This Article is From Aug 15, 2018

অমিত শাহর কাছে কি তাঁর বাবার জন্মের শংসাপত্র আছে? প্রশ্ন মমতার

অসমের এনআরসি প্রসঙ্গে মঙ্গলবার ফের একবার  তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী।

অমিত শাহর কাছে কি তাঁর বাবার জন্মের শংসাপত্র আছে? প্রশ্ন মমতার

লোকসভা এবং বিধানসভা নির্বাচন একসঙ্গে করার কেন্দ্রীয় প্রস্তাবেরও বিরোধিতা করেন মমতা।

কলকাতা:

বিজেপি সভাপতি অমিত শাহর বাবার জন্মের শংসাপত্র কি তাঁর কাছে আছে? বিজেপি এবং আরএসেসের নেতারা কি পারবেন এরকম তথ্য হাজির করতে! গো রক্ষকরা কি জানে গরুর বয়স কত? প্রশ্নকর্তা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এভাবেই অসমের এনআরসি প্রসঙ্গে মঙ্গলবার ফের একবার  তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায় স্বাধীনতার 72  বছর বাদে দেশের নাগরিকদের থেকে জন্মের শংসাপত্র চাওয়া হচ্ছে। চারপাশে কী চলছে  তা বোঝাই দায়! শুধু অমিত শাহ নন গান্ধি জি, স্বামী বিবেকানন্দ বা কাজি নজরুল ইসলামের অভিভাবক সম্পর্কেও যদি একই প্রশ্ন তোলা হয় তাহলে পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে? সে কথাও জানতে চান মুখ্যমন্ত্রী।                

এদিন বিকেলে নবান্নে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মমতা বলেন, দেশের নাগরিকদের জোর করে উদ্বাস্তু বানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু ও লিয়াকত আলি খান এবং ইন্দিরা গান্ধি ও মুজিবর রহমানের মধ্যে যে চুক্তি হয়েছে তার বলেই  মানুষ পূর্ববঙ্গ থেকে এ দেশে এসেছেন। আর তাঁদেরকেই অনুপ্রবেশকারী বলে চিহ্নিত করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি যাঁদের নাম বাদ গিয়েছে তাঁদের প্রতিবাদ পর্যন্ত করতে দেওয়া হচ্ছে না।  ডিটেনশন ক্যাম্পে যেতে বাধ্য করা হচ্ছে।

বিজেপির দাবি তালিকার খসড়া প্রকাশের পর অসমে কোনও অশান্তি নেই। এখানেই মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন তাই যদি হবে তাহলে  400 কোম্পানি নিরাপত্তা বাহিনী কেন মোতায়েন করে রাখা হয়েছে। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের উপরেও নেমে এসেছে আক্রমণ।  তিনি তথ্য  পেশ করেও জানান যে 40 লক্ষ মানুষের নাম বাদ পড়েছে তার মধ্যে হিন্দু আছেন 25 লক্ষ আর মুসলমানের সংখ্যা 12 লক্ষ। শুধু অসম নয়, এরাজ্যেও হিন্দি, মারাঠীর মতো  বহু ভাষার মানুষ বসাবাস করেন।  তাঁরা সংখ্যায় অনেক। তাঁদের যদি এখান থেকে চলে যেতে বলা হয় তাহলে কী হবে? আর এভাবে গোটা দেশেই এ ব্যাপারটা ছড়িয়ে পড়বে।  

এদিন ফের একবার  বিজেপিকে বাঙালি বিরোধী  বলেন মমতা।  মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন বাঙালিরা কি স্বাধীনতার লড়াইয়ে সামিল হয়নি! তবু কেন তাদের অপছন্দ করা হবে? এরপর আরও একবার সরাসরি অমিত শাহকে  আক্রমণ করে মমতা বলেন, ‘উনি কি কখনও ইলিশ মাছ খেয়ে দেখেননি? ইলিশ বা সন্দেশ বাংলাদেশ থেকে এসেছে। তাহলে কি এগুলোও অনুপ্রবেশকারী?’ এরপর কটাক্ষের সুরে মমতা বলেন বাংলায় কথা বলা এখন পাপ!    

এই ব্যাপারে তৃণমূল প্রতিবাদ করতে শুরু করার পর থেকেই বিজেপি একটি ঘটনার কথা বলে আসছে। এক যুগেরও বেশি আগে লোকসভায় অনুপ্রবেশ প্রসঙ্গে সরব হন মমতা। ডেপুটি স্পিকারের দিকে এ সংক্রান্ত কাগজপত্রও ছুঁড়ে দেন তিনি। সঙ্গে দেন নিজের পদত্যাগ পত্রও। কিন্ত সেটি গৃহীত হয়নি। এ কথা বলে বিজেপির দাবি বিরোধী থেকে শাসক হয়ে অবস্থান বদলেছেন মমতা। তখন বিরোধিতা করেছেন আর এখন ভোট ব্যাঙ্কের স্বার্থে অনুপ্রবেশ বন্ধের বিষয় পদক্ষেপ করছেন না। কিন্তু এদিন মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন তাঁর প্রতিবাদ ছিল নদিয়ার একটি বিশেষ ঘটনা প্রসঙ্গে। বিজেপি এখন তথ্য বিকৃত করে  বিভ্রান্ত করছে।     

অন্যদিকে লোকসভা এবং বিধানসভা নির্বাচন একসঙ্গে করার কেন্দ্রীয় প্রস্তাবেরও বিরোধিতা করেন মমতা। তিনি বলেন, বিজেপির চিন্তা ভাবনা বুঝতে পারা অসম্ভব। ওরা সমস্ত সীমা অতিক্রম করে গিয়েছে। কখনও নোটবন্দির কথা বলছে। কখনও আবার জিএসটির ঘোষণা করছে। এখন বলছে একসঙ্গে ভোট  হবে। কিন্তু কোনও একটা সরকার পড়ে গেলে তখন কীভাবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হবে তা কারও জানা নেই! পাশাপাশি ডলারের তুলনায় টাকার দাম কমা  নিয়েও কেন্দ্রীয়  সরকারকে  আক্রমণ করেছনে মুখ্যমন্ত্রী।  

 

 

 

 

.