This Article is From Feb 15, 2019

"ওই এলাকায় ঘুরতে যাবেন না", পুলওয়ামা হানার আগেরদিন নাগরিকদের সতর্ক করেছিল আমেরিকা

জম্মু ও কাশ্মীরের পুলওয়ামা জেলার অবন্তীপুরা এলাকায় ২,৫০০ সিআরপিএফ জওয়ানের কনভয় আক্রমণ করে যে বিস্ফোরণটি ঘটানো হয়, তার শব্দ ১০-১২ কিলোমিটার দূর থেকেও শোনা গিয়েছে বলে জানালেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

কাশ্মীরে সন্ত্রাস নিয়ে আগেই সতর্কবাণী দিয়েছিল আমেরিকা

নিউ দিল্লি:

দেশের নাগরিকদের পাক-অধ্যুষিত কাশ্মীরে যাওয়ার ব্যাপারে পুনর্বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল আমেরিকা। প্রবল সন্ত্রাসবাদ এবং অস্ত্রব্যবসায়ীদের আখড়া হয়ে উঠেছে ওই এলাকা, এমনটা জানিয়েই বুধবার দিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা কমিটি একটি বিবৃতি জারি করেছিল। বৃহস্পতিবার পুলওয়ামায় জঙ্গিহানার ঠিক একদিন আগে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক থেকে এই কথাও জানানো হয়েছিল যে, জঙ্গি সংগঠনগুলি কাশ্মীরে একের পর এক বড় হানার ছক কষে চলেছে। তাই দেশের নাগরিকদের 'কাশ্মীর ভ্রমণ' নিয়ে সাবধান করে দিয়েছিল তারা। শুধু কাশ্মীরই নয়, বালোচিস্তান এবং পাখতুনখোয়াতে ভ্রমণের ব্যাপারেও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল আমেরিকা। সেখানে বলা হয়েছিল, জঙ্গি সংগঠনগুলি পাকিস্তানের বাজার, স্টেশন, হাসপাতাল, বিমানবন্দর, জনবহুল রাস্তা, ভ্রমণ স্থান, স্কুল, ধর্মীয় স্থানের মতো জায়গাকে তাদের আক্রমণের 'লক্ষ্য' করে তুলেছে। তাই এই মুহূর্তে সেখানে না যাওয়াই সব দিক থেকেই ভালো।

আমেরিকা আরও জানায়, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সীমান্ত এলাকা জুড়ে প্রবল অশান্তি চলছে। প্রায় রোজই গোলাগুলি চলছে দুই দেশের নিরাপত্তাবাহিনীর মধ্যে। 

স্মরণকালের মধ্যে সেনাবাহিনীর ওপর সবথেকে ভয়াবহ আক্রমণের ঘটনাটি ঘটে গেল বৃহস্পতিবার। জম্মু ও কাশ্মীরের পুলওয়ামা জেলায় সিআরপিএফের বাসে ভয়াবহ জঙ্গিহানার ফলে শহিদ হলেন প্রায় ৪০ জনের কাছাকাছি সেনা। আহতের পরিমাণও প্রায় সমান। শ্রীনগরের সেনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে তাদের। অবন্তীপুরায় এই হামলার দায় স্বীকার করেছে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদ। এই হামলার তীব্র নিন্দা করেন প্রায় সমস্ত রাজনৈতিক দলের নেতারাই। কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী বলেন, অত্যন্ত কাপুরুষের মতো কাজ এটা। এতজন সেনার শহীদ হয়ে যাওয়া মেনে যাওয়া না। আমি তাঁদের আত্মার শান্তি কামনা করি। তাঁদের পরিবারকে সমবেদনা জানাই। আহতদেরও দ্রুত আরোগ্য কামনা করি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অরুণ জেটলি টুইট করে বলেন, যারা এই অপরাধ ঘটাল, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে। এমন শাস্তি, যা ওরা কখনও ভুলতে পারবে না। এর আগে ২০১৬ সালে সেপ্টেম্বর মাসে উরির সেনা ছাউনিতে আক্রমণ করা হয়েছিল। সেই সময় শহিদ হন ১৯ জন সেনা। আজকের হামলায় এখনও পর্যন্ত সেনাদের মৃত্যুর সংখ্যা সেই হামলাকেও ছাড়িয়ে গিয়েছে।

বৃহস্পতিবার জম্মু ও কাশ্মীরের পুলওয়ামা জেলার অবন্তীপুরা এলাকায় ২,৫০০ সিআরপিএফ জওয়ানের কনভয় আক্রমণ করে যে বিস্ফোরণটি ঘটানো হয়, তার শব্দ ১০-১২ কিলোমিটার দূর থেকেও শোনা গিয়েছে বলে জানালেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সংবাদসংস্থা পিটিআইকে ওই বাসিন্দারা জানান এই ভয়াবহ বিস্ফোরণে কমপক্ষে ৪০ জন জওয়ান শহিদ হয়েছেন। বহু জওয়ান গুরুতর আহত অবস্থায় শ্রীনগরের সেনা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। একটি ,মহিন্দ্রা স্করপিও নিয়ে জইশ-ই-মহম্মদের জঙ্গি আদিল আহমেদ দার হানা দেয় সেনাদের গাড়িতে। ওই স্করপিওটিতে ৩৫০ কেজি বিস্ফোরক ভরা ছিল।  সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এই কথা জানানো হয়।পুলওয়ামা জেলার কাকাপোরার বাসিন্দা আদিল আহমেদ দার গতবছরই এই সন্ত্রাসবাদী সংগঠনে নিজের নাম লেখায়। তার অন্য দুটি নাম হল ' আদিল আহমেদ গাড়ি টকরানেওয়ালা' এবং 'ওয়াকস কম্যান্ডো অব গুন্দিবাগ'। 

এই ভয়াবহ হানার পরেই তার ছবি এবং ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত হতে থাকে। জওয়ানদের কনভয়ে মোট ৭৮'টি গাড়ি ছিল। জম্মু-কাশ্মীর জাতীয় সড়কের ওপর দিয়ে যাচ্ছিল কনভয়টি।  শুক্রবার শ্রীনগর যাবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। এই ভয়াবহ জঙ্গিহানার তদন্ত একযোগে শুরু করেছে এনআইএ এবং জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ।

.