আবহাওয়া দফতর ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে উত্তরপ্রদেশের পূর্বাঞ্চলে।
পাটনা/লখনউ:
গত চারদিন বৃষ্টির (rainfall) প্রকোপে তিয়াত্তর জনের মৃত্যু হল উত্তরপ্রদেশে (Uttar Pradesh)। ওই রাজ্যের বেশ কিছু অঞ্চলে স্বাভাবিকের থেকে অনেক বেশি বৃষ্টি হয়েছে এই সপ্তাহে। এরই মধ্যে আবহাওয়া দফতর ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে উত্তরপ্রদেশের পূর্বাঞ্চলে। এদিকে বিহারের (Bihar) পাটনায় প্রবল বর্ষণে জনজীবন ব্যাহত হয়েছে। বহু জায়গায় জল জমে ট্র্যাফিক জ্যামে অবরুদ্ধ যান চলাচল। রবিবার সকালে পাটনাসহ বিহারের অন্যান্য অঞ্চলে বহু ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। শনিবার ভিডিও কনফারেন্সে মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার সরকারি দায়িত্বপ্রাপ্তদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেন তিনি। জম্মু ও কাশ্মীর, উত্তরাখণ্ড, রাজস্থান ও মধ্যপ্রদেশেরও প্রবল বর্ষণ হয়েছে। গত কয়েকদিনে ওই সব রাজ্যেও বৃষ্টির প্রকোপে কয়েকজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে।
জেনে নিন এই বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ১০টি তথ্য
শুক্রবার স্বাভাবিকের থেকে ১৭০০ শতাংশ বেশি রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে উত্তরপ্রদেশ। রাজ্যের পূর্বাঞ্চল সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শনিবার প্রয়াগরাজে ১০২.১ মিলিমিটার ও বারাণসীতে ৮৪.২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এই বছরের গড় বৃষ্টিপাতের তুলনায় যা অনেক বেশি।
শনিবার উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ছাব্বিশ জনের মৃত্যু হয়েছে। তার আগে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার সাতচল্লিশ জনের মৃত্যু হয়। লখনউ, আমেঠী, হরদৈ ও আরও অন্যান্য জেলায় প্রবল বর্ষণের কারণে স্কুল বন্ধ রয়েছে।
উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ জেলা ম্যাজেস্ট্রেট ও ডিভিশনাল কমিশনারদের নির্দেশ দিয়েছেন সমস্ত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের জন্য। মৃতদের পরিবারকে অর্থ সাহায্য বাড়িয় ৪ লক্ষ টাকা করারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
আগামী দু'দিন রাজ্যে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।
শুক্রবার থেকে বিহারে প্রবল বর্ষণের ফলে স্বাভাবিক জনজীবন বিপর্যস্ত হয়েছে। রেল চলাচলে বিঘ্ন ঘটার পাশাপাশি স্কুলও বন্ধ রয়েছে। এদিন সকালে ১৩টি ট্রেন বাতিল হয়েছে। অন্যান্য ট্রেন চলাচলও বিলম্বিত হচ্ছে।
৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রবল বর্ষণের পূর্বাভাস রয়েছে পাটনায়। জেলা প্রশাসন সমস্ত স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশ জারি করেছে মঙ্গলবার পর্যন্ত।
পাটনার দ্বিতীয় বৃহত্তম স্বাস্থ্য পরিষেবা কেন্দ্র নালন্দা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রবল জল জমেছে বৃষ্টিতে। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কুমার রবি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, রাজেন্দ্র নগর ও এসকে পুরী সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বিহারের যে জেলাগুলি প্রায় বন্যার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, সেখানে উদ্ধারকারী দল নির্মাণ করা হয়েছে। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী জানিয়েছে তাদের ১৮টি দল সেখানে কাজ করছে
গত দু'দিনে রাজস্থান ও মধ্যপ্রদেশেও বৃষ্টিতে ছ'জনের মৃত্যু হয়েছে। একজনের মৃত্যু হয়েছে জম্মু ও কাশ্মীরে। রাজস্থানের উদয়পুরের থোবওয়ারাতে সরকারি স্কুলের দেওয়াল ভেঙে পড়ে তিনজন ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার মধ্যপ্রদেশে একটি সরোবরের জলে ভেসে গিয়ে এক পুলিশ কনস্টেবলসহ তিনজনের মৃত্যু হল বৃষ্টির ধাক্কায়। ঘটনাস্থল থেকে এক কিলোমিটার দূরে তাঁদের দেহ আবিষ্কৃত হয়। গত দু'সপ্তাহ ধরে মধ্যপ্রদেশে প্রবল বর্ষণ হয়ে চলেছে।
Post a comment