This Article is From Jul 28, 2018

সন্তানের মৃত্যুতে ঘণ্টার পর ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাঁদল মা তিমি

জন্মের একঘণ্টার মধ্যেই মারা যায় সন্তানটি

সন্তানের মৃত্যুতে ঘণ্টার পর ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাঁদল মা তিমি

সন্তানের শোকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাঁদে মা তিমিটি

ওয়াশিংটন:

কে বলে সন্তানের মৃত্যুতে শুধু মানুষই ভেঙে পড়ে শোকে ও কান্নায়? সদ্যোজাতের মৃত্যুতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যে তিমি মাছ কেঁদে চলে তাঁর ক্ষেত্রে প্রমাণ হয়ে যায় প্রাণিদের ক্ষেত্রেও সন্তান স্নেহ সেই একই। প্রায় 17 মাস ধরে ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করেছিল তিমিটি। আর পাঁচটা সাধারণ মায়ের মতোই, সেদিনও তার নতুন শিশুকে পৃথিবীতে স্বাগত জানানোর জন্য অপেক্ষা করছিল মা তিমি মাছটি।

মঙ্গলবার সকালে শেষমেশ জন্মও নেয় তিমির কন্যাশিশুটি। জে35 খুনী তিমি প্রজাতিরই মাছ। শুধু তাই না, বিপন্ন তিমি প্রজাতি গুলোরও অংশ সে। ব্রিটিশ কলম্বিয়ায়, ভিক্টোরিয়ার কাছাকাছি জন্ম হয় ওই বাচ্চা তিমিটির। কিন্তু তাঁর পরেই মা তিমিটি বুঝতে পারে তাঁর সদ্য জন্ম দেওয়া বাচ্চাটির শরীরে কোনও সাড়া নেই। জন্মের একঘণ্টার মধ্যেই মারা যায় সন্তানটি।

কিন্তু এত তাড়াতাড়ি সন্তানকে হারাতে হবে এমনটা ভাবতে পারেনি জে35।

সান জুয়ান আইল্যান্ডের সেন্টার ফর হোয়েল রিসার্চ সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান বিজ্ঞানী কে্ন বালকম্ব দ্য ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেছেন, বাচ্চাটি মারা যাওয়ার পর কয়েক ঘন্টা ধরে কাঁদতে থাকে মা তিমিটি। কয়েক ঘণ্টা নয়, দেখা যায় দু’দিন পরেও মৃত শিশুটিকে জলের উপর ভাসিয়ে তুলতে আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে তিমি মা।

ওয়াশিংটন সেন্টার ফর কনজারভেশন বায়োলজি ইউনিভার্সিটির বিশেষজ্ঞ ডেবোরাহ গিলস বলছেন, মা তিমিটি যা করে চলেছে সেটি খুবই কষ্টকর তাঁর পক্ষে। “তিমি বা ডলফিনের ক্ষেত্রে আরেকটি তিমি বা ডলফিনকে ডুবে যাওয়া থেকে বাঁচাতে হলে জলের গভীরে যেতে হবে, নিজের শ্বাস ধরে রেখে অন্য প্রাণিটিকে এবং নিজেকে জলের উপর শ্বাস নেওয়ার জন্য ভেসেও উঠতে হবে। জে35 বারবার এই কাজ করেই চলেছে। সে খায়ও কিছুই।“

"এই ঘটনা বাস্তব। আপনি অন্য কোনো উপায়েই এর ব্যাখ্যা করতে পারবেন না। এ এমন একটি প্রাণি যা তার মৃত শিশুর জন্য দুঃখ প্রকাশ করে, কাঁদে এবং মৃত সন্তানকে কাছ ছাড়া করতেও চায় না। মানুষ যখন তাঁর সন্তান হারায় –একই অনুভূতি হয়”, গিলস বলেন।

এই ধরনের আচরণ খুনী তিমিদের জন্য নতুন নয়। ম্যামোলজির একটি জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় জানা গেছে যে, ইন্দো-প্যাসিফিক এলাকার ডলফিন এবং শুক্রাণু তিমিসহ বিভিন্ন সামুদ্রিক স্তন্যপায়ীও এমন কাজ আগে করেছে। শিম্পাঞ্জিরাও তাদের বাচ্চাদের মৃতদেহগুলি এভাবেই বুকে জড়িয়ে রাখে।

খুনী তিমিদের প্রজাতি বিপন্ন। প্রায় বিলুপ্ত হওয়ার মুখেই রয়েছে তিমি মাছের এই দল। বর্তমানে, এই বংশের মধ্যে মাত্র 76 টি তিমি রয়েছে, যা 1995 সালে সংখ্যাটা ছিল 98 । শুধু তাই না, এও প্রজাতির বিভিন্ন মেয়ে তিমিরা শীঘ্রই জননের নির্দিষ্ট বয়স পেরিয়ে যাবে। গত দুই দশক ধরে, প্রায় 75 শতাংশ নবজাতকই মারা যাচ্ছে। গবেষকরা বলছেন, 2015 সাল থেকে সুস্থ তিমির বাচ্চার জন্ম বন্ধই রয়েছে।

সেন্টার ফর হোয়েল রিসার্চ-এর মতে, সমুদ্রের জলে বিষাক্ত জিনিসের মিশে যাওয়া, জাহাজের ট্র্যাফিক এবং খাদ্যের অভাব এই প্রজাতি গুলোকে আরও বিপন্ন করে তুলেছে।

“জে35 তার সন্তানের দেহ আঁকড়ে রয়েছে এই দৃশ্যটি আমরা যারা তিমি সংরক্ষণের সাথে যুক্ত তাঁদের জন্য বড্ড মর্মপর্শী। হতাশা মানুষেরও আসে, প্রাণিদেরও আসে। আমাদের বিষয়টি সত্যিই ভাবাচ্ছে”- বলেন গিলস।



(এনডিটিভি এই খবর সম্পাদিত করেনি, এটি সিন্ডিকেট ফিড থেকে সরাসরি প্রকাশ করা হয়েছে.)Click for more trending news


.