সোশ্যালে অসহিষ্ণুতা নিয়ে প্রতিবাদে সরব অপর্ণা সেন (পিটিআই)
কলকাতা: এবার কণ্ঠরোধের বিপক্ষে গর্জে উঠলেন কলকাতার বুদ্ধিজীবীরা। "কথা বলার স্বাধীনতা আমাদের সবার আছে। মুখ খুললে মতবিরোধ হবেই। কিন্তু তার জন্য কারোর কণ্ঠরোধ করা গণতন্ত্র বিরুদ্ধ"--- ভারতীয় সহিংস সংস্কৃতির (Culture Of Violence) পর সোশ্যালে অসহিষ্ণুতা নিয়ে এভাবেই সরব হলেন কলকাতার ২৮ জন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব। তালিকায় রয়েছেন অভিনেতা-পরিচালক অপর্ণা সেন (Aparna Sen), সোহাগ সেন, কৌশিক সেন, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ের মতো একাধিক গুণীজন। সম্প্রতি, অনুরাগ কাশ্যপ টুইটে মোদি বিরোধী মন্তব্য করায় তাঁর মেয়ে এবং পরিবারকে হুমকি বার্তা শুনতে হয়েছে। সেই উদাহরণ সামনে এনে প্রতিবাদীদের প্রশ্ন, মন খুলে যদি কথাই না বলা যায় তাহলে দেশ কোথায় স্বাধীন হল? প্রসঙ্গত, এই ঘটনার পরেই টুইটারে নিজের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন অনুরাগ। এবং সেই কথা জানিয়ে তিনি তার আগে টুইটও করেন। বলেন, "দেশ চলছে ঠগেদের নেতৃত্বে। তাই ঠগিরাই দেশের কাণ্ডারি। এমন নৈরাজ্যে মুখ খোলা সত্যিই মূর্খামি। আজ থেকে তাই আমি নীরব।"
জয় শ্রী রাম বিতর্কে মোদিকে চিঠি লিখলেন অপর্ণা সেন, রামচন্দ্র গুহরা
সিটিজেনস্পিকইন্ডিয়ার মঞ্চ থেকে লেখা একটি চিঠি এই প্রসঙ্গে পড়া হয়। চিঠির মূল বক্তব্য, "স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে খোলাখুলি মতামত জানানোর অধিকার সবার আছে। কিন্তু ইদানিং, সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে মুখ খুললেই বিকৃত মন্তব্যের পাশাপাশি সরাসরি আক্রমণের ভয় দেখানো হচ্ছে মতামত প্রকাশকারীকে। এতে মতপ্রকাশ দূরে থাক, কথা বলতেই ভয় পাচ্ছেন সবাই। শুধু অনুরাগ নন, এমন জঘন্য ঘটনার শিকার আরও অনেকেই।"
এই প্রসঙ্গে অপর্ণা উদাহরণ দেন একমাস আগে ঘটে যাওয়া ঘটনার। দেশে ক্রমশ বাড়তে থাকা অসহিষ্ণুতা এবং 'জয় শ্রীরাম ধ্বনি' বন্ধের অনুরোধ জানিয়ে নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি দিয়েছিলেন অপর্ণা সেন, ঐতিহাসিক রামচন্দ্র গুহ সহ কলকাতার ৪৯ জন বুদ্ধিজাবী। সেই দলে কৌশিক সেনের মতো নাট্যব্যক্তিত্বও ছিলেন। তারপরেই নাকি অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তির থেকে প্রাণনাশের হুমকি ফোন পান কৌশিক।
ডুবন্ত জাহাজ ছেড়ে গেছে ওরা: টেলি তারকাদের বিজেপিতে যোগ দেওয়া নিয়ে অপর্ণা সেন
চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীকে ২৮ জন সম্মানীয় নাগরিকের সনির্বন্ধ অনুরোধ, দোষীদের কড়া শাস্তি না দিলে সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে বন্ধ হবে না নীতিপুলিশি। তাঁদের প্রশ্ন, প্রত্যেকেই যদি মুখে কুলুপ এঁটে বসে থাকেন, দেশের ভালো-মন্দ নিয়ে তাহলে মাথা ঘামাবেন কারা? শুধুই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং তাঁদের সমর্থকরা? দেশে কি তাহলে খুব শিগগিরি জরুরি অবস্থা চালু হতে চলেছে?