Ayodhya Verdict: অযোধ্যা মামলায় শনিবার রায় দিল দেশের শীর্ষ আদালত
হাইলাইটস
- পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চের নেতৃত্বে ছিলেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ
- দেশের পরবর্তী প্রধান বিচারপতি এসএ বোবদেও এই বেঞ্চে ছিলেন
- পাঁচ বিচারপতির নিরাপত্তাই বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার
নয়াদিল্লি: ভারতের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ শনিবার অযোধ্যা মন্দির-বাবরি মসজিদ সংক্রান্ত মামলায় (Ayodhya Case) সর্বসম্মতক্রমে রায়দান করেছে । শীর্ষ আদালত রায় (Ayodhya Verdict) দিয়েছে যে ২.৭৭ একর বিতর্কিত জমিটি মন্দির নির্মাণের জন্য সরকার পরিচালিত ট্রাস্টকে দেওয়া হবে, এবং এই শহরেই একটি "উপযুক্ত" জায়গায় পাঁচ একর জমি মসজিদ তৈরির জন্যে দেওয়া হবে মুসলিমদের। তবে স্পর্শকাতর এই মামলার সঙ্গে যুক্ত পাঁচ বিচারপতির নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।
বিতর্কিত জমি দিতে হবে মন্দিরের জন্য, মসজিদের জন্য দেওয়া হবে ৫ একর জমি
এবার দেখে নিন সেই ৫ বিচারপতিকে যাঁরা অযোধ্যা মামলায় রায়দান করেছেন।
ভারতের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ
মূলত অসমের বাসিন্দা রঞ্জন গগৈ ২০১৮ সালের অক্টোবরে দেশের উত্তর-পূর্ব ভাগ থেকে হওয়া দেশের প্রথম প্রধান বিচারপতি ছিলেন। ১৯৭৮ সালে প্রথম তিনি বার কাউন্সিলের অন্তর্ভুক্ত হন। এরপর বহুদিন তিনি গৌহাটি হাইকোর্টে অনুশীলন করেন এবং পরে ২০০১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি সেখানে স্থায়ী বিচারক হন । পরে তাঁকে পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টে স্থানান্তরিত করা হয়, এবং সেখানে তিনি প্রধান বিচারপতির দায়িত্বও পালন করেন।এরপর এপ্রিল ২০১২-তে, সুপ্রিম কোর্টে পাঠানো হয় গগৈকে। রঞ্জন গগৈ এমন একজন বিচারক যিনি তার কেরিয়ারে নানা ধরণের মামলার শুনানি করেছেন, যার মধ্যে একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মামলা হয় জাতীয় নাগরিকপঞ্জিকরণ সংক্রান্ত মামলা। তিনি আগেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে ১৭ নভেম্বর তাঁর অবসর গ্রহণের আগেই অযোধ্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হবে। মামলার রায় ঘোষণার আগে শুক্রবার উত্তরপ্রদেশের শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে সেখানকার সুরক্ষার ব্যবস্থা নিয়েও আলোচনা করেন দেশের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ।
ভারতের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ প্রথম এমন ব্যক্তি যাঁকে দেশের উত্তর-পূর্ব অঞ্চল থেকে বেছে দেশের শীর্ষ বিচার বিভাগীয় পদে নিযুক্ত করা হয়।
Ayodhya Verdict: ১৫২৮ থেকে আজ পর্যন্ত জেনে নিন অযোধ্যার ইতিহাস
বিচারপতি এসএ বোবদে
১৭ নভেম্বর ভারতের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের অবসর গ্রহণের পর তাঁর স্থলাভিষিক্ত হবেন বিচারপতি শারদ অরবিন্দ বোবদে। তিনি ২০০০ সাল থেকে বম্বে হাইকোর্টে অতিরিক্ত বিচারপতি হিসাবে কাজ করছিলেন। বছর দুয়েক আগে মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি নিযুক্ত করা হয় তাঁকে। ২০১৩ সালের এপ্রিলে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি করা হয় তাঁকে। মূলত মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা এসএ বোবদের বিচারপতি হিসাবে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে ১৮ মাসের জন্য দেশের শীর্ষ বিচারপতি হিসাবে নিযুক্ত করা হবে আগামী ১৭ নভেম্বর গগৈয়ের অবসর গ্রহণের পর। এনডিটিভিকে এক সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে ৬৩ বছর বয়সী বোবদে অযোধ্যা মামলাটিকে "বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ" মামলা বলে চিহ্নিত করেছিলেন।
১৭ নভেম্বর রঞ্জন গগৈ প্রধান বিচারপতি পদ থেকে অবসর গ্রহণের পর সেই পদে বসবেন বিচারপতি বোবদে
বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়
সবচেয়ে বেশী সময় দেশের প্রধান বিচারপতি হিসাবে থাকা ওয়াইভি চন্দ্রচূড়ের ছেলে, বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়কে ২০১৬ সালের মে মাসে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিসাবে নিয়োগ করেছিলেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। এর আগে তিনি বম্বে হাইকোর্ট এবং এলাহাবাদ হাইকোর্টে বিচারপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে স্নাতক, বিচারপতি চন্দ্রচূড় এমন একাধিক রায়কে পাল্টে দিয়েছিলেন যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অচল হয়ে পড়েছিল। ব্যভিচার সংক্রান্ত আইন এবং গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার সম্পর্কিত এমন অনেক রায়ই দেন তিনি। ডিওয়াই চন্দ্রচূড় একসময় মুম্বই বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক সাংবিধানিক আইন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওকলাহোমা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্কুল অফ ল এর অতিথি অধ্যাপকও ছিলেন।
২০১৬ সালে ডিওয়াই চন্দ্রচূড়কে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নিযুক্ত করা হয়
বিচারপতি অশোক ভূষণ
বিচারপতি অশোক ভূষণ, ১৯৭৯ সালে তাঁর কেরিয়ার শুরু করেছিলেন, প্রথমে তিনি এলাহাবাদ হাইকোর্টের আইনজীবী হিসাবে কাজ শুরু করেন, পরে এপ্রিল ২০০১-এ তিনি বিচারক পদে উন্নীত হন।। ২০১৪ সালের জুলাই মাসে তাঁকে কেরল হাইকোর্টে পাঠানো হয় এবং তার কয়েকমাস পরেই তিনি ওই আদালতের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ২০১৫ সালের মার্চ মাসে তিনি আদালতের প্রধান বিচারপতি হিসাবে নিযুক্ত হন। বিচারপতি ভূষণকে ২০১৬ সালের ১৩ মে, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিসাবে নিযুক্ত করা হয়।
বিচারপতি অশোক ভূষণ এলাহাবাদ হাইকোর্টের একজন আইনজীবী হিসাবে কাজ শুরু করেছিলেন।
বিচারপতি আবদুল নাজির
বিচারপতি আবদুল নাজির ১৯৮৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে আইনজীবী হিসাবে কাজ শুরু করেন এবং কর্নাটক হাইকোর্টে ২০ বছর ধরে প্র্যাকটিস করেছিলেন। ২০০৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি ওই আদালতের অতিরিক্ত বিচারক হিসাবে নিযুক্ত হন এবং পরের বছর সেখানকার স্থায়ী বিচারক হন। ২০১৭ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি তাঁকে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিসাবে নিযুক্ত করা হয়েছিল।
২০ বছর ধরে কর্ণাটক হাইকোর্টের আইনজীবী ছিলেন আবদুল নাজির।