This Article is From Jun 25, 2019

যন্ত্রণা কমাতে হাত কেটে ফেলতে চান Bangladesh 'Tree Man' আব্দুল

ছবিটি দেখলে শিউরে উঠবেন আপনি। একই সঙ্গে মায়াও হবে। একজন মানুষের দুই হাতের চেটো জুড়ে অজস্র আঙুল।

যন্ত্রণা কমাতে হাত কেটে ফেলতে চান Bangladesh 'Tree Man' আব্দুল

যন্ত্রণা থেকে রেহাই পেতে হাত-পা মিলিয়ে মোট ২৫ বর অপারেশন করিয়েছেন আবদুল বাজানদার

ঢাকা:

ছবিটি দেখলে শিউরে উঠবেন আপনি। একই সঙ্গে মায়াও হবে। একজন মানুষের দুই হাতের চেটো জুড়ে অজস্র আঙুল। গাছের শিকড়ের মতোই যা সমানে গজিয়ে চলেছে। আর সেই যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে হাত দুটিই কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিরল রোগের শিকার সেই মানুষটি। তিনি বাংলাদেশের (Bangladeshi) আব্দুল বাজনদার (Abul Bajandar)। শুধু হাতে হলেও না হয় কথা ছিল। একই গ্রোথ তাঁর পায়েও। এই কারণেই তিনি নিজের দেশে বিখ্যাত ট্রি-ম্যান ("Tree Man") বা বৃক্ষ মানুষ বলে। সোমবার আব্দুল জানান, ২০১৬ থেকে লাগাতার ২৫ বার অপারেশন করেও কোনও সুফল পাননি। বরং গ্রোথ আরও বেড়েছে। বেড়েছে ব্যথাও। তাই এবার তিনি নিজের হাত দুটিই কেটে ফেলতে চান। আব্দুলের কথা, যে অঙ্গ তাঁকে এত কষ্ট দিচ্ছে তাকে হারাতে একটুও খারাপ লাগবে না তাঁর।   

ডাক্তারদের মতে, তাঁরা রোগটিকে নিরাময় সম্ভব না বলছেন, অপারেশনের পরে এই রোগ আরও বেড়ে যায়। গতবছরের মে মাসে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাওয়ার পরে। এক ছেলের বাবা, মাত্র ২৮ বছরের বাজনদারকে এরপর ফের ভর্তি করা হয় চলতি বছরের জানুয়ারিতে। তখন তাঁর অবস্থা আরও ভয়াবহ। শিকড়ের মতো গজিয়ে ওঠা আঙুলগুলি ইঞ্চিতে অনেকটাই বেড়ে গেছে। যন্ত্রণাও মারাত্মক।

আপাতত ডাক্তারদের কাছে তাই একটাই কাতর অনুরোধ বাজনদারের, এমনিতে না কমলে বাদ দিয়ে দিন আমার হাত। এই ব্যথা আর সহ্য করতে পারছি না। একই মত তাঁর মা আমিনা বিবিরও, হাত বাদ যাক। তবু তো ছেলের কষ্ট কমবে!

এতটা পড়ার পর নিশ্চয়ই আপনার মনে প্রশ্ন জাগছে, কোন রোগে এমন মারাত্মক দুরবস্থা বাজনদারের? চিকিতসাবিজ্ঞান বলছে, একে বলে পিডারমোডাইসপ্লাসিয়া ভেরিউসিফরমিস। এই রোগ অনেকটাই বংশগত। একে চলতি ভাষায় ট্রি-ম্যান সিনড্রোম বলে। প্রাণে বাঁচতে যা চিকিতসা করাতে হয় তাতেই রাজি বাজনদার। কিন্তু, সমস্যা অর্থাভাব। তাঁর কাছে চিকিতসা করানোর মতো আর টাকাকড়ি নেই।   

ইতিমধ্যে ঢাকার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের প্রধান সামন্ত লাল সেন মঙ্গলবার জানান, বাজনদারের সমস্যা নিয়েই সাত ডাক্তারের একটি বোর্ড গঠন করা হয়েছে। আমরা দেখছি, কত তাড়াতাড়ি ওঁকে যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিতে পারি। বাজনদার ওঁর বক্তব্য জানিয়েছেন। এবার আমরা দেখব, ওঁর জন্য কতটা কী করতে পারি।

বাজনাদারের  এই খবর দেশে-বিদেশ ছড়িয়ে পড়তেই নড়েচড়ে বসেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বিনামূল্যে আব্দুলের চিকিতসার ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছেন। প্রসঙ্গত, একদম শুরুতে বিরল এই রোগের চিকিতসার জন্যবাজনদার একটানা দু-বছর বেসরকারি হাসপাতলে থেকেছেন। তাঁর এই সমস্যায় ভোগেন বিশ্বের প্রায় আধ ডজন মানুষ। ২০২৭-তেই এই সমস্যায় আক্রান্ত এক মেয়ের চিকিতসা হয় বাংলাদেশে।  

মেয়েটি সেই চিকিতসায় সুস্থ হয়ে গেলেও রোগ কমেনি বাজনদারের। তাই চিকিতসা বন্ধ করে বাধ্য হয়ে তিনি ফিরে আসেন গ্রামের বাড়িতে।

.