This Article is From Feb 18, 2020

চলে গেলেন তাপস পাল, ৬১-তে থামল 'দাদার কীর্তি'

চলে গেলে তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ-অভিনেতা তাপস পাল। বয়স হয়েছিল ৬১ বছর।

চলে গেলেন তাপস পাল, ৬১-তে থামল 'দাদার কীর্তি'

ফুরিয়ে গেল 'দাদার কীর্তি'

কলকাতা:

চলে গেলে তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ-অভিনেতা তাপস পাল (Tapas Pal)। বয়স হয়েছিল ৬১ বছর। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মঙ্গলবার ভোরে মুম্বইয়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিরদিনের মতো থামল 'দাদার কীর্তি'। খবর, ১ ফেব্রুয়ারি মুম্বই বিমানবন্দরেই বুকে ব্যথা অনুভব করেন সাংসদ। সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে ভর্তি করা হয় সেখানকার একটি হাসপাতালে। বেশি কিছুদিন ভেন্টিলেশনে থাকার পর দিন দুই আগে সুস্থ বোধ করায় ভেন্টিলেশন থেকে বের করে আনা হয় তাঁকে। মঙ্গলবার ভোর রাতে আচমকা হৃদরোগের আক্রমণ। তারপরেই ভোর সাড়ে তিনটেয় তাপস পালের 'রাত পোহালো'। ১৯৮০ সালের প্রথম ছবিতে 'কেদার' তাপস যে বসন্তকে প্রেমের দূত করে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন বাঙালির মনে, ২০২০-তে সেই ঋতুরাজের ছোঁয়া পাওয়ার আগেই 'নেই' তিনি!

প্রথম জুটি সৌমিত্র-গার্গী, নয়া সমীকরণ ‘Sraboner Dhara'-য়?

গত দু'বছর ধরে হৃদরোগে ভুগছিলেন অভিনেতা। বেশ কয়েকবার চিকিৎসার তাঁকে ভর্তি করা হয়েছিল হাসপাতালে। কৃষ্ণনগর থেকে দু'বার জেতা সাংসদ এবং আলিপুর থেকে নির্বাচিত হওয়া বিধাক তাপস ২০১৬-র জড়িয়ে পড়েন রোজ ভ্যালি চিট-ফান্ড কেলেঙ্কারিতে। পরে সিবিআই গ্রেফতারও করে তাঁকে। এরপরেই ছবির দুনিয়া থেকে সরে যান তিনি। গ্রেফতারির ১৩ মাস জামিনে মুক্ত হন তাপস।

বাংলা ছবিতে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত তাঁর ইমেজ পাশের বাড়ির ছেলে। চোখমুখের সারল্য, নিষ্পাপ হাসি দিয়ে তরুণ মজুমদারের 'দাদার কীর্তি' (Dadar Kirti) ছবিতে প্রথম অভিনয় করেই মন জিতেছিলেন আবালবৃদ্ধবণিতার। এই ছবি দিয়েই তাপস প্রথম জুটি বাঁধেন বাংলা ছবির সেই সময়ের জনপ্রিয় নায়িকা মহুয়া রায়চৌধুরীর সঙ্গে। এই জুটি একসময় হয়ে উঠেছিলেন দর্শকদের খুব বুকের কাছের। তাপস-মহুয়া অভিনীত 'সাহেব', 'পারাবত প্রিয়া', 'অনুরাগের ছোঁয়া', 'আশীর্বাদ' ছবিগুলি তাঁদের সময়ের ব্লকবাস্টার হিট।

Moview Review: জটিল ভাবনার সহজ প্রকাশ ‘অব্যক্ত'

সহজ অভিনয়ের জোরে ১৯৮৪-তে তিনি ডাক পেয়েছিলেন বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতেও। হীরেন নাগের ছবি 'অবোধ'-এ তাঁর বিপরীতে নায়িকা মাধুরী দীক্ষিত। বক্স অফিসে সেই ছবি ব্যর্থ হওয়ায় ১৯৮৫-তে ফের তরুণ মজুমদারের ছবি 'ভালোবাসা ভালোবাসা'-তে দেবশ্রীর সঙ্গে অভিনয় করে বাংলায় তাঁর রাজপাট আবারও দখল করেন। মুনমুন সেন, শতাব্দী রায়, ইন্দ্রাণী হালদার, দেবিকা মুখোপাধ্যায়, রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় হয়ে বাংলার প্রায় সমস্ত নায়িকার সঙ্গেই এরপর জুটি বেঁধে জনপ্রিয় ছবি উপহার দেন দর্শকদের। তপন সিংহ, তরুণ মজুমদার, অরবিন্দ মুখোপাধ্যায়, বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের পাশাপাশি অঞ্জন চৌধুরী, হরনাথ চক্রবর্তীর মতো জনপ্রিয় কমার্শিয়াল ছবির পরিচালকরদেরও অতি প্রিয় অভিনেতা ছিলেন তিনি। অভিনয় করেছেন রাখী গুলজার, সুধা চন্দ্রন, মন্দাকিনীর মতো একাধিক মুম্বই অভিনেত্রীদের সঙ্গেও। 

Exclusive: নীতিশ রায়ের নোনোগা-য় ‘কোই মিল গ্যয়া'র ছায়া?

উত্তমকুমার-সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের আজীবনের দ্বৈরথ একসময় আট, নয়ের দশকে দেখা গেছিল তাপস পাল-প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের মধ্যে। সাংসদের রাজনৈতিক জীবন বহু বিতর্কে বিতর্কিত। তবু তাঁর সময়ে বাংলা ছবিতে অনুরাগের ছোঁয়া থেকে প্রেম, অভিমান, জীবনযুদ্ধের কাহিনি পর্দায় জীবন্ত করেছিলেন তিনিই। আজও দোলের দিন পাড়ায় পাড়ায় বেজে ওঠে 'দাদার কীর্তি'র 'এল রে এল রে এল হোলি এল রে' গান। সেই গানের হাত ধরে প্রতিবার বসন্ত যখন বসন্ত আসবে তখন 'সুরের আকাশে' শুকতারা হয়ে জ্বলবেন আপামর বাঙালির 'নয়নের মণি' 'কেদার' তাপস পাল।

.