This Article is From May 31, 2020

আজ দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়ির ১৬৬তম প্রতিষ্ঠা দিবস, ফিরে দেখা ইতিহাস ও কিংবদন্তিকে

সেই সময়ে এই মন্দির তৈরি করতে লেগেছিল ন’লক্ষ টাকা! যা সেই সময়ের নিরিখে বিরাট অর্থ।

আজ দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়ির ১৬৬তম প্রতিষ্ঠা দিবস, ফিরে দেখা ইতিহাস ও কিংবদন্তিকে

এই নবরত্ন মন্দিরের স্থাপত্য সত্যিই নয়নাভিরাম।

রবিবার দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দিরের (Dakshineswar Kali Temple) ১৬৬তম প্রতিষ্ঠা দিবস (Foundation Day Of Dakshineswar Kali Temple)। ১৮৫৫ সালের এই দিনে দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন লোকমাতা রানি রাসমণি। একটা স্বপ্ন। আর সেই স্বপ্নকে সত্যি করার ইচ্ছে। এবং অবশেষে তার সফল বাস্তবায়ন। সহজে বললে এভাবেই গড়ে উঠেছিল দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়ি। সে গল্পও কম আকর্ষণীয় নয়। ১৮৪৭-তে শুরু হয় মন্দির নির্মাণ। এবং তা শেষ হয় ১৮৫৫ সালে। ১০০ ফুটেরও বেশি উঁচু এই নবরত্ন মন্দিরের স্থাপত্য সত্যিই নয়নাভিরাম। সেই সময়ে এই মন্দির তৈরি করতে লেগেছিল ন'লক্ষ টাকা! যা সেই সময়ের নিরিখে বিরাট অর্থ। জমিদার বাড়ির বিধবা পত্নী রাসমণি, যাঁর উপরেই সেই সময়ে ছিল জমিদারি দেখাশোনার দায়িত্ব, তিনি সেই বিপুল অর্থ খরচ করে গড়ে তুলেছিলেন মন্দিরটি। এই মন্দিরের গর্ভগৃহে সহস্র পাপড়ির রৌপ্য-পদ্মের উপরে শুয়ে থাকা শিবের বুকে দেখা যায় মা ভবতারিণী কালীকে। পাথর কুঁদে তৈরি করা হয়েছিল মূর্তিটি।

এবার আসা যাক এই মন্দির তৈরির পিছনের স্বপ্নকে। ১৮৪৭ সালে রানি রাসমণি ঠিক করেন, তিনি কাশীতে তীর্থযাত্রায় যাবেন। সেইমতো ২৪টি নৌকায় আত্মীয় পরিজন, দাসদাসী নিয়ে যাত্রা করতে মনস্থ করেন তিনি।

কিংবদন্তি অনুসারে, ঠিক আগের দিন তাঁর স্বপ্নে আসেন মা কালী। তিনি তাঁকে জানান, কাশী যাওয়ার প্রয়োজন নেই রাসমণির। তিনি যেন একটি মন্দির স্থাপন করে গঙ্গাতীরেই পূজা শুরু করেন মা কালীর।

এই স্বপ্নই রাসমণিকে প্রেরণা জোগায়। তিনি গঙ্গাতীরে জমি কেনেন। শুরু হয় মন্দির নির্মাণের কাজ। একসময় তা শেষ হয়। মাঝে কেটে গেছে আট বছর। শেষপর্যন্ত স্বপ্নের আদেশ পালন করে সত্যি সত্যিই গড়ে ওঠে সুউচ্চ মন্দির।

দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের সঙ্গে অবশ্যম্ভাবী ভাবে যাঁর নাম জড়িয়ে রয়েছে তিনি রামকৃষ্ণ পরমহংস। ১৮৫৫ সালে দাদা রামকুমারের সহযোগীরূপে এখানে আসেন। পরে রামকুমারের মৃত্যুর সময় তিনি দাদার স্থলাভিষিক্ত হন। ১৮৮৬ পর্যন্ত প্রায় তিন দশক শ্রীরামকৃষ্ণ এই মন্দিরে ছিলেন। ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ে তাঁর নাম। বহু দূর থেকে মানুষ ছুটে আসতে থাকেন মন্দিরে।

আজও বিপুল সংখ্যক মানুষ এই মন্দিরে আসেন মায়ের দর্শন করতে। শতাব্দীপ্রাচীন এই নবরত্ন মন্দিরের আকর্ষণ আজও একই রকম রয়ে গিয়েছে।

লকডাউনের কারণে বন্ধ রয়েছে মন্দিরের ভক্ত সমাগম। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন, ১ জুন থেকে রাজ্যের সমস্ত ধর্মীয় স্থান খুলে দেওয়া হবে। কিন্তু এখনই মন্দির না খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দক্ষিণেশ্বর মন্দির কর্তৃপক্ষ।

.