This Article is From Sep 12, 2019

Durga Puja 2019: ‘‘হেই মা দু্গ্গা’র অস্ত্র আজও ভোঁতা! অ-সুর বধ হল কই?’’: লোপামুদ্রা মিত্র

টেকনোলজির দাপটে হারিয়ে যাওয়া গান ফেরাতে ১৩ সেপ্টেম্বর অর্থাৎ আগামীকাল অহীন্দ্র মঞ্চে কোন কোন গান বন্ধুদের সঙ্গে তাঁকে ( Lopamudra Mitra) দেখা যাবে?  

Durga Puja 2019: ‘‘হেই মা দু্গ্গা’র অস্ত্র আজও ভোঁতা! অ-সুর বধ হল কই?’’: লোপামুদ্রা মিত্র

Durga Puja 2019: 'নতুন গানের পাব্বণী'তে লোপামুদ্রা মিত্র

কলকাতা:

পুজো এলেই কী মনে পড়ে তাঁর? আজও কেন অসুরদলনীর কাছে তাঁর প্রার্থনা, অ-সুর বধের! টেকনোলজির দাপটে হারিয়ে যাওয়া গান ফেরাতে ১৩ সেপ্টেম্বর অর্থাৎ আগামীকাল অহীন্দ্র মঞ্চে কোন কোন গান বন্ধুদের সঙ্গে তাঁকে দেখা যাবে?  কোন লক্ষ্য নিয়ে 'নতুন গানের পাব্বণী'র সূচনা করেছেন? আগামীকাল বাংলার শ্রোতা কী উপহার পাবে লোপামুদ্রা মিত্রের ( Lopamudra Mitra) থেকে?  পুজোর গান নিয়ে, আগামীকালের অনুষ্ঠান নিয়ে, তাঁর চাওয়াপাওয়া নিয়ে অনর্গল শিল্পী। ফোনেটিক আড্ডায় উপালি মুখোপাধ্যায়

প্রশ্ন: পুজো এলেই কী মনে পড়ে?

উত্তর: একদম ছোটবেলায় নতুন জামা। গানের দুনিয়ায় পা রাখার পর অবশ্যই পুজো মানেই নতুন বাংলা গান। পাড়ায় পাড়ায় মাইকে বাজত হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, মান্না দে, আরতি মুখোপাধ্যায়, তরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়. পিন্টু ভট্টাচার্যের গান। হইহুল্লোড় আর পুজোর গান শুনেই কেটে যেত চারটে দিন। বড় হওয়ার পরে অপেক্ষায় থাকতাম সুমন চট্টোপাধ্যায়, নচিকেতা চক্রবর্তী, অঞ্জন দত্তের গানের।

প্রশ্ন: সেই নস্ট্যালজিয়া এখনকার পুজোয় খুঁজে পান?

উত্তর: এখন থিমের পুজোয় মাইকে গান শুনতে পাব! আশাই করি না। তবে মনে পড়ে প্রথম যখন আমার গানের অ্যালবাম বেরোল 'হেই মা দুগ্গা', সেবছর পুজো প্যান্ডেলে গানটা বেজেছিল। যদিও অ্যালবাম রিলিজ হয়েছিল ফেব্রুয়ারিতে। নিজের কানে গান বাজতে শুনে সে কী উত্তেজনা! জীবনে কোনোদিন ভাবিইনি আমার গান পুজোর প্যান্ডেলে বাজবে।

‘ভালোবাসার আখড়া' বসাতে আসছে ‘খ্যাপা'

প্রশ্ন: এখন সেই পুজো প্যান্ডেলের গান ফিকে হতে হতে আর নেই। ব্যথা দেয়?

উত্তর: ব্যথা দেয় তো বটেই। তার সঙ্গে আরও যন্ত্রণা, যদিও বা গান বাজে সেটা ভেজপুরি! বাংলা গান নয়।

প্রশ্ন: তাহলে কি বাংলা আধুনিক গানের আকাল পড়েছে? হেমন্ত-সন্ধ্যা-মান্না সহ গানের স্বর্ণযুগের পরে? 

উত্তর: কে বলেছে? নয়ের দশকে সুমনদা, নচিদা সহ আমাদের দলটাও তো হইহই করে বাংলা গান গেয়েছি।

প্রশ্ন: তাহলে আর বাংলা গান বাজে না কেন উৎসবে? ফাঁকটা কোথায়? 

উত্তর: সেটা না আমিও ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না। আমাদের গানে, বাঙালির মনে, শ্রোতার মনের ফাঁক না দেশবাসীর মনের ফাঁক--বুঝতে হবে আগে।

“100 Days And Other Stories”: সুরের নেশায় মশগুল এক ‘অভিযাত্রিক'-এর গল্প

প্রশ্ন: এর জন্য কি প্রযুক্তি দায়ী? 

উত্তর: প্রযুক্তির কল্যাণে যেটা হয়েছে সেটা হল, মানুষের মনসংযোগ কমেছে। বিশেষ করে মুঠোফোনের দৌলতে এখন সবকিছুই হাতের মুঠোয় তো! ফলে, মন দিয়ে কিছু দেখা বা শোনার ইচ্ছেটাই যেন মানুষের নষ্ট হয়ে গেছে। স্মৃতিশক্তি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে সবার। এখন তো সোশ্যালের দাপটে ঘরে বসে সব দেখছি, শুনছি আমরা। কেন কষ্ট করে আবার হলে গিয়ে ছবি দেখব! বা ধৈর্য ধরে শিল্পীর গান শুনতে যাব? এর জন্যে ইউ টিউব যথেষ্ট।

প্রশ্ন: সেই জায়গা থেকে শ্রোতাদের বের করতেই কি 'গান পাব্বণী'-র সূচনা? 

উত্তর: আমি খুবই আশাবাদী। আমার মনে হয়, এখনও সবাই সবকিছু করেন না। এখনও কিছু মানুষ বসে গান শুনতে ভালোবাসেন। তাঁদের জন্য আমার এই বিশেষ অনুষ্ঠান। যেখানে রাগাশ্রয়ী বাংলা গান, কনটেম্পোরারি আর ব্যান্ডের নতুন গান শোনা যাবে। আমি বাংলা গানের দুনিয়ার সমস্ত দিক ছুঁতে চেষ্টা করেছি। যাতে শ্রোতারা বোঝেন. এখনও যে বাংলা গান তৈরি হচ্ছে এবং তা কান পেতে শোনার মতোই।  অন্তত, একটা দিন যাতে শ্রোতারা ধৈর্য্য ধরে পুরোটা শুনে তাঁদের মতামত জানান। এখন তো কেউ পুরো গানই শোনেন না!।

otp2stmg

প্রশ্ন: আগামীকালের 'গান পাব্বণী'তে কাদের গান শুনতে পাবেন শ্রোতা? এখানে জয় সরকারের ভূমিকা কী?

উত্তর:  প্রথমেই বলি এই গান পাব্বণীর উদ্যোগ লোপামিত্রা মিত্রের গান নিয়ে অবসেশনের একটা নমুনা। এতে জয় সরকার মানে আমার স্বামী শারীরিক ভাবে যুক্ত না থাকতে পারলেও মানসিকভাবে ভীষণ সাপোর্ট আর প্রশ্রয় দেন আমাকে। আর পাশে রয়েছেন আমার একদল গানপাগল বন্ধু। যেমন, শ্রীকান্ত আচার্য, রূপঙ্কর, শুভমিতা, রাঘব, মনোময়, উজ্জয়িনী, সুরজিৎ, ঋতিকা সাহানি, ব্যান্ড পৃথিবী সহ অনেকের নতুন গান, যাকে আমরা পুজোর গান হিসেবে দেখে থাকি সেসব শুনতে পাবেন।

প্রশ্ন: লেখা, সুর কাদের? দুবছর ধরে কেমন সাড়া পাচ্ছেন?

উত্তর: জয় সরকারের সুর দেওয়া গান আছে। সুরজিৎ সুর দিয়েছেন। এছাড়া, রয়েছেন ভাস্বর, রাজীব, অর্ণা শীল এবং আরও অনেকে। আর শ্রোতাদের অসংখ্য ধন্যবাদ, তাঁরা আমার পাগলামিকে সানন্দে গ্রহণ করেছেন। গত বছর উত্তম মঞ্চে অনুষ্ঠান করেছিলাম। কানায় কানায় পূর্ণ সভাগৃহে। একটা সময় আমার ছেলেমেয়েরা মাটিতে বসে শ্রোতাদের আসন ছেড়ে দিয়েছিল। এবছরও আশা করছি তেমনটাই হবে।

Lata Mangeshkar: ৯০ তম জন্মদিনে ‘ডটার অফ নেশান' পাচ্ছেন লতা মঙ্গেশকর?

প্রশ্ন:গান পাব্বণীর পাশে এবছর মা দুগ্গার কাছে লোপামুদ্রা মিত্রের প্রার্থনা কী?

উত্তর: (হেসে ফেলে) ওই একই। ১৯৯৬-তে যা বলেছিলাম, হেই মা দুগ্গা, তোর অস্ত্রসস্তর ভোঁতা হল, দেখেও কি দেকনি! মা যেন সব দেখেও কিছুই দেখতে পান না! আর মাকেই বা দোষ দিয়ে লাভ কী? আমাদেরই তো স্বভাব দাঁড়িয়ে গেছে, সব দেখেও কিছুই না দেখার!

.