This Article is From Oct 02, 2019

বাংলায় গান্ধি জয়ন্তী উদযাপন, মহাত্মার জন্মবার্ষিকীতেও লাগল রাজনীতির রং

Gandhi Jayanti 2019: রাজ্যের বিভিন্ন বিদ্যালয়ে গান্ধি জয়ন্তীতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং সেমিনার আয়োজন করা হয়

বাংলায় গান্ধি জয়ন্তী উদযাপন, মহাত্মার জন্মবার্ষিকীতেও লাগল রাজনীতির রং

West Bengal: গোটা দেশের মতো এ রাজ্যেও পালিত হল গান্ধি জয়ন্তী (ফাইল ছবি)

কলকাতা:

বুধবার দিনভর শোভাযাত্রা ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে রাজ্যে পালন করা হল মহাত্মা গান্ধির জন্ম সার্ধোশতবর্ষ।তবে উদযাপনের (Gandhi Jayanti 2019) পাশাপাশি জাতির জনককে নিয়ে রাজনীতিও হল ব্যাপক। সকাল থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় (West Bengal) নানা কর্মসূচির মাধ্যমে গণসংযোগ করা হল। ব্যারাকপুরের গান্ধি ঘাটেও একটি বিশেষ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। ব্যারাকপুরের বিভিন্ন জায়গায় শিশু ও ফুটপাতবাসীদের নিয়ে একটি নকল চরকা কাটার অনুষ্ঠানের আয়োজন করে কয়েকটি এনজিও, গাওয়া হয় গান্ধিজির সঙ্গে সম্পর্কিত ভজনও। দেড়শতম জন্মবার্ষিকীতে মহাত্মা গান্ধির (Mahatma Gandhi) প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান যে শহরের ঐতিহাসিক গান্ধি ভবনকে রাজ্য সরকার নতুন করে সংস্কার করেছে এবং আজ (২ অক্টোবর) থেকেই তা সর্বসাধারণের দর্শনের জন্যে উন্মুক্ত হচ্ছে। বেলেঘাটায় অবস্থিত ওই বাড়িতেই ১৯৪৭ সালে দেশের স্বাধীনতা অর্জনের আগে আগেই প্রায় সপ্তাহ তিনেক কাটান মহাত্মা গান্ধি। সেটিকেই পশ্চিমবঙ্গ সরকার একটি যাদুঘর হিসাবে গড়ে তুলেছে, যার নাম দেওয়া হয়েছে গান্ধি ভবন।

“গান্ধিজির আত্মা কষ্ট পেত”, সরকারকে কটাক্ষ করে বললেন সনিয়া গান্ধি

বাপুকে (Mahatma Gandhi) শ্রদ্ধা জানিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইট করেন, "মহাত্মা গান্ধিজির ১৫০তম জন্মবার্ষিকীতে জানাই প্রণাম। আজ আমরা মেয়ো রোডে গান্ধিমূর্তিতে শ্রদ্ধা জানিয়ে এই দিনটি উদযাপন করব। বেলেঘাটায় গান্ধি ভবনের সংস্কার করেছে বাংলার সরকার। সেই ভবনেরও আজ উদ্বোধন হবে"।

১৯৪৭ সালে দেশের স্বাধীনতা অর্জনের আগে আগেই কলকাতার বেলেঘাটা অঞ্চলের একটি বাড়িতে প্রায় ৩ সপ্তাহ ছিলেন মহাত্মা গান্ধি। সেই সময়ে তাঁর কিছু বিরল ছবি এবং ব্যবহৃত জিনিসপত্র নিয়ে শহরে তৈরি হয়েছে একটি গান্ধি স্মৃতি সংগ্রহশালা। আজ (২ অক্টোবর) একটি পূর্ণাঙ্গ যাদুঘর হিসাবে সর্বসাধারণের দর্শনের জন্যে উন্মুক্ত করা হবে সেটি। 

দাঙ্গাবাজদের শান্ত করার জন্য দেশ স্বাধীন হওয়ার ঠিক আগেই ১৯৪৭ সালের অগাস্ট মাসে বেশ কয়েকজন অনুগামীকে নিয়ে এই বাড়িতেই ছিলেন মহাত্মা গান্ধি।  শহরে তখন আগুনে জ্বলছিল। গান্ধিজি ও তাঁর অনুগামীরা এই বাড়িটিতেই এসেই থাকেন তখন এবং সেই সময় ৩১ অগাস্ট থেকে অনির্দিষ্টকালের উপবাসেও বসেন এই বাড়িতেই। পরে দুই সম্প্রদায়ের নেতারা বাপুর কাছে এসে ক্ষমা চেয়ে তাঁর পায়ের কাছে অস্ত্র আত্মসমর্পণ করার পরেই গান্ধিজি ৪ সেপ্টেম্বর নিজের অনশন ভাঙেন। 

গান্ধিজিকে শ্রদ্ধা নিবেদন করে "আইনস্টাইন চ্যালেঞ্জ" নেওয়ার প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রী মোদির

গান্ধিজির জন্মজয়ন্তী পালন করে প্রদেশ কংগ্রেসও। কলকাতা সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় গান্ধিজির পোস্টার এবং প্ল্যাকার্ড সহ পদযাত্রা বের করে তাঁরা। মহাত্মা গান্ধির ১৫০ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে গান্ধি মূর্তির পাদদেশ পর্যন্ত প্রদেশ কংগ্রেস আয়োজিত পথযাত্রায় অংশ নেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র।  সেই অনুষ্ঠান থেকে এনআরসি প্রসঙ্গে বিজেপি সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন তিনি। যারা মহাত্মা গান্ধির নীতি বুঝতে ব্যর্থ হন তারাই এনআরসি সম্পর্কে এবং মুসলমানদের দেশ থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার বিষয়ে কথা বলেন, বলেন তিনি। "রাজ্যে তৃণমূল এবং কেন্দ্রে বিজেপি, উভয় সরকারই মহাত্মা গান্ধির নীতি ও আদর্শ বুঝতে অক্ষম। সুতরাং তাদের গান্ধিজি ও তাঁর সংগ্রামকে সম্মান করার ভান করা বন্ধ করা উচিত", বলেন সোমেন মিত্র।

ট্রাম্প তাঁকে দেশের পিতা বললে, আপত্তি করলেন না কেন, প্রশ্ন অশোক গেহলতের

গান্ধিজি  সারা জীবন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য লড়াই করেছিলেন। সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ করেই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি আরও বলেন যে "যারা রাজ্য ও কেন্দ্রের ক্ষমতায় আছেন তারা তাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য পূরণের জন্য সেই সম্প্রীতি নষ্ট করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ" ।

মঙ্গলবার কলকাতায় এসে এনআরসি নিয়ে প্রচার করেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। কোনও হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন, শিখ, পার্সী এবং খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী শরণার্থীদেরই দেশ ত্যাগ করতে বলা হবে না বলে আশ্বাসও দেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি। কেন্দ্রের প্রস্তাবিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলে আফগানিস্তান, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান থেকে এদেশে আসা হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সী এবং খ্রিস্টানদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে বলে আশ্বস্ত করেন তিনি।

“গান্ধিজির আত্মা কষ্ট পেত”, সরকারকে কটাক্ষ করে বললেন সনিয়া গান্ধি

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রের বিজেপিকে লক্ষ্য করে করা আক্রমণের জবাব দেন বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা। বিজেপির জাতীয় সম্পাদক রাহুল সিনহা বলেন, কংগ্রেসের আচরণ এমন যেন গান্ধিজি কংগ্রেস এবং নেহেরু তথা গান্ধি পরিবারের ব্যক্তিগত সম্পত্তি। "মহাত্মা গান্ধি জাতির জনক। গান্ধিজি কংগ্রেস পার্টি বা নেহেরু-গান্ধি পরিবারের ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। স্বাধীনতার পর থেকে তারা (কংগ্রেস) এই ধারণা তৈরি করার চেষ্টা করেছিল যে গান্ধিজি এবং কংগ্রেস দল একেবারে সমার্থক। কংগ্রেসের থেকে আমাদের গান্ধিজির বিষয়ে শিক্ষা নেওয়ার দরকার নেই" বলেন গেরুয়া দলের ওই নেতা।

‘‘যারা মহাত্মা গান্ধির আদর্শকে বোঝেনি তারাই এনআরসির কথা বলছে'': কংগ্রেস

এদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, তৃণমূল কংগ্রেস বরাবরই সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াই করে এসেছে এবং আজও তা করছে। তবে বাংলায় কিছুতেই নাগরিকপঞ্জিকরণ চালু হতে দেওয়া হবে না, সাফ জানান পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

গত সপ্তাহেই, পশ্চিমবঙ্গ সরকার সমস্ত প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধানদের তাদের বিদ্যালয় চত্বরে মহাত্মা গান্ধির দেড়শতম জন্মবার্ষিকী পালন করার জন্য নির্দেশ দেয়। স্কুলগুলি গান্ধি জয়ন্তীতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং সেমিনার আয়োজন করে।

"রাজনীতি নেই", বললেন অমিত শাহ, দেখুন ভিডিও:



(এনডিটিভি এই খবর সম্পাদনা করেনি, এটি সিন্ডিকেট ফিড থেকে সরাসরি প্রকাশ করা হয়েছে।)
.