This Article is From Jan 15, 2019

ধর্ম নয়, বর্ণ নয়, এই রাজ্যে উৎসবের ডাকনাম কৃষি, শীতযাপনের নাম ‘মাঘবিহু’

পণ্ডিতদের মতে সংস্কৃত 'বিষুবন' শব্দ থেকে বিহু শব্দের উদ্ভব হয়েছে। বৈদিক 'বিষুবন' শব্দের অর্থ বছরের যে সময়ে দিন এবং রাত সমান হয়।

ধর্ম নয়, বর্ণ নয়, এই রাজ্যে উৎসবের ডাকনাম কৃষি, শীতযাপনের নাম ‘মাঘবিহু’
কলকাতা:

আসামে বিহুর রঙ ধরেছে। ব্রহ্মপুত্র নদীর ধারে ধারে অদ্ভুত পাহাড়ি সুর ভেসে আসছে যেন, শুধু সুর নয় পাহাড় ডিঙিয়ে নেমে আসছে উৎসবও। বছরে এখানে তিনবার বিহু পালিত হয়। রোজের যাপনের বাইরে গিয়ে বছরে তিনবার নিজস্ব শিকড়ের উৎসবে মেতে ওঠার সুযোগ পান অসমিয়া মানুষেরা। এই বাড়তে থাকা যান্ত্রিকতা আর ভার্চুয়াল উৎসব পালনের এক ছদ্ম ভালো থাকার মধ্যেও এতকাল ধরে আসামের বিহু কৃষি ক্যালেন্ডারে কিন্তু নিজের শিকড় আজও একইভাবে জোরদার করে রয়ে গিয়েছে বিহুর তিনটি স্বতন্ত্র পর্যায়।

ইউজিসির বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ মমতার

রয়ে গিয়েছে হয়ত এই কারণেই যে, বিহু বস্তুত একটি ধর্মনিরপেক্ষ উত্সব। আসামের সকল অংশে জাতিগত ধর্ম বা ধর্মীয় পটভূমি নির্বিশেষে উদযাপিত হয় এই উৎসব। প্রথম বিহু উদযপিত হয় রঙ্গালি বিহু বা বোহাগ বিহু নামে, এপ্রিল মাসে পালিত হয় এই বিহু। দ্বিতীয় বিহুর নাম কাটি বিহু বা কোঙ্গালি বিহু, যা অক্টোবর মাসে পালন করা হয় এবং অবশেষে মাঘ বিহু, যা জানুয়ারি মাসে পালন করা হয়। প্রাণের উৎসব বলতে যা যা মনে পড়ে আমাদের, প্রাণ ভরে ঐতিহ্যগত খাবার দাবার খাওয়া, ঐতিহ্যগত পোশাক পরা আর ঐতিহ্যের শিকড়ে লেগে থাকা নাচ ও গানের বিপুল উচ্ছ্বাসে মেতে থাকে তিন মাসের তিন চরিত্রের বিহু। এখানে আসলে কৃষিই জলজ্যান্ত উৎসব।

ia592i6

কেন উৎসবের নাম বিহু?

অনেকের মতে ‘বি'হু শব্দটি মূলত 'বিশু' শব্দ থেকে উদ্ভূত, যার অর্থ হ'ল মানুষ ফসল কাটার মরশুমে ঈশ্বরের কাছে যে সমৃদ্ধি কামনা করে। পরে নাকি এই বিশু থেকেই বিহু শব্দটির জন্ম হয়। অনেকের মতে আবার, উৎসবটির নাম দুটি পৃথক শব্দ থেকে উদ্ভূত। 'বি' মানে প্রার্থনা করা এবং 'হু' অর্থাৎ প্রদান করা। পণ্ডিতদের মতে সংস্কৃত 'বিষুবন' শব্দ থেকে বিহু শব্দের উদ্ভব হয়েছে। বৈদিক 'বিষুবন' শব্দের অর্থ বছরের যে সময়ে দিন এবং রাত সমান হয়। অনেকের মতে, বিহু শব্দটি ‘বৈ' (উপাসনা) এবং ‘হু' (গরু) এই শব্দ দুটি থেকে এসেছে।

১৬টি কুকুর ছানার দেহ উদ্ধারের ঘটনায় প্রকাশ্যে এলো চাঞ্চল্যকর ভিডিয়ো

gsf0rudg

আসাম এখন রঙিন হয়েছে ফসল কাটার উৎসব অর্থাৎ মাঘ বিহুকে কেন্দ্র করে। মাঘ বিহুর অন্য নাম ভোগালী বিহু। ভোগালী শব্দটি ভোগ বা খাদ্য থেকেই এসেছে। এই বিহু তিন দিন ধরে পালন করা হয়। পৌষ সংক্রান্তির দিনে বিকেলবেলায়, যা উরুকা নামেও পরিচিত, অসমিয়া মানুষজন নদীর তীরে মাঠে উৎপাদিত শস্যের খড় দিয়ে ভেলাঘর নামে একটি কুটির তৈরি করেন এবং তা দিয়ে রাত্রে 'মেজি' নামের আগুন জ্বালিয়ে উৎসব পালন করেন। রাত্রিবেলায় তাঁরা মেজির চারপাশে জড়ো হয়ে বিহু গান করেন, ঢোল এবং ঐতিহ্যগত বাদ্যযন্ত্র বাজান এবং সমবেতভাবেই খাবার খান। পর দিন সকালে স্নান করে মূল মাজিতে আগুন জ্বালান এবং ঐ আগুনে পিঠে ও সুপুরি ছুঁড়ে দেন। আগুনের কাছে তাঁরা প্রার্থনা করেন। এরপর ওই এলাকার ফলগাছগুলিতে শস্য বেঁধে দেওয়া হয়। সারাদিন ধরে মোষের লড়াই, মোরগের লড়াইয়ের মতো নানা খেলাও চলতে থাকে।

h7f48b48
.