
টুইটারে বাগযুদ্ধে জড়ালেন ইতিহাসবিদ রামচন্দ্র গুহ ও বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
হাইলাইটস
- বিদেশমন্ত্রী দাবি করেন, সর্দার বল্লভভাই পটেলকে মন্ত্রিসভায় চাননি নেহরু
- সেই দাবির বিরোধিতা করেন ইতিহাসবিদ রামচন্দ্র গুহ
- পরে বিতর্কে যোগ দেন কংগ্রেস নেতা শশী থারুরও
কেন্দ্রীয় বিদেশমন্ত্রী সুব্রহ্মনিয়ম জয়শঙ্করের (Foreign Minister Subramanian Jaishankar) একটি টুইটকে কেন্দ্র করে বিতর্ক ছড়াল। সেই টুইটে বিদেশমন্ত্রী দাবি করেন, ১৯৪৭ সালে সর্দার বল্লভভাই পটেলকে (Vallabhbhai Patel) নিজের মন্ত্রিসভায় নিতে চাননি দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু (Jawaharlal Nehru)। গত বুধবার জয়শঙ্কর জানান, তিনি বিখ্যাত আমলা ভিপি মেননের জীবনী থেকে জানতে পেরেছেন, নেহরু বল্লভভাই পটেলকে তাঁর প্রাথমিক মন্ত্রী তালিকায় রাখেননি। পাশাপাশি তিনি মেননের উদ্ধৃতিও শেয়ার করেন, যেখানে মেনন বলেছেন, সর্দার পটেলের স্মৃতিকে মুছে ফেলার ইচ্ছাকৃত প্রচার চালানো হয়েছিল। তাঁর এই পোস্টের বিরোধিতা করেন বিখ্যাত ইতিহাসবিদ রামচন্দ্র গুহ (Ram Chandra Guha)। তিনি জানান, এই বিষয়টি একটি মিথ মাত্র।
রামচন্দ্র গুহ তাঁর টুইটে জানান, এই মিথকে সম্পূর্ণভাবে নস্যাৎ করেছেন অধ্যাপক শ্রীনাথ রাঘবন। তিনি এও জানান, আধুনিক ভারতের রূপকারদের মধ্যে এমন মিথ্যে শত্রুতার কথা রটানো বিদেশমন্ত্রীর কাজ হতে পারে না। তিনি কটাক্ষ করে বলেন, তাঁর উচিত এটা বিজেপির আইটি সেলের হাতে ছেড়ে দেওয়া।
This is a myth, that has been comprehensively demolished by Professor Srinath Raghavan in The Print.
— Ramachandra Guha (@Ram_Guha) February 13, 2020
Besides, promoting fake news about, and false rivalries between, the builders of modern India is not the job of the Foreign Minister. He should leave this to the BJP's IT Cell. https://t.co/krAVzmaFkL
কিছুক্ষণের মধ্যেই এর জবাব দেন জয়শঙ্কর। তিনি পাল্টা টুইট করে লেখেন, ‘‘কোনও কোনও বিদেশমন্ত্রী বই পড়েন। সম্ভবত এটা কোনও কোনও অধ্যাপকেরও ভাল অভ্যাস। সেক্ষেত্রে আমি ওই বইটা পড়তে বলব যেটা কাল শেষ করেছি।''
রামচন্দ্র গুহ তাঁর পরের টুইটে লেখেন, ‘‘স্যার, যেহেতু আপনি জেএনইউ থেকে পিএইচডি করেছেন, আপনি নিশ্চয়ই আমার থেকে বেশি বই পড়েছেন। তার মধ্যে সেগুলিও নিশ্চয়ই আছে, যেখান থেকে জানা যায় নেহরু কীভাবে তাঁর প্রথম মন্ত্রিসভার ‘মজবুত ভিত' হিসেবে পটেলকে চেয়েছিলেন। সেই বইগুলিরও সাহায্য নিন।''
এরপর রামচন্দ্র গুহ একটি চিঠিও শেয়ার করেন। ১৯৪৭ সালের ১ আগস্ট সেই চিঠিতে দেখা যাচ্ছে, জওহরলাল নেহরু পটেলকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন, তাঁর মন্ত্রিসভার এক ‘মজবুত ভিত' হিসেবে যোগ দেওয়ার জন্য। তিনি সকলকে অনুরোধ করেন, এই চিঠিটি বিদেশমন্ত্রীকে দেখাতে।
The letter of 1 August where Nehru invites Patel to join the first Cabinet of free India, calling him the "strongest pillar" of that Cabinet. Can someone show this to please? pic.twitter.com/N6m1mOr7SF
— Ramachandra Guha (@Ram_Guha) February 13, 2020
কংগ্রেস নেতা শশী থারুরও এই বিতর্কে অংশ নিয়ে টুইট করেন। সেখানে থারুর জানান, তিনি ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন নায়ক হিসেবে মেননকে দেখেন। কিন্তু তাঁর মতে, মানুষের স্মৃতি ভুল করতেই পারে।
নেহরু ও পটেলের মধ্যে কি সত্যিই কোনও সমস্যা ছিল, নাকি তাঁরা একসঙ্গে নির্দ্বিধায় কাজ করে গিয়েছেন, তা নিয়ে বিতর্ক আজকের নয়। বিজেপি বরাবরই দাবি করার চেষ্টা করেছে সর্দার বল্লভভাই পটেল কংগ্রেস ও জওহরলাল নেহরুর থেকে প্রাপ্য সম্মান পাননি।