This Article is From Feb 17, 2020

বিচারপতি নিয়োগের সময়সীমা নিয়ে কেন্দ্র-সুপ্রিম কোর্ট তরজা

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, উচ্চতর বিভাগে বিচারপতিদের নিয়োগ নিয়ে পাঠানো সুপারিশে সিলমোহরে ১২৭ দিন সময় নেয় কেন্দ্র, শীর্ষ আদালতের কলেজিয়াম নেয় ১১৯ দিন

বিচারপতি নিয়োগের সময়সীমা নিয়ে কেন্দ্র-সুপ্রিম কোর্ট তরজা

বিচারপতিদের নামে ছাড়পত্রে দেরি হওয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলে সুপ্রিম কোর্ট

নয়াদিল্লি:

বিচারপতিদের নিয়োগ প্রক্রিয়া (Appointing Judges) সংক্রান্ত সুপারিশে ছাড়পত্রের জন্য যেখানে কেন্দ্রীয় সরকার ১২৭ দিন সময় নেয়, সেখানে শীর্ষ আদালতের কলেজিয়াম ১১১৯ দিন সময় নেয়, সোমবার সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) এমনটাই জানাল কেন্দ্র। বিচারপতি এসকে কৌল এবং বিচারপতি কেএম জোসেফের বেঞ্চে অ্যাটর্নি জেনারেল কেকে বেণুগোপাল বলেন, ৩৯৬টি বিচাপতি পদে শূন্যপদের মধ্যে ১৯৯টির জন্য এখনও পর্যন্ত নামের সুপারিশ করেনি দেশের হাইকোর্টগুলি। অ্যাটর্নি জেনারেলের যুক্তিতে, সু্প্রিম কোর্ট, আজ পর্যন্ত শূন্যপদের সংখ্যা কত, তা রেজিস্ট্রার জেনারেলদের জানাতে বলে, এবং ভবিষ্যতে যে শূন্যপদগুলি তৈরি হতে পারে তাও জানতে চায় আদালত।

শীর্ষ আদালতের বেঞ্চ বলে, রেজিস্ট্রার জেনারেলদের চার সপ্তাহের মধ্যে জানাতে হবে, বিচারপতিদের শূন্যপদের জন্য সুপারিশে তাঁদের কত সময় প্রয়োজন।

উচ্চতর বিচারবিভাগে বিচারপতিদের নিয়োগের জন্য বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের গড়ে কত সময় লাগে, শুরুতেই তার উল্লেখ করেন অ্যাটর্নি জেনারেল কেকে বেণুগোপাল। তিনি বলেন, “আইবির তথ্য পাওয়ার পর, সরকারের সময় লাগে ১২৭ দিন। কলেজিয়ামের সময় লাগে ১১৯ দিন”।

আইবির রিপোর্ট পাওয়ার পর, সরকারের যে সময় লাগে, তা তুলে ধরে বিচারপতিদের বেঞ্চ, সেই সময় কেকে বেণুগোপাল বলেন, “যদি আইবি রিপোর্ট উল্টো হয়, আমাদের তা যাচাই করতে হয়। আমরা চোখ বুজে তা এগিয়ে দিতে পারি না। সুপারিশের পর, সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়ামের যে সময় লাগে তা দেখুন”।

শুনানির সময়, বেঞ্চ জানায়, বিচারপতিদের নিয়োগ নিয়ে দুটি প্রস্তাব রয়েছে। শীর্ষ আদালতের বেঞ্চ বলে, “প্রথমটি হল, কীভাবে সমস্ত ধাপে এই সময় কমানো যায়, তা দেখা। অন্যটি হল, যদি অনেক বেশি সময় লাগে, তাহলে ৬ মাস আগে সুপারিশের পরিবর্তে, তা এক বছর পর্যন্ত বাড়ানো যেতে পারে”।

কেকে বেণুগোপাল বলেন, এদিন পর্যন্ত, শীর্ষ আদালতের কলেজিয়ামে ৮০টি প্রস্তাব বকেয়া রয়েছে।

আদালতের বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, “গত বছর, ২০১৭ এবং ২০১৮ সালের নিয়োগের থেকে কম ছিল। ২০১৯ সালে, ৬০টি নিয়োগ হয়েছে। যখন সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম একটি নামের সুপারিশ করে, তাহলে কীভাবে আপনারা তা বকেয়া রাখেন? কারণ, আপনারা আইনের গণ্ডিতে আবদ্ধ”।

আদালতের বেঞ্চ প্রশ্ন তোলে, “কলেজিয়াম ২৫টি নামের সুপারিশ করেছে। আপনারা কি এই নিয়োগ আটকে রাখতে পারেন”? আদালতের বেঞ্চ আরও বলে, “পক্রিয়া পরিষ্কার। একবার সুপ্রিম কোর্টেক কলেজিয়াম কোনও নামের প্রস্তাব করলে, তার ওপর আপনারা বাধ্য। রাজ্য সরকারের এতে কিছু বলার প্রশ্নই নেই”।

অ্যাটর্নি জেননারেল কেকে বেণুগোপালকে আদালত জিজ্ঞেস করে, “না আপনি, না আমরা, বিষয়টিকে আবারও তুলে ধরতে পারি। এটা নিয়ে নতুন আইন আনতে আপনাদের কোথায় বাধা”? কেকে বেণুগোপাল উত্তর দেন, “আপনি চাইলে আমরা আরও একটি সংশোধনী আনতে পারি”।

কেকে বেণুগোপাল জানান, ককেয়কটি হাইকোর্ট, যেমন বম্বে, ঝাড়খণ্ড এবং ছত্তিশগড় হাইকোর্ট শূন্যপদের রিপোর্ট দিতে ৫ বছর সময় নেয়। তিনি বলেন, “সমস্ত হাইকোর্টকে নোটিশ পাঠিয়ে জিজ্ঞেস করুন, কেন এই দেরি? তাহলেই একমাত্র সময়ে কাজ হবে। সরকারের কিছু না করার প্রশ্ন আসছে কেন”?

শীর্ষ আদালতের বেঞ্চ জানায়, হাইকোর্টে ৩৫ থেকে ৩৭ শতাংশ শূন্যপদ রয়েছে, এই বিষয়টিতে তারা উদ্বিগ্ন। বিচারপতিদের বেঞ্চ বলে, “যদি আমরা কিছু না করি, তাহলে আমাদের তাড়া দিতে হবে। সরকারের ক্ষেত্রেও একই”।

বর্ষীয়ান আইনজীবী বিকাশ সিং বেঞ্চে বলেন, কয়েকটি হাইকোর্ট রয়েছে, যেকানে শূন্যপদ প্রায় ৫০শতাংশ, এবং হাইকোর্টের অনুমোদিত ১,০৭৯ বিচারপতির মধ্যে ৩৯৬টি শূন্যপদ।

বিচারপতি এসকে কৌলের পর্যবেক্ষণ, “আমি এটা দিল্লি হাইকোর্টেও পেয়েছি। জুন মাসের মধ্যে, তাদের সংখ্যা কমে দাঁড়াবে ৩২। এটা একটা সমস্যা”।

অ্যাটর্নি জেনারেল কেকে বেণুগোপাল বেঞ্চে বলেন, কলেজিয়ামে, সুপারিশ প্রত্যাখানের হার ৩৫ শতাংশ। শীর্ষ আদালতের বেঞ্চ বলে, “একই সারিতে থাকতে পারে না হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম”।

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, বিচারবিভাগীয় নিয়োগ নিয়ে বিস্তারিত দেখা উচিত ভারতের আইন কমিশনের, বেঞ্চ জানায়, “বিচারপতি বিএস চৌহ্বাণের অবসরের পর, আমাদের আইন কমিশনের কোনও চেয়ারম্যান নেই”।

আদালতের আরও পর্যবেক্ষণ, বিচারপতি পদের জন্য একবার একটি নাম প্রস্তাবিত হলে, তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলার ঘটনাও হয়েছে। আদালত আরও বলে, “কীভাবে প্রক্রিয়া আরও ভাল করা যায়, সেই চেষ্টা থাকা প্রয়োজন”, পাশাপাশি মামলাটির শুনানির জন্য ২১ মার্চ দিন ধার্য করে।

.