
৫ অগাস্ট থেকে গৃহবন্দি ন্যাশনাল কনফারেন্সের নেতা ওমর আবদুল্লা।
হাইলাইটস
- গত অগাস্ট মাস থেকে গৃহবন্দি ওমর আবদুল্লা
- সম্প্রতি তাঁর এক ছবি প্রকাশ্যে এসেছে
- সেই ছবি দেখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, ওমরকে দেখে চিনতেই পারিনি
সেই অগাস্ট থেকে গৃহবন্দি জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা (Omar Abdullah)। তবে সম্প্রতি তাঁর এক ছবি সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হয়েছে। সেই ছবি নিজের টুইটার টাইমলাইনে পোস্ট করে বিস্ময় প্রকাশ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। শনিবার পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী (Bengal CM) সেই ছবির নীচে লেখেন, "এ কী অবস্থা! আমি এই ছবিতে ওমরকে চিনতেই পারিনি।" নেতাকে গৃহবন্দি করে রাখা প্রসঙ্গে খানিক দুঃখপ্রকাশ করে তাঁর মন্তব্য, "আমার খুব খারাপ লাগছে, গণতান্ত্রিক দেশেও এসব চলছে। কবে এসব থামবে?" যে ছবি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইটারে পোস্ট করেছেন, তাতে দেখা গিয়েছে, গলাবন্ধ শীত পোশাক আর প্রায় বুক সমান ধূসর দাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে ফারুক-পুত্র। গত অগাস্টের ৫ তারিখ জম্মু-কাশ্মীর থেকে সংবিধানের ৩৭০ ধারা তুলে দিয়েছিল কেন্দ্র। সেই ধারা ওই রাজ্যকে বিশেষ মর্যাদা দিত। তাই অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে প্রায় শতাধিক রাজনীতিবিদকে সেই মাসেই গৃহবন্দি করেছিল কেন্দ্র সরকার। বিচ্ছিন্নতাবাদীদের পাশাপাশি ওই তালিকায় সে রাজ্যের তিন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীও রয়েছেন।
I could not recognize Omar in this picture. Am feeling sad. Unfortunate that this is happening in our democratic country. When will this end ? pic.twitter.com/lbO0PxnhWn
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) January 25, 2020
এদিকে তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যসভায় ওই 'গৃহবন্দি' প্রসঙ্গে সবচেয়ে বেশি সরব হয়েছিল। সে দলের সাংসদ ডেরেক ও' ব্রায়েন অভিযোগ করেছিলেন, বিজেপি পরিচালিত কেন্দ্রের সরকার সংবিধানকে আস্তাকুঁড়ে ছুঁড়ে ফেলতে চাইছে। ওমর আবদুল্লার যে ছবি সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে, সেই একই ছবি দেখা গিয়েছে জম্মু-কাশ্মীরের অপর প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতির টুইটারে। যদিও সেই টুইটার মেহবুবা-কন্যা ইলতিজা মুফতিই দেখভাল করেন। সেই টুইটে উল্লেখ, "যারা ওমর আবদুল্লাজির দীর্ঘ 'বন্দি' দশার বিরোধী, এই ছবি তাঁদের জন্য। দেখুন, সামাজিক ও ব্যক্তিগতভাবে 'বন্দি' হয়ে, পরিবার ও পরিচিতির দূরে থেকে নিজের কী অবস্থা করেছেন।"
To those treating @OmarAbdullah's illegal & prolonged detention with nonchalance, would serve you well to remember he's been in solitary confinement away from family & loved ones since 6 months. Physical appearances & tweeting are the least of his concerns
— Mehbooba Mufti (@MehboobaMufti) January 25, 2020
একই ছবি টুইট করেছেন সিপিআইএম-এর সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। তিনি লিখেছেন, একজন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী, কীভাবে কোনওরকম অভিযোগ ছাড়াই বন্দিদশা কাটাচ্ছেন।
This picture points to a very disturbing fact about the central government. A former CM, who is also a former Union Minister, has been detained for months without any charge. And he and his party have been the biggest votaries of India. https://t.co/1sbSfOwQZo
— Sitaram Yechury (@SitaramYechury) January 25, 2020
সংবিধানের ৩৭০ ধারা বিলোপের পর থেকে জম্মু-কাশ্মীরের অপর একাধিক বিধিনিষেধ চাপানো হয়েছে। ইন্টারনেট, মোবাইল ব্যবহার, জমায়েত, জনসভা, পদযাত্রা-- সবকিছুর অপর চলেছে নিষেধাজ্ঞা। যদিও সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে মোবাইল ও ইন্টারনেট ব্যবহারের ওপর আংশিক নিষেধাজ্ঞা তোলা হয়েছে। কিন্তু যে শতাধিক রাজনীতিবিদকে গৃহবন্দি করা হয়েছিল, তাঁদের মধ্যে অধিকাংশের অবস্থার কোনও পরিবর্তন হয়নি। জন নিরাপত্তা আইন বা পাবলিক সেফটি আইন মেনে ওই গৃহবন্দি রাখার সিদ্ধান্ত।

জানা গেছে, শ্রীনগরের হরি নিবাসে আছেন ওমর আবদুল্লা। তাঁর বাবা ফারুক আবদুল্লা আছেন নিজের পৈতৃক বাড়িতে। আর মেহবুবা মুফতিকে রাখা হয়েছে, জম্মুর সরকারি আবসে।
সে রাজ্যের ঠাণ্ডার প্রকোপ থেকে মুফতি যাতে রক্ষা পান, সেই আবেদন প্রশাসনের কাছে করেছিল তাঁর মেয়ে। সেই আবেদন মেনে, শ্রীনগরের চসমেশাহি থেকে তাঁকে জম্মুতে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। এদিকে ইউএস-এর তরফে গৃহবন্দিদের মুক্তির আবেদন করা হয়েছে। সাম্প্রতিক বিদেশি কূটনীতিবিদদের যে দল উপত্যকা সফরে গেছিল, সেই দলে মার্কিন কূটনীতিবিদও ছিল।