিসেবে অংশ নিয়েছিলেন। এর মধ্যে রয়েছে আরজেডি মুখ্য লালুপ্রসাদ যাদব, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের মতো বহু শীর্ষ রাজনীতিকের দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলাও।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি টুইট করে জানিয়েছেন, ‘‘ভারত একজন ব্যতিক্রমী আইনজীবীকে হারাল এবং একজন কিংবদন্তি ব্যক্তিকে যিনি আদালত ও সংসদ, দু'জায়গাতেই বিরাট অবদান রেখেছেন। তিনি রসিক, সাহসী ছিলেন এবং কখনও কোনও বিষয়ে নিজের মত প্রকাশ করতে ভয় পেতেন না।''
আর একটি টুইটে তিনি লেখেন, ‘‘জেঠমালানিজির আরও একটা গুণ হল তিনি মনের কথা বলার ক্ষমতা রাখতেন। এবং সেটা করতেন ভয় না পেয়ে। জরুরি অবস্থার কালো দিনগুলোতে ব্যক্তিস্বাধীনতার জন্য তাঁর লড়াই স্মরমীয় হয়ে থাকবে। দরিদ্র মানুষকে সাহায্য করা তাঁর চরিত্রের প্রাথমিক গুণ। ''
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এদিন সকালে তাঁর বাড়ি গিয়ে তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। তিনি টুইট করে জানা, ‘‘রাম জেঠমালানির প্রয়াণ গোটা দেশের আইন সমাজের কাছে অপূরণীয় ক্ষতি। আইন বিষয়ে তাঁর প্রগাঢ় জ্ঞানের জন্য চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন। তাঁর শোকতপ্ত পরিবারকে সান্ত্বনা জানাই। ওম শান্তি শান্তি শান্তি।''
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল একটি টুইট করে বর্ষীয়ান আইনজীবীকে তাঁর শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। তিনি লেখেন, ‘‘কিংবদন্তি আইনজীবী রাম জেঠমালানিজির প্রয়াণ সংবাদে অত্যন্ত দুঃখিত। একাই একজন প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বাধীনতা-পরবর্তী ভারতে ফৌজদারি আইনকে তিনি একটি আকার দেন। তাঁর কণ্ঠস্বর কখনও ম্লান হবে না এবং তাঁর নাম ভারতের আইন ইতিহাসে সোনার অক্ষরে লেখা থাকবে। আরআইপি রাম স্যার।''
কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদও টুইট করে তাঁর শ্রদ্ধার্ঘ্য জানিয়েছেন। তিনি লেখেন, ‘‘বর্ষীয়ান আইনজীবী ও প্রাক্তন আইনমন্ত্রী রাম জেঠমালানির প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করছি। তাঁর তেজস্বিতা, বাগ্মিতা, শক্তিশালী ওকালতি এবং আইনের অসাধারণ জ্ঞান আইনি পেশায় এক মূল্যবান উদাহরণ হয়ে থাকবে। আমার গভীর সমবেদনা জানাই।''