This Article is From Apr 12, 2020

অ্যাম্বুলেন্স অমিল, ৩ বছরের নিথর ছেলের দেহ নিয়ে মাইলের পর মাইল হাঁটলেন মা!

এক মিনিট দীর্ঘ হৃদয় বিদারক ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। দেখা যাচ্ছে, একজন মহিলা বিভ্রান্ত হয়ে কেঁদে চলেছেন। তার কোলে মৃত সন্তান।

অ্যাম্বুলেন্স অমিল, ৩ বছরের নিথর ছেলের দেহ নিয়ে মাইলের পর মাইল হাঁটলেন মা!

হৃদয়বিদারক! মায়ের কোলে সন্তান মৃত

হাইলাইটস

  • ৩ বছরের নিথর ছেলের দেহ নিয়ে মাইলের পর মাইল হাঁটলেন মা
  • রাজ্য সরকার পরিচালিত একটি হাসপাতালে মৃত্যু হয় এক শিশুর
  • হাসপাতাল ব্যবস্থা করে দিতে পারেনি অ্যাম্বুলেন্সের

পটনা (Patna) থেকে ৪৮ কিলোমিটার দূরে জেহানাবাদ। রাজ্য সরকার পরিচালিত একটি হাসপাতালে মৃত্যু হয় এক শিশুর। হাসপাতাল ব্যবস্থা করে দিতে পারেনি অ্যাম্বুলেন্সের। তাই বিহারের এই দম্পতি বাধ্য হলেন নিথর সন্তানের দেহ নিয়ে এক হাসপাতাল থেকে আর এক হাসপাতলে হাঁটতে। শিশুটির মা-বাবা দুজনেই অভিযোগ জানিয়েছেন, সময়মতো চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া সম্ভব হয়নি। গোটা দেশজুড়ে লকডাউন (Coronavirus Lockdown) চলায় অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থাও করা যায়নি। তার মধ্যে এক হাসপাতাল থেকে আর এক হাসপাতালে দৌড়তে হয়েছে তাদের। এক মিনিট দীর্ঘ হৃদয় বিদারক ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। দেখা যাচ্ছে, একজন মহিলা বিভ্রান্ত হয়ে কেঁদে চলেছেন। তার কোলে মৃত সন্তান। ঠিক তার পাশেই দাঁড়িয়ে রয়েছেন তার স্বামী। একজন সাহায্য করতে চান বলে শোনা যায় ভিডিওতে। আর তখনই শিশুটির বাবা উত্তর দেন, "এখন আর তাদের অ্যাম্বুলেন্সের দরকার নেই।"

শিশুটির বাবা গিরজ কুমার জানান, "বাচ্চাটি দুদিন আগে অসুস্থ হয়েছিল। জ্বর, সর্দি, কাশি হয়েছিল। শাহপুরে গ্রামের ডাক্তার তার চিকিৎসা করছিল, হঠাৎই বাচ্চার অবস্থা খারাপ হয়। তখন আমরা একটা টেম্পো ভাড়া করে জেহানাবাদের হাসপাতালে নিয়ে আসি ওকে। আমরা কোনও অ্যাম্বুলেন্স পাইনি লকডাউনের জন্য।" 

"জেহানাবাদে নিয়ে গেলে, সদর হাসপাতালের ডাক্তাররা বাচ্চাকে পটনা মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতালে রেফার করে। কিন্তু আমরা অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করতে পারিনি। আর এই অবহেলার কারণেই আমরা আমাদের সন্তানকে হারালাম," জানিয়েছেন মৃত শিশুর বাবা।

"যেখানে বিষয়টা জীবন এবং মৃত্যুর, শুধুমাত্র লকডাউনের কারণেই যে বিশেষ ব্যবস্থার মাধ্যমে শিশুকে নিয়ে যাওয়া উচিত ছিল, তা পেলাম না।" জানিয়েছেন তিনি। যদিও সন্তান মারা যাওয়ার পর ওই ব্যক্তি এবং তার স্ত্রী, স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় বাড়ি ফেরেন। এই ভিডিওটি দেখার পর, ওই রাজ্যে সঠিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা কোথায়- এই নিয়ে একের পর এক প্রশ্ন ছুঁড়ে দেওয়া হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। একজন ব্যক্তি লিখেছেন, "হৃদয় ভেঙে দেওয়া এই দৃশ্য বিহারের। যেখানে লকডাউনের মধ্যে একজন মা, তার মৃত সন্তানের দেহ নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সের অভাবে মাইলের পর মাইল হাঁটছেন।"

আরও একজন লিখেছেন, "হৃদয়বিদারক!  মায়ের কোলে সন্তান, মৃত। তাকে নিয়েই যেতে হচ্ছে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় হাসপাতালের খোঁজে! এই তো বিহারের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা!"

আরেকটি পোস্টে একজন লিখেছেন, "এই ভিডিওটা আমাকে বিচলিত করছে। আমি ভয় পাচ্ছি। একজন মা প্রখর রোদের মধ্যে মৃত সন্তানকে নিয়ে যেভাবে কাঁদছেন, তা খুবই বেদনার। এই লকডাউনের সময় অ্যাম্বুলেন্সেরর অভাবে এক শিশুর মৃত্যু হল। শিশুটিকে প্রথমে  জেহানাবাদ তারপর জেহানাবাদ থেকে পটনাতে রেফার করা হয়।"

জেলা প্রশাসন ইতিমধ্যেই রাজ্য নিয়ন্ত্রিত সদর হাসপাতালে ম্যানেজারকে সাসপেন্ড করেছে। কিছু চিকিৎসককে শোকজ নোটিস ধরানো হয়েছে। জেহানাবাদের ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট নবীন কুমার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, "যে কোনও রোগীকে অ্যাম্বুলেন্স জোগাড় করে দিতেই হবে। আমরা খোঁজ নিচ্ছি কীভাবে এই ধরনের ঘটনা ঘটল।"

.