This Article is From May 23, 2020

আমফান-দুর্গত বাংলায় জল, বিদ্যুতের মতো পরিষেবা ফেরাতে রাজ্য সরকারের আহ্বানে সেনা পাঠাল কেন্দ্র

রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর পানীয় জল, স্যানিটেশন এবং বিদ্যুৎ সরবরাহের মতো প্রয়োজনীয় পরিষেবাগুলি স্বাভাবিক পথে ফিরিয়ে আনতে ‘২৪x৭ ভিত্তিতে কমান্ড মোডে সর্বাধিক শক্তি’ চেয়ে আহ্বান জানিয়েছে।

আমফান-দুর্গত বাংলায় জল, বিদ্যুতের মতো পরিষেবা ফেরাতে রাজ্য সরকারের আহ্বানে সেনা পাঠাল কেন্দ্র

প্রধানমন্ত্রী গতকাল আমফানে ক্ষতিগ্রস্থ অঞ্চলগুলি বিমানে পরিদর্শন করেন

কলকাতা:

ঘূর্ণিঝড় আমফান বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো ও পরিষেবা। তাত্ক্ষণিকভাবে এই সমস্ত সুবিধা পুনরুদ্ধারের জন্য সেনাবাহিনীর সহায়তার জন্য অনুরোধ করে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। সেই দাকে সাড়া দিয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনী কলকাতা জেলা কর্তৃপক্ষকে ঘূর্ণিঝড় আমফান পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলায় সহায়তা করার জন্য তিনটি বাহিনী পাঠিয়েছে বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা পিটিআই। আরও দু'টি দলকে উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলায় পাঠানো হয়েছে। বিদ্যুৎ ও জলের সমস্যা নিয়ে কলকাতা ও পার্শ্ববর্তী জেলাগুলির বেশ কয়েকটি জায়গায় বিক্ষোভের পরেই রাজ্য সরকার সাহায্যের আবেদন জানায়। রাজ্যে স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনতে কাজ করার সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন নাগরিকদের প্রতি।

আজ, শনিবার বিকেলে তিনটি টুইটে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর পানীয় জল, স্যানিটেশন এবং বিদ্যুৎ সরবরাহের মতো প্রয়োজনীয় পরিষেবাগুলি স্বাভাবিক পথে ফিরিয়ে আনতে ‘২৪x৭ ভিত্তিতে কমান্ড মোডে সর্বাধিক শক্তি' চেয়ে আহ্বান জানায়। 

স্বরাষ্ট্র বিভাগ জানায়, “পশ্চিমবঙ্গ সরকার প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো ও পরিষেবা তাত্ক্ষণিক পুনঃস্থাপনের জন্য ২৪x৭ ভিত্তিতে ইউনিফাইড কমান্ড মোডে সর্বাধিক শক্তির আহ্বান জানাচ্ছে। সেনাবাহিনীর সহায়তা চাওয়া হয়েছে এবং এনডিআরএফ এবং এসডিআরএফ দল মোতায়েন করা হয়েছে।” রাজ্য জনবল ও সরঞ্জাম সরবরাহে রেলপথ এবং বেসরকারি ক্ষেত্রের কাছ থেকেও সহায়তা চেয়েছে এবং জানিছে যে মোকাবিলা বাহিনী ইতিমধ্যে ১৮৫ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা বেগে হওয়া ঘূর্ণিঝড় এবং ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে উপড়ে যাওয়া ও ধ্বংস হওয়া হাজার হাজার গাছ ও বাড়িঘরের ধ্বংসাশেষ পরিষ্কার করতে কাজ করছে।

“রেললাইন, বন্দর এবং বেসরকারি বিভিন্ন ক্ষেত্রও দল ও সরঞ্জাম সরবরাহের জন্য অনুরোধ করেছে। পানীয় জল এবং নিকাশী পরিকাঠামো দ্রুত পুনরুদ্ধার করা হচ্ছে। পিএইচইকে (জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ) জলের পাউচ সরবরাহ করতে বলা হয়েছে... জেনারেটরের বন্দোবস্ত করা যেখানে প্রয়োজন রয়েছে। শতাধিক দল উপড়ে পড়া গাছগুলি সরিয়ে ফেলার জন্য কাজ করছে,” লেখা হয়েছে টুইটে। স্বরাষ্ট্র বিভাগ আরও জানিয়েছে যে কোনও সমস্যা মোকাবিলায় পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ কড়া সতর্কতা অবলম্বন করছে।

বুধবার উপকূলীয় বাংলায় ঘূর্ণিঝড়টি আছড়ে পড়ে। হাজার হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত এবং হাজারে হাজারে গাছ এবং বৈদ্যুতিক খুঁটি উপড়ে গিয়েছে ঝড়ের দাপটে। কলকাতা সহ বিভিন্ন জেলায় ধ্বংসের ছবি স্পষ্ট। কলকাতায় ঝড়ে বহু বাড়ির ছাদ উড়ে গিয়েছে, দেয়াল পড়ে গিয়েছে এবং গাছ উপড়ে যাওয়ার ফলে রাস্তাগুলি বন্ধ হয়ে বিশাল ক্ষতির মুখে পড়েছে শহর। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন এই ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষয়ক্ষতির মূল্য প্রায় ১ লক্ষ কোটি টাকা।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গতকাল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে আমফানে ক্ষতিগ্রস্থ অঞ্চলগুলি বিমানে পরিদর্শন করেন। পরিস্থিতির গুরুত্ব বিচার করে তিনি রাজ্যকে এক হাজার কোটি টাকার সহায়তার ঘোষণা করেন।

৭২ জনের মৃত্যু হয়েছে ঘূর্ণিঝড় আমফানের তাণ্ডবে। ওড়িশার কিছু অংশেও আমফানের আঘাত স্পষ্ট। কোভিড-১৯ সংকট মোকাবিলা করার আবহেই দুই রাজ্যকেই মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা করতে হয়েছে সজাগ থেকে। 

লক্ষ লক্ষ ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের ত্রাণ ও পুনর্বাসনের কথা মাথায় রেখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেনাবাহিনীর সমর্থন নেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেন খোদ রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়।

“মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেনাবাহিনীর সমর্থন ও সহায়তা চাইছেন, এটি একটি ভাল পদক্ষেপ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে চেষ্টা চলছে এবং মানুষকে ধৈর্য ধরে শান্ত থাকার জন্য আবেদন করছি। কর্তৃপক্ষকে যোগাযোগ, বিদ্যুৎ ও অন্যান্য পরিষেবা দ্রুত পুনরুদ্ধার করতে হবে,” রাজ্যপাল টুইটে লেখেন।

.