This Article is From Apr 25, 2019

কেন প্রথমে বিয়েতে রাজি না হয়েও পরে অপূর্বাকেই বিয়ে করেন নিহত রোহিত শেখর?

অপূর্বা শুক্লা তিওয়ারি ও রোহিত এক বছর ধরে একে অপরের সঙ্গে প্রেম করছিলেন এবং এর মধ্যেই সম্পর্ক থেকে একটি বিরতিও নিয়েছিল তাঁরা।

কেন প্রথমে বিয়েতে রাজি না হয়েও পরে অপূর্বাকেই বিয়ে করেন নিহত রোহিত শেখর?

Rohit Tiwari Death: স্বামীকে হত্যার অভিযোগ স্বীকার অপূর্বা শুক্লা তিওয়ারির (Apoorva Shukla Tiwari)

নিউ দিল্লি:

প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী এন ডি তিওয়ারির (ND Tiwari) ছেলে রোহিত শেখর তিওয়ারির (Rohit Shekhar Tiwari) হত্যার প্রধান সন্দেহভাজন হিসাবে তাঁরই স্ত্রী অপূর্বা শুক্লা তিওয়ারিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে (Apoorva Shukla Tiwari)। রোহিত শেখর তিওয়ারিকে (৪০), গত সপ্তাহেই তাঁদের দক্ষিণ দিল্লির বাড়িতে অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায় এবং পরে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী, অপূর্বা শুক্লা তিওয়ারি ইন্দোরের বাসিন্দা। ২০১৭ সালে লখনউতে রোহিত শেখর তিওয়ারির সঙ্গে এক ম্যাট্রিমনিয়াল ওয়েবসাইটের মাধ্যমেই আলাপ হয় তাঁদের, জানিয়েছে রোহিতের মা উজ্জ্বলা শর্মা।

অপূর্বা শুক্লা তিওয়ারি ও রোহিত এক বছর ধরে একে অপরের সঙ্গে প্রেম করছিলেন এবং এর মধ্যেই সম্পর্ক থেকে একটি বিরতিও নিয়েছিল তাঁরা। রোহিত শেখর তিওয়ারি অপূর্বার থেকে দূরত্ব রেখেই চলতে। উজ্জ্বলা জানিয়েছেন অপূর্বাকে তিনি বিয়ে করতে চান নি। উজ্জ্বলা শর্মা বলেন, “২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত ওদের কোনও যোগাযোগে ছিল না। কিন্তু ২ এপ্রিল ওরা আমার কাছে এসে বিয়ে করার ইচ্ছা জানিয়েছিল।" তবে, কোনওভাবে ওদের সম্পর্ক ছিন্ন হয়। বহুবার পারস্পরিক বিবাহ বিচ্ছেদ নিয়ে আলোচনা করেছেন তাঁরা এবং জুন মাসেই বিবাহ বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন। সম্পর্ক এতই খারাপ হয় যে, একই ঘরে আলাদা থাকতেন শেখর ও অপূর্বা।

 এন ডি তিওয়ারির ছেলে রোহিতকে হত্যা করেছে তাঁর স্ত্রী, দেড় ঘন্টায় সাফ প্রমাণ: পুলিশ

6207v4qo

রোহিত শেখর তিওয়ারি (ডানদিকে) কংগ্রেসের নেতা এন ডি তিওয়ারির পুত্র ছিলেন

উজ্জ্বলা শর্মা বলেন, “রোহিতের সঙ্গে বিয়ে করার আগে অন্য একজনের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল অপূর্বার। ওর পরিবারের টাকা পয়সার লোভ এবং সবসময় আমাদের সম্পত্তির দিকে ওদের নজর ছিল। ওরা আমার ছেলে শেখর ও সিদ্ধার্থের কাছ থেকে ডিফেন্স কলোনির সম্পত্তি দখল করতে চেয়েছিল। যেখানে অপূর্বা প্র্যাকটিস করে সেই সুপ্রিম কোর্টের কাছেই আমাদের বাড়ি।"

তিনি আরও বলেন, “আমি স্মরণসভার পরে সবকিছু প্রকাশ করব। আমার স্বামী এন ডি তিওয়ারির ওএসডি (বিশেষ দায়িত্ব কর্মকর্তা) ছিলেন রাজীব, ও আমাদের আত্মীয়ও, গত ৪০ বছর ধরে আমাদের সেবায় নিযুক্ত ছিলেন তিনি। অপূর্বা রাজীবের স্ত্রীকে ঘৃণা করতেন। কারণ সিদ্ধার্থ রাজীবের ছেলেকে নিজের সম্পত্তি ভাগ দিতে চেয়েছিলেন।”

১৫ এপ্রিল, রোহিত শেখর তিওয়ারি, তাঁর মায় উজ্জ্বলা ও এক আত্মীয় উত্তরাখণ্ডের কাঠগোদাম থেকে ফিরছিলেন। দেশের বাড়িতে লোকসভা নির্বাচনে ভোট দিতে গিয়েছিলেন তাঁরা। 

কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে হাওয়া মোদির বিরুদ্ধে জমা পড়া বিধিভঙ্গের অভিযোগ!

পরের দিন সকালে রোহিতকে ঘুম থেকে তোলার কেউ চেষ্টাও করেননি। ৪ টের সময় কাজের লোক গিয়ে দেখে অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে আছে রোহিত এবং তাঁর নাক দিয়ে রক্ত পড়ছে। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা রোহিতকে মৃত ঘোষণা করেন। বুধবারই অপূর্বা শুক্লা তিওয়ারিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং হত্যার অভিযোগ জমা পড়েছে। গত তিন দিন ধরেই জিজ্ঞাসাবাদ করছিল পুলিশ।

অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার রাজীব রঞ্জন বলেন, “আমরা বৈজ্ঞানিক প্রমাণ এবং এফএসএল (ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরি) থেকে পাওয়া রিপোর্টের ভিত্তিতেই অপূর্বাকে গ্রেফতার করেছি। তিনি স্বীকার করেছেন যে, তিনি তার স্বামীকে হত্যা করেছেন এবং জানিয়েছেন মোটেও ভালো ছিলেন না এই সম্পর্কে তিনি। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর যাবতীয় আশা ও স্বপ্ন সবই শেষ হয়ে গেছিল।”

7ma10uj4

রোহিত শেখর তিওয়ারির স্ত্রী অপূর্বা শুক্লা তিওয়ারি একজন আইনজীবী

রঞ্জন আরও বলেন, “ওই ঘটনার রাতে, এক আত্মীয়কে নিয়ে দম্পতির মধ্যে ঝামেলা হয়। রোহিত উত্তরাখণ্ড থেকে দিল্লি পর্যন্ত সারা রাস্তা মদ খেতে খেতেই আসে এবং এতটাই নেশায় ছিল যে প্রতিরোধ করার মতো অবস্থায় ছিল না। হাতাহাতির সময়ে অপূর্বা তাঁকে ঘুষি মারলেই তিনি অজ্ঞান হয়ে যান।”

পুলিশ অফিসার জানান, ক্রাইম ব্রাঞ্চের দলকে প্রথমে অপূর্বা বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছিলেন। পুলিশ জানান, “হত্যার পরেই তিনি প্রমাণ লোপাট করে দেন। এবং পুরোটা ঘটে দেড় ঘন্টার মধ্যে।” রঞ্জন বলেন, “এখনও পর্যন্ত, ঘটনা এবং পরিস্থিতি বিচার করে মনে হচ্ছে এই হত্যাকাণ্ড পরিকল্পনা করা হয়নি। দু'জনেরই সম্পর্কে সমস্যা হচ্ছিল এবং রোহিত শেখর ও তার পরিবার বিবাহ বিচ্ছেদের কথা ভাবছিল। জিজ্ঞাসাবাদের পরে জানা গেছে যে অপূর্বা শুক্লা তিওয়ারি এবং রোহিতের মধ্যে নিত্যদিনের সমস্যা ছিল। তাঁরা খুবই বিরক্ত ও চাপে ছিলেন এই বিয়ে নিয়ে।”

রোহিত যে উত্তর প্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কংগ্রেস নেতা এনডি তিওয়ারির ছেলে তা প্রমাণ করার জন্য আদালতে ছয় বছরের দীর্ঘ লড়াই চালিয়েছিলেন রোহিত। ২০১২ সালে ডিএনএ পরীক্ষা করার জন্য এনডি তিওয়ারি তার রক্তের নমুনা দিতে অস্বীকার করেন, তবে পরবর্তীতে তিনি রক্তের নমুনা জমা দেন। ২০১৪ সালে, দিল্লি হাই কোর্ট ঘোষণা করে যে, এনডি তিওয়ারিই রোহিত শেখরের জন্মদাতা বাবা। ওই বছরই, ৮৮ বছর বয়সী এন ডি তিওয়ারি রোহিত শেখর তিওয়ারির মা'কে বিয়ে করেন। গত বছর নিজের ৯৩ তম জন্মদিনেই প্রয়াত হন এই বরিষ্ঠ নেতা।

.