This Article is From Feb 19, 2020

রাতারাতি বিদেশি! নাগরিক তালিকায় নাম না থাকলে কী হতে পারে জানতে পড়ুন এই মহিলার জীবনের গল্প

Assam NRC: অসমের বক্সায় বাস করেন জাবেদা বেগম, দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ তাঁর স্বামী রেজ্জাক আলি, ফলে সংসার চলছে ওই মহিলার উপার্জনের ভিত্তিতেই

NRC: মামলা লড়তে জাবেদা বেগম ইতিমধ্যেই নিজের তিন বিঘা জমি বিক্রি করেছেন

হাইলাইটস

  • অসম নাগরিকপঞ্জির তালিকা থেকে বাদ পড়েছে ১৯ লক্ষ মানুষের নাম
  • বিদেশি হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে জাবেদা বেগম নামে এই মহিলাকেও
  • আইনি লড়াই লড়তে লড়তে প্রায় নিঃস্ব তিনি, তবু প্রমাণ হয়নি তাঁর নাগরিকত্ব
গুয়াহাটি:

জীবন যুদ্ধে বহুদিন ধরেই যুঝছেন অসমের বক্সা জেলার বাসিন্দা জাবেদা বেগম, দীর্ঘদিন ধরেই তাঁর স্বামী রেজ্জাক আলি অসুস্থ অবস্থায় ঘরে পড়ে রয়েছেন, ফলে সংসার চালাতে উপার্জন করতে এখন বেরোতে হচ্ছে বছর পঞ্চাশের ওই মহিলাকেই। তবু প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়ে যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু মরার উপর খাঁড়ার ঘা পড়ল তখনই যখন তিনি জানতে পারলেন জাতীয় নাগরিকপঞ্জি তালিকায় (NRC) তিনি নাকি বিদেশি ঘোষিত হয়েছেন। না, তারপরেও দমে যাননি তিনি। নিজের এবং নিজের পরিবারের নাগরিকত্ব প্রমাণ (Assam NRC) করার প্রয়োজনে জাবেদা বেগম দ্বারস্থ হয়েছিলেন গুয়াহাটি হাইকোর্টের, কিন্তু সেখানেও মামলা  হেরে গেলেন তিনি। অসমের (Assam) বিদেশি ট্রাইব্যুনাল তাঁকে বিদেশি আখ্যা দিয়েছে, নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে হলে তাঁর এখন একমাত্র অবলম্বন সুপ্রিম কোর্ট। 

জাবেদা বেগমের সংসারে স্বামী ছাড়াও ৩ মেয়ে ছিল। যদিও তাঁদের মধ্যে এক মেয়ে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে এবং অপরজন নিখোঁজ। সংসারে এখন সন্তান বলতে একটিই, বছর পাঁচেকের আসমিনা। আর তাই কোলের অবলম্বনটির কথা ভেবেই আইনি লড়াই লড়ছেন জাবেদা। নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে না পারলে কী হবে আসমিনার ভবিষ্যৎ, তা নিয়েই ভাবনার পাহাড় চেপে বসেছে তাঁর মাথায়।

জমি, ব্যাঙ্কের কাগজ নাগরিকত্ব প্রমাণে ব্যবহার করা যাবে না: গুয়াহাটি হাইকোর্ট

গোয়াবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা ওই মহিলা ও তাঁর পরিবারকে ২০১৮ সালে ট্রাইব্যুনাল বিদেশি ঘোষণা করেছিল। পরে নাগরিকপঞ্জি তালিকাতেও স্থান হয়নি তাঁদের। টানা এক বছর নিয়মিত আদালতে চক্কর কেটেছেন তিনি। কিন্তু তারপরেও নিজের পরিবারের নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে পারেননি তিনি। হাইকোর্ট জানিয়েছে, জাবেদার জমির কর দেওয়ার কাগজ, ব্যাংকের নথিপত্র এবং প্যান কার্ড এই সব তাঁর নাগরিকত্বের চূড়ান্ত প্রমাণ নয়।

"আমার যা ছিল তা আমি প্রায় সব খরচ করে মামলা চালিয়েছি। এখন আমার কাছে আইনি লড়াইয়ের জন্যে আর কোনও সংস্থান নেই", কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন তিনি। মামলা লড়ার খরচ জোগাড়ের জন্যে নিজের তিন বিঘা জমিও বিক্রি করে দিয়েছেন জাবেদা।

সিএএ বিরোধী বিক্ষোভ প্রশমিত করতে অসমে ইনার লাইন পারমিট চালুর প্রস্তাব

অসমে জাবেদা বেগমের মতোই আরও অনেক মানুষই রাতারাতি বিদেশি বলে ঘোষিত হয়েছেন। তাঁরা এখন বুঝতে পারছেন না নিজেদের দারিদ্র্যের সঙ্গে যুঝবেন নাকি নাগরিকত্ব প্রমাণ করার জন্য মরিয়া হয়ে লড়াই করবেন। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনেই অসমে যে জাতীয় নাগরিকপঞ্জিকরণ হয়েছে সেই চূড়ান্ত তালিকা থেকে প্রায় ১৯ লক্ষ লোকের নাম বাদ গেছে। 

.