অন্যান্যবারের মতো এবারের ঈদের তেমন ব্যস্ততা বা ছোটাছুটি চোখে পড়েনি
কলকাতা: একমাসের রমজান শেষে সোমবার গোটা দেশ মেতে ওঠে খুশির ঈদে। তবে এবারের ঈদ-উল-ফিতরের খুশি খানিকটা যেন কেড়ে নিয়েছে করোনা ভাইরাস। লকডাউনের কারণে বাড়ির চার দেওয়ালের মধ্যেই এদিন ঈদের খুশি ভাগ করে নিলেন মুসলিম ধর্মালম্বীরা। অন্যান্যবারের মতো এবারের ঈদের তেমন ব্যস্ততা বা ছোটাছুটি চোখে পড়েনি এ রাজ্যে। কলকাতার রাস্তায় সাইক্লোন আমফানের কারণে উপড়ে যাওয়া গাছের ডাল, গুঁড়ি, বিদ্যুৎ এর খুঁটি ঠিক করতে ব্যস্ত, করোনা ভাইরাসের সঙ্গে মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা বসিয়েছে সাইক্লোন আমফান। শহরে ঈদের অন্যতম কেনাকাটার জায়গা হিসেবে পরিচিত পার্ক সার্কাস ও খিদিরপুরের বেশিরভাগ দোকানই ছিল এদিন বন্ধ, কয়েকজনকে দেখা গিয়েছে শুধুমাত্র নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রি কেনাকাটা করতে।
আমফানের পর বিদ্যুৎ, পানীয় জল পরিষেবা ফেরানোর দাবিতে বিক্ষোভ অব্যাহত
উত্তর কলকাতার নাখোদা মসজিদ সংলগ্ন জাকারিয়া স্ট্রিটেও ঈদের আমেজ উধাও, প্রতি বছর এই এলাকাটিতে ঈদ উপলক্ষ্যে একাধিক খাবার ও উপহার সামগ্রির দোকানে জমজমাট হয়ে ওঠে।
এদিন সকালে স্ত্রী ও কন্যার সঙ্গে বাড়িতেই ঈদের নমাজ পড়েন কলকাতা পুরসভার মেয়র এবং রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “করোনা ভাইরাস এবং সাইক্লোন আমফানে ক্ষতিগ্রস্তদের দ্রুত স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফেরার জন্য ঈশ্বরের কাছে আমাদের সম্মিলিত প্রার্থনা”।
শিলিগুড়ির জামা মসজিদে ২ জনকে নমাজে অংশ নিতে দেওয়া হয়
প্রতি বছর ঈদ-উল-ফিতরের দিন রেড রোডে নমাজ হয়, এবার তা করা যায়নি করোনা ভাইরাস লকডাউনের কারণে, সেই দুঃখ ঝড়ে পড়ল বছর পঁচিশের তথ্য প্রযুক্তি কর্মী মজিদ আলির গলায়। মাত্র পাঁচ বছর বয়স থেকেই তিনি রেড রোডের নমাজে অংশ নেন বলে জানিয়েছেন মজিদ আলি। তাঁর কথায়, “আজ আমরা বাড়িতেই নমাজ পাঠ করেছি। উৎসবের সঙ্গে যে হুল্লোড় থাকে তা আমি মিস করেছি এবার। এ বছর, আমার মা ও বোনের সঙ্গে নমাজে অংশ নিয়েছি আমি”।
৩০ মে পর্যন্ত কলকাতায় কোনও উড়ান নয়, কেন্দ্রকে জানাবেন মুখ্যমন্ত্রী
কামারহাটির ফুলবাগান এলাকার রিক্সাচালক ইরফান বলেন, তিনি ও তাঁর পরিবার এক আত্মীয়ের বাড়িতে যান এবং ধন্যবাদজ্ঞাপন প্রার্থনা সারেন। ইরফান বলেন, “এবছর, আমরা কামারহাটির বড়ি মসজিদে যেতে পারিনি, আমাদের ইমাম বাড়িতেই থাকতে বলেছিলেন। উৎসব উপলক্ষ্যে আমার স্ত্রী সিমাই তৈরি করেছিলেন, আমি তা না খেয়ে থাকতে পারি না”।
বেঙ্গল ইমাম অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মহম্মদ ইয়াহিয়া জানান, রাজ্যের ২৬,০০০ মসজিদ কমিটির তরফে বাড়িতেই পরিবারের সঙ্গে নমাজ পাঠ করতে বলা হয়েছে। তাঁর কথায়, “আমি যতদূর জানি, এবছর শহর এবং তার বাইরে বিভিন্ন জায়গায় বড় জমায়েত ছাড়াই ঈদ-উল-ফিতর পালিত হচ্ছে”।
একই সুর শোনা গিয়েছে, নাখোদা মসজিদের ইমাম শফিক কাসমির গলাতেও, তিনি বলেন, “আজ সকালে কোথাও কোনও মসজিদের আশপাশে জমায়েত হয়নি। কয়েকজনকে মাত্র মসজিদে ঢুকতে দেওয়া হয়েছে। করোনা ভাইরাস অতিমারীর বিরুদ্ধে শক্তি দেওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে আমরা প্রার্থনা করেছি”।
এত বেশি গাছ পড়ে যাওয়ায় কলকাতায় বাড়বে দূষণের মাত্রা, আশঙ্কা পরিবেশবিদদের
এদিন ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে ট্যুইট করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি লেখেন, “ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষ্যে সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা। বাড়িতেই এই মহৎ উৎসব পালিত হোক। এটা কঠিন সময়, তবে আমি নিশ্চিত যে, আমরা এই চ্যালেঞ্জে জয়ী হব। আপনাদের সবাইকে আমার অভিনন্দন”।
(ANI এর তথ্য সংযুক্ত হয়েছে)
(এনডিটিভি এই খবর সম্পাদনা করেনি, এটি সিন্ডিকেট ফিড থেকে সরাসরি প্রকাশ করা হয়েছে।)