This Article is From Apr 29, 2020

"ভারতের অন্যতম ব্যতিক্রমী অভিনেতা": ইরফান খানের অকাল প্রয়াণে শোকস্তব্ধ দেশের শ্রদ্ধা

ভারতের অন্যতম সেরা অভিনেতা ইরফান খানের নিউরোএন্ডোক্রিইন টিউমার ধরা পড়ে ২০১৮ সালের মার্চ মাসে, এর পরেই তিনি লন্ডনে চিকিত্সার জন্য যান। তিনি আংরেজি মিডিয়ামের শুটিং করতে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে ভারতে ফিরে আসেন।

চারদিন আগেই ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে তাঁর প্রয়াত মাকে শেষ শ্রদ্ধা জানান তিনি

নয়াদিল্লি:

কিছু কিছু মৃত্যু মানুষকে স্তব্ধ করে দেয়। ঠিক যেমন বুধবার লকডাউনের মধ্যেই গোটা ভারতবর্ষকে বিষণ্ণ স্তব্ধ করে দিয়ে চলে গেলেন দেশের অন্যতম সেরা অভিনেতা ইরফান খান! সর্বস্তরের মানুষ অসাধারণ এই অভিনেতাকে যেভাবে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন তাতেই স্পষ্ট যে কোন গভীরে ছাপ রেখে গিয়েছেন ইরফান। মঙ্গলবার বিকেলে কোলনের সংক্রমণে মুম্বইয়ের কোকিলাবেন ধিরুভাই আম্বানি হাসপাতালে ভর্তি হন ইরফান, বুধবার সকালে সেখানেই প্রয়াত হন তিনি। বেশ কয়েক বছর ধরে মস্তিষ্কের টিউমার নিয়ে যুদ্ধ করেছিলেন তিনি এবং কয়েকমাস আগেই লন্ডনে চিকিত্সা শেষে মুম্বই ফিরে আসেন। তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকার টুইট করেছেন, “ইরফান খান একজন বহুমুখী অভিনেতা ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর কথা শুনে দুঃখিত। তাঁর পরিবার, বন্ধুবান্ধব এবং ভক্তদের প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা। ওম শান্তি।”

অভিনেতার মৃত্যুতে শোক জানিয়ে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজিওয়াল বলেছেন ইরফান খান “আমাদের সময়ের অন্যতম ব্যতিক্রমী অভিনেতা।”

“ইরফান খানের প্রয়াণের কথা শুনে আমি দুঃখিত। একজন বহুমুখী ও প্রতিভাবান অভিনেতা ইরফান। তিনি বিশ্বব্যাপী চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন মঞ্চে জনপ্রিয় ভারতীয় ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর ছিলেন। খুব মিস করব তাঁকে। তাঁর পরিবার, বন্ধুবান্ধব এবং ভক্তদের প্রতি আমার সমবেদনা রইল এই দুঃখের সময়ে,” কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি টুইটারে লিখেছেন।

কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর লেখেন, “এমন কোনও মানুষ যার সঙ্গে আমার দেখাও হয়নি তাঁর মৃত্যু সংবাদ শুনে আমি প্রচণ্ড আহত হয়েছি, দেখা হয়নি ঠিকই তবে তাঁর প্রতিভা দিয়ে আমার এবং লক্ষ লক্ষ মানুষের মন জয় করেছিলেন তিনি। রেস্ট ইন পিস ইরফান। যখন আরও অনেক কিছু দেওয়ার ছিল, তখনই চলে গেলেন তিনি।”

“আমাদের দেশের অন্যতম বহুমুখী অভিনেতা, ইরফান খানের অকাল মৃত্যুতে আমি দুঃখিত ও শোকাহত। তার পরিবার, বন্ধুবান্ধব এবং ভক্তদের প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা। ঈশ্বর তাদের শক্তি দিন। তাঁর আত্মা শান্তি পাক,” রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট টুইট করেছেন।

ইরফান খানের পরিবার একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, “তাঁর ভালোবাসা, তাঁর পরিবার যার প্রতি তার সবচেয়ে যত্ন ছিল, সব ছেড়ে তিনি স্বর্গের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন, সত্যিই তিনি নিজের ছাপ রেখে গেছেন। আমরা সকলেই প্রার্থনা করি এবং আশা করি যে তিনি শান্তিতে থাকবেন।”

অন্যতম সেরা এই অভিনেতার মৃত্যুর খবর আসার সঙ্গে সঙ্গেই #IrrfanKhan এবং #RIPIrfan অন্যান্য হ্যাশট্যাগ টুইটারে ট্রেন্ডিং হয়ে ওঠে।

মাত্র চার দিন আগেই, জয়পুরে শনিবার সকালে প্রয়াত হন ইরফান খানের মা, মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর। সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, করোনাভাইরাসের জেরে লকডাউনের কারণে মুম্বই থেকে মায়ের কাছে শেষ দেখা দেখতেও যেতে পারেননি এই অভিনেতা। ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমেই তাঁর প্রয়াত মাকে শেষ শ্রদ্ধা জানান তিনি।

অভিনেতা ইরফানের মৃত্যুর বিষয়ে প্রথম টুইট করেন চলচ্চিত্র নির্মাতা সুজিৎ সরকার। “আমার প্রিয় বন্ধু ইরফান। তুমি লড়াই করেছো... লড়াই করেছো এবং লড়াই করেছো। আমি তোমাকে নিয়ে সবসময়ই গর্ব করব .. আমাদের আবার দেখা হবে... সুতপা আর বাবিলের প্রতি সমবেদনা....তোমরাও খুব লড়েছো, সুতপা তুমি এই লড়াইয়ে সম্ভাব্য সমস্ত কিছু ঢেলে দিয়েছিলে। শান্তি....ওম শান্তি। ইরফান খান সালাম তোমাকে!” টুইট করেন সুজিত। পিকু চলচ্চিত্রে ইরফান খানের সঙ্গে কাজ করেন সুজিত সরকার।

ভারতের অন্যতম সেরা অভিনেতা ইরফান খানের নিউরোএন্ডোক্রিইন টিউমার ধরা পড়ে ২০১৮ সালের মার্চ মাসে, এর পরেই তিনি লন্ডনে চিকিত্সার জন্য যান। তিনি আংরেজি মিডিয়ামের শুটিং করতে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে ভারতে ফিরে আসেন। অল্প কিছুদিন থাকার পরে ফের তিনি লন্ডনে ফিরে যান। লন্ডনে অস্ত্রোপচার ও চিকিত্সা শেষে গত বছরের সেপ্টেম্বরে ভারতে ফিরে এসেছিলেন এই অভিনেতা।

.