ভোপাল থেকে লোকসভার সাংসদ নির্বাচিত হন প্রজ্ঞা সিং ঠাকুর
হাইলাইটস
- ফের এক বিতর্কে জড়ালেন প্রজ্ঞা ঠাকুর
- কলেজ পড়ুয়াদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হল তাঁকে
- "আইনজীবিদের সাথে পরামর্শ করে ব্যবস্থা নেব", বললেন বিজেপি সাংসদ
ভোপাল: "সন্ত্রাসবাদী ফিরে যাও", ভোপালের এক কলেজের মহিলা বিক্ষোভকারীদের মুখ থেকে এমনটাই শুনতে হল সেখানকার লোকসভা সাংসদ প্রজ্ঞা ঠাকুরকে। ভোপালে মাখনলাল চতুর্বেদী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের চত্বরে সেখানকার পড়ুয়ারা বিক্ষোভ করছে, সেই খবর পেয়ে ওই কলেজে অশান্তি থামাতে যান বিজেপি সাংসদ (Pragya Thakur), কিন্তু সেখানে সমাধান করার পরিবর্তে পড়ুয়াদের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হল তাঁকে। এর আগে শনিবার একটি বেসরকারি সংস্থার বিমানে করে যাওয়ার সময় সহযাত্রীদের সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন তিনি। সেই ঝামেলার ভিডিও ভাইরালও হয় সোশ্যাল দুনিয়ায়। জানা গেছে, ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস কমিউনিকেশন বিভাগের দুই পড়ুয়া শ্রাই পান্ডে এবং মনু শর্মাকে ক্লাসে অনুপস্থিতির কারণে বিভাগ থেকে বহিষ্কার করায় সেই পদক্ষেপের বিরুদ্ধেই বিক্ষোভ শুরু হয় সেখানে। ওই বিশ্ববিদ্যালয়েই অশান্তি থামাতে প্রজ্ঞা সিং ঠাকুর উপস্থিত হলে তাঁকে লক্ষ্য করে "আতঙ্কবাদী বাপস যাও (সন্ত্রাসবাদী ফিরে যান)" জাতীয় স্লোগান ওঠে।
"আমি এই ঘটনায় আইনজীবিদের সঙ্গে পরামর্শ করব এবং পরে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সকলের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেব", বলেন ক্ষিপ্ত প্রজ্ঞা ঠাকুর।
বিমানে সংরক্ষিত আসন না পেয়ে গোঁসা প্রজ্ঞা ঠাকুরের! কারণ দর্শিয়ে অভিযোগ খণ্ডন স্পাইসজেটের
২০০৮ সালের মালেগাঁও বিস্ফোরণের সঙ্গে প্রজ্ঞা ঠাকুরের জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে এক সময়। যদিও গত লোকসভা নির্বাচনে তাঁকেই প্রার্থী করে বিজেপি। ভোপাল আসন থেকে বিরোধী প্রার্থী কংগ্রেসের দিগ্বিজয় সিংকে ৩.৬ লক্ষেরও বেশি ভোটে পরাজিত করেন তিনি। শারীরিক অসুস্থতার কারণে বর্তমানে তিনি জামিনে জেলের বাইরে আছেন। প্রজ্ঞার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির অবৈধ কার্যকলাপ (প্রতিরোধ) আইন, অস্ত্র আইন এবং বিস্ফোরক পদার্থ আইনের বিভিন্ন ধারায় একাধিক অভিযোগে চার্জ গঠন করা হয়। মহারাষ্ট্রের ভোপালে ২০০৮-এর বিস্ফোরণে ৬ জন নিহত ও শতাধিক মানুষ আহত হন।
ঘটনার সময় তোলা একটি ভিডিওতে প্রজ্ঞা ঠাকুরকে একটি অল্প বয়সী মেয়ের উপর ঝুঁকে পড়ে কথা বলার চেষ্টা করতে দেখা যায়। ভিডিওতে দেখা যায় যে একজন পুলিশ আধিকারিকও ওই মেয়েটির সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছেন।
প্রজ্ঞা ঠাকুরকে লক্ষ্য করে সেই সময়েই স্লোগান দেন বিক্ষোভকারী পড়ুয়ারা। আর তখনি বিজেপি সাংসদের সঙ্গে থাকা বিজেপি সমর্থকরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। পরে পুলিশ এসে কোনও রকমে পরিস্থিতি সামল দেয়।
শনিবার, দিল্লি–ভোপালগামী বিমানের প্রথম আসনটিই পছন্দ ছিল তাঁর। কারণ তিনি হুইলচেয়ারে ছিলেন। তবে এমারজেন্সির কারণে ওই আসন যাত্রীদের ছাড়তে রাজি হয়নি নিরাপত্তা সংস্থা। সেইমতো আসন ছেড়ে দিতে অনুরোধ করা হয় প্রজ্ঞা ঠাকুরকে। তাঁকে ক্রমাগত যাত্রীরা ওই আসনটি ছাড়ার জন্য অনুরোধ করেন, কিন্তু কর্ণপাত করেননি সাংসদ।
স্পাইসজেট আসন বিতর্কে প্রকাশিত ভিডিও, যাত্রীদের সঙ্গেও বচসায় জড়িয়েছিলেন বিজেপির ওই মহিলা সাংসদ
বিমানসংস্থার মুখপাত্র জানিয়েছেন, অনেক যাত্রীই বিজেপি সাংসদকে নেমে যেতে বলেন ও পরের বিমানে আসতে অনুরোধ করেন। ভিডিওতে দেখা গিয়েছে যে এক যাত্রী বিজেপি সাংসদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে যান এবং তাঁকে মনে করিয়ে দেন যে তিনি জনগণের প্রতিনিধি ও তাঁর কাজই হল কাউকে বিব্রত না করা। এই বচসার মাঝেই প্রজ্ঞা ঠাকুরকে বলতে শোনা যায় যে, 'আমি শুরুতেই বলেছিলাম তোমাদের রুলবুক দেখাও আমাকে। আমি যদি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ না করি, আমি চলে যাব।' এই কথার পরিপ্রেক্ষিতে ওই যাত্রীকে বলতে শোনা যায়, 'আপনি মানুষের প্রতিনিধি। আপনার কাজ কাউকে বিব্রত না করা। আপনি অন্য বিমানে আসুন"। গোটা ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হয় সোশ্যাল দুনিয়ায়।
দেখুন এই ভিডিও: