৩৮ বছরের ওই পরিযায়ী শ্রমিক উত্তরপ্রদেশের বস্তি জেলার বাসিন্দা ছিলেন বলে জানা গিয়েছে।
ঝাঁসি, উত্তরপ্রদেশ: ট্রেনের মধ্যে মিলল ৩৮ বছরের এক পরিযায়ী শ্রমিকের মৃতদেহ (Migrant Worker's Body)। ঘটনা উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh)। সেখানকার ঝাঁসি রেল স্টেশনে একটি ট্রেনের শৌচাগারের মধ্যে ওই শ্রমিকদের মৃতদেহ আবিষ্কৃত হয়। মনে করা হচ্ছে বেশ কয়েকদিন ধরেই দেহটি ওখানে পড়েছিল। রেলকর্মীরা ট্রেনটিকে জীবাণুমুক্ত করার সময়ই তাঁরা দেহটি দেখতে পান। দেহটি উত্তরপ্রদেশের বস্তি জেলার মোহনলাল শর্মার বলে সনাক্ত করা গিয়েছে। মোহনলাল মুম্বইয়ে দৈনিক মজুর হিসেবে কাজ করতেন। কিন্তু লকডাউন পরবর্তী সময়ে দেশের লক্ষ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিকদের মতোই তিনিও কাজ হারিয়ে বেকার হয়ে পড়েছিলেন।
গত ২৩ মে তিনি অন্য পরিযায়ী শ্রমিকদের সঙ্গে বাড়ি ফিরতে ঝাঁসি পৌঁছন। জেলা প্রশাসনের তরফে তাঁদের গোরক্ষপুরের ট্রেন ধরতে ওই স্টেশনে যেতে বলেন। গোরক্ষপুর থেকে ৭০ কিমি দূরে বস্তি জেলা।
তবে এখনও পরিষ্কার নয় যে, ট্রেনটি গোরক্ষপুর পর্যন্তই গিয়েছিল, নাকি পরে সেটিকে বিহারে পাঠানো হয় সেখানকার পরিযায়ী শ্রমিকদের ফিরিয়ে আনতে। এবিষয়ে এখনও সরকারি ভাবে কিছু জানানো হয়নি।
তবে শেষ পর্যন্ত ট্রেনটি ঝাঁসিতে ফিরে এসেছিল বুধবার। আর তারপরই বৃহস্পতিবার রেলকর্মীরা চমকে ওঠেন শৌচাগারের মধ্যে মোহনলালের নিথর দেহ দেখে।
মোহনলালের আত্মীয় কানহাইয়া লাল শর্মা জানাচ্ছেন, ‘‘ঝাঁসি পুলিশ গ্রামের মুখিয়াকে ডেকে পাঠিয়েছিল। আমরা জানতে পেরেছি মোহনলালের সঙ্গে ২৮,০০০ টাকা ছিল। সেই সঙ্গে সাবান ও কিছু বইও ছিল। কাজ না থাকায় বাড়ি ফিরে আসতে চেয়েছিলেন তিনি। পুলিশ আমাদের ওঁর দেহ নিয়ে যেতে বলেছেন।''
পুলিশ জানিয়েছে, ময়না তদন্তের পরে মোহনলালের দেহ ফিরিয়ে দেওয়া হবে তাঁর পরিবার পরিজনের কাছে। তবে তার আগে তাঁর কোভিড-১৯ পরীক্ষার ফল পাওয়া দরকার।
গত দু'মাসে ২০ লক্ষ শ্রমিক উত্তরপ্রদেশে ফিরেছেন। আরও কয়েক লক্ষ আগামী কিছু দিনের মধ্যেই ফিরবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
ঝাঁসির ট্রেনের মধ্যে পরিযায়ী শ্রমিকের রহস্যময় মৃত্যুর দু'দিন আগে বিহার স্টেশনে মৃতা মায়ের বসে শিশুর খেলার হৃদয়বিদারক ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছিল। পাশ দিয়ে বহু মানুষকে যেতে দেখা গিয়েছিল।
লকডাউনের পর থেকেই পরিযায়ী শ্রমিকদের দুরবস্থার ছবি বারবার সামনে এসেছে।
বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, শীর্ষ আদালতের পক্ষে দেশজুড়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের মানবিক সঙ্কটের দিকে নদর রাখা অসম্ভব। সুপ্রিম কোর্ট সরকারকে নির্দেশ দেয় পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি ফেরার বিষয়ে কোনও সংহত নীতি নির্ধারণের জন্য।