This Article is From Jul 28, 2018

চুম্বনরত প্রেমিক- যুগলের ছবি তুলে চাকরি থেকে বরখাস্ত বাংলাদেশের চিত্র সাংবাদিক

ওই যুগল স্বতঃস্ফূর্তভাবে চুম্বন করছিলেন  আমি তাতে কোনও ভুল দেখিনা বা কোনও অশ্লীলতাও পাইনি- আহমেদ বলেন

চুম্বনরত প্রেমিক- যুগলের ছবি তুলে চাকরি থেকে বরখাস্ত বাংলাদেশের চিত্র সাংবাদিক

স্বতঃস্ফূর্ত ভালোবাসার এই ছবি কিন্তু অনেকেরই প্রসংশা কুড়িয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়

বাংলাদেশ:

বর্ষায় বৃষ্টিস্নাত চুম্বনরত দুই প্রেমিক-প্রেমিক।

ভালোবাসার ছবির কথা বললে এমনই তো কোনও ছবির কথা মাথায় আসে আমাদের। অথচ এমনই এক ছবি তুলে চাকরি হারালেন বাংলাদেশের এক চিত্রসাংবাদিক। বৃষ্টিতে ভিজে চুম্বনরত প্রেমিকযুগলের এমন ছবি সোমবার ফেসবুকে পোস্ট করেন চিত্রসাংবাদিক জীবন আহমেদ। তারপরেই তা ভাইরাল হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়।

স্বতঃস্ফূর্ত প্রেমের মুহূর্তের এই ছবিটি তোলা হয়েছে বাংলাদেশের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিগত বেশ কিছুকাল ধরে বিভিন্ন হিংসা আর প্রতিবাদের ঘটনায় এই বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদ শিরোনামে এসেছে বারেবারে। দুই ছাত্রছাত্রীকে হাত ধরে হাঁটার অপরাধে  কটুক্তি করায় এই মাসেই অন্য তিন রক্ষণশীল পড়ুয়াকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়। সেই ক্যাম্পাসেই বৃষ্টির দিনে এমন সুন্দর দৃশ্য নিয়ে কিন্তু তোলপাড় হয়েছে বাংলাদেশের বৃহৎ রক্ষণশীল জগত। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এই বাংলাদেশের মানুষের একটি বড় অংশের দাবি ছবিটি অশ্লীল।

বাংলাদেশ সংবাদ 18 ওয়েবসাইটের মতে, এক রক্ষণশীল ব্লগার লিখেছেন: "প্রেমিক প্রেমিকারা দিনদিন বড় উদ্ধত হয়ে যাচ্ছে। আমরা জানতাম এই সব গোপনে করার বিষয়। এমন দিনও দূরে নেই যেদিন দেখব প্রকাশ্যেই যৌনতাও করছেন এঁরা। "

আহমেদ অবশ্য বলেন, কোনও রকম নীতি পুলিশি তিনি সহ্য করবেন না। “এমন পঙ্কিল আর ভ্রান্ত নীতি মানুষের মনে গেঁথে বসে আছে বলে শিল্প তো থেমে থাকতে পারে না!"-আহমেদ বলেন।

তিনি দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের একটি সাক্ষাৎকারে জানান, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-ছাত্র কেন্দ্রের কাছে নিজের কাজের বিভিন্ন ফটোগ্রাফের জন্য ঘোরাঘুরি করছিলেন তিনি। তখনই তিনি দেখেন বৃষ্টিতে ভিজে এক যুগল ঠোঁটে চুম্বন করছেন। এমন এক মুহূর্ত দেখেই তাঁর মন আনন্দে ভরে গিয়েছিল। ছবিটি তুলেই তিনি পাঠিয়ে দেন তাঁর নিউজ-রুমে। কিন্তু তাঁর সম্পাদকেরা সিদ্ধান্ত নেন ছবিটি  ছাপানো হবে না, কারণ তাতে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া প্রকাশ পাবে।

"আমি বলেছিলাম, না, আপনি এই ছবিটি নেতিবাচকভাবে দেখবেন না, কারণ এটা বিশুদ্ধ প্রেমের প্রতীক হিসেবেই ধরা দিয়েছে।“- বলেন বছর 30-এর আহমেদ। কাগজে ছবিটা না বেরোলেও আহমেদ তাঁর ইন্সটাগ্রাম এবং ফেসবুকে ছবিটি পোস্ট করেছেন। এক ঘণ্টার মধ্যে ছবিটি 5,000 বার শেয়ার হয়।

আহমেদ আরও জানান, বুধবার তাঁকে তাঁর বস ডেকে কোনও কারণ ছাড়াই ল্যাপটপ ও অফিস আইডি কার্ড জমা দিয়ে দিতে বলেন।

নিউজ পোর্টাল পূর্বপশ্চিমবিডি-র সম্পাদক খুজিস্তা নূর-এ-নাহারিন জানান, আহমেদের অফিসের কাজের পার্ফরমেন্সের উপর ভিত্তি করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সম্পাদক আরও বলেন, “ তাঁর এই চাকরি যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করার জন্য একটি বৈঠক ডাকা হয়, আহমেদ সেই বৈঠকে আসেননি। এবং 24 জুলাই থেকে অফিসেও অনুপস্থিত”। তাই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সম্পাদক লিখেছেন, "সম্পাদকীয় পর্যায়ে সবাই এই ছবিটি গ্রহণের জন্য আহমেদকে অভিনন্দন জানিয়েছিল।" যদিও গোটা বিষয়টি নিয়ে খুবই হতাশ আহমেদ।

"ওই যুগল স্বতঃস্ফূর্তভাবে চুম্বন করছিলেন  আমি তাতে কোনও ভুল দেখিনা বা কোনও অশ্লীলতাও পাইনি," আহমেদ বলেন। আহমেদের কথায়, “আমাদের দেশে কিছু লোক কেবল তথাকথিত পড়াশোনা করে, কিন্তু তারা প্রকৃত অর্থে শিক্ষিত হয় না। তারা আমার ফটোগ্রাফের অন্তর্নিহিত অর্থ বুঝতে ব্যর্থ হয়েছে। আমি নিজের সম্পর্কেও একটু চিন্তিত।"

বাংলাদেশের সাংবাদিকরা বিভিন্ন সময়েই হুমকির মুখে পরেছেন। সাংবাদিক সুরক্ষা কমিটির এশিয়া প্রোগ্রাম সমন্বয়ক স্টিভেন বাটলার এই বছর একটি ব্লগ পোস্টে লিখেছেন। সেই অনুযায়ী, ব্লগারদের সমৃদ্ধ কমিউনিটি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগের শাসনে বিভিন্ন অন্তোষ আর অসহিষ্ণুতা ক্রমবর্ধমান।

“চুম্বন স্বাধীনতার বিদায়?"- শিরোনাম শীর্ষক খবরে বিশিষ্ট সাংবাদিক তানিম আহমেদ লিখেছেন, অস্থির সময়ে এমন একটি প্রেমের ছবি আসলে ভালোবাসার বার্তা দিতে পারত।



(এনডিটিভি এই খবর সম্পাদিত করেনি, এটি সিন্ডিকেট ফিড থেকে সরাসরি প্রকাশ করা হয়েছে.)Click for more trending news


.